আমি মারজিয়া আক্তার,স্বাগতম "Fairy Of Novel" Youtube Channel এ — যেখানে প্রতিটি গল্প বোনা হয় অনুভবের সূতা দিয়ে, আর প্রতিটি শব্দে লুকানো থাকে হাসি, আবেগ আর মায়ার গল্প! আমার নিজের গল্প আপলোড দিয়ে থাকি ||
ছোট গল্প- তুমি আমার নীলচে বিকেল লেখিকা: মারজিয়া আক্তার (My Birthday Special)
সাবিহা ইসলাম আলভি, সবার কাছে “সাবিহা”, একেবারেই সাধারণ একটি মেয়ে। চশমা পরা, হাসলে গালে ছোট্ট টোল পড়ে যায়, আর কথায় অদ্ভুত এক মিষ্টি সুর। সে সবসময় লাইব্রেরিতে বসে বই পড়ে। প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে সে খুব একটা ভাবে না, বরং বই আর কফিই তার সব।
অন্যদিকে আরিয়ান হোসাইন রেহান, কলেজের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছেলে। লম্বা, স্মার্ট, ক্রিকেট খেলে দারুণ। কিন্তু জনপ্রিয়তার ভিড়েও তার চোখে সবসময় এক ধরনের শান্ত খোঁজ থাকে—যেন কাউকে খুঁজছে।
তাদের প্রথম দেখা হয়েছিল একেবারে অদ্ভুতভাবে।
একদিন লাইব্রেরিতে সাবিহা একটা পুরনো বই খুঁজছিল। উপরের শেলফে বইটা রাখতে গিয়ে হঠাৎ করে হাত ফসকে বই পড়ে গেল। ঠিক তখনই পিছন থেকে একটা কণ্ঠস্বর— “সাবধান! আমি ধরছি।”
আরিয়ানই সেটা ধরেছিল। তাদের চোখ হঠাৎ মিলল। কয়েক সেকেন্ডের জন্য দুজনেই থমকে গেল। “থ্যাঙ্ক ইউ…” সাবিহা আস্তে বললো। “নো প্রবলেম। তুমি সবসময় এত বই নিয়ে থাকো?” আরিয়ান মৃদু হেসে বললো। সাবিহা একটু লজ্জা পেয়ে বইটা বুকে জড়িয়ে ধরলো। “আমি বই ছাড়া থাকতে পারি না।”
সেদিন থেকেই শুরু হলো তাদের গল্প।
প্রথমে তারা শুধু হালকা কথায় সীমাবদ্ধ থাকলো। লাইব্রেরিতে দেখা হলে দুটো লাইন, ক্যাফেটেরিয়ায় হাই-হ্যালো। ধীরে ধীরে কথোপকথন লম্বা হতে লাগলো।
একদিন কফি শপে আরিয়ান হেসে বললো, “জানো, তোমার হাসি দেখে মনে হয় শীতের সকালের রোদ। একটু উষ্ণ, একটু শান্ত।” সাবিহা চুপ করে গেল, তার গাল টুকটুকে লাল। “তুমি সবসময় এমন কবিতা লিখে কথা বলো?” সে লাজুকভাবে জিজ্ঞেস করলো। “না… শুধু তোমার জন্য।”
সেদিনের পর থেকে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের বাইরে আরেকটা অদ্ভুত টান তৈরি হলো।
শহরের বৃষ্টি ছিল তাদের প্রিয় সময়। এক বিকেলে সাবিহা আরিয়ানকে বললো, “চল না, আমরা ভিজে যাই।” “তুমি সত্যি? ছাতা আছে তো।” “ছাতা নামিয়ে ফেলো।”
দুজনেই ভিজলো। সাবিহার ভিজে চুল কপালে লেগে গেল, আরিয়ান তাকিয়েই থাকলো। “তুমি কি জানো, ভিজে গেলে তুমি আরও সুন্দর লাগো?” সাবিহা চোখ ঘুরিয়ে বললো, “চুপ করো।” কিন্তু তার ঠোঁটের কোণে লাজুক হাসি লুকানো গেল না।
সেই বৃষ্টির দিনে তারা প্রথম হাত ধরেছিল।
প্রেম মানে শুধু হাসি নয়, একটু অভিমানও থাকে।
একদিন সাবিহা রাগ করে বসে আছে। “তুমি সারাদিন ক্রিকেট নিয়ে থাকো, আমার জন্য সময়ই দাও না।” আরিয়ান হাসতে হাসতে বললো, “তাহলে আমার ব্যাট-বল বিক্রি করে দিই?” “হ্যাঁ, দাও।” “ঠিক আছে, কিন্তু তার দামে আমি তোমাকে একটা আংটি কিনবো।”
সাবিহা লজ্জায় মাটির দিকে তাকিয়ে গেল। তার রাগ গলে গেল, শুধু ছোট্ট করে বললো, “পাগল।”
আরিয়ান সাবিহার দিকে তাকিয়ে বললো, “তুমি জানো, আমার জীবনে অনেক মানুষ এসেছে-গেছে। কিন্তু তোমার সঙ্গে থাকার পর মনে হয়, আমি খুঁজে পেয়েছি আমার ঘর।”
সাবিহার চোখ ভিজে উঠলো। “আমিও ভাবি, তুমি না থাকলে আমি এতটা হাসতে পারতাম না।”
তাদের নীরবতা হাজার কথার সমান।
প্রেম মানে কেবল সিনেমার মতো রঙিন মুহূর্ত নয়, বরং ছোট ছোট অভ্যাসও। আরিয়ান সাবিহাকে প্রতিদিন সকালে “গুড মর্নিং” মেসেজ পাঠাতো। সাবিহা আবার প্রতিদিন রাতে “কেয়ারফুলি স্লিপ” লিখে ঘুমাতে যেত।
এই ছোট ছোট কেয়ার, হাসি, অভিমান—সব মিলিয়ে তারা হয়ে উঠলো একে অপরের অপরিহার্য।
অনেক মাস পর, এক সন্ধ্যায় আরিয়ান সাবিহাকে বললো, “আজ একটা স্পেশাল কথা বলবো।”
সাবিহা অবাক হলো। আরিয়ান তার হাত ধরলো, চোখের দিকে তাকিয়ে ধীরে বললো— “সাবিহা, আমি তোমাকে শুধু ভালোবাসি না। আমি চাই তুমি আমার সব সকাল, সব রাত, সব হাসি হয়ে থাকো। তুমি কি আমার সঙ্গে সারাজীবন কাটাতে চাও?”
সাবিহার চোখ ভিজে গেল। গলায় আটকে থাকা হাসি আর কান্না মিলিয়ে সে বললো— “হ্যাঁ, আরিয়ান। সবসময়।”
চারপাশে বাতাস বইছিল, আকাশে লালচে সন্ধ্যা। আর তাদের দুই হৃদয়ের ধ্বনি মিলে যাচ্ছিল এক সুরে।
সকালের আলোটা আয়াতের গালে এসে পড়তেই চোখ মেলে তাকায়… প্রথম ভোর, নতুন এক পরিচয় — “রায়হানের স্ত্রী”।
ঘুম জড়ানো কণ্ঠে আয়াত বলল, — “তুমি না সারারাত ঘুমাওনি! দেখ, চোখ কেমন লাল হয়ে গেছে…”
রায়হান হেসে বলল, — “তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কখন সকাল হলো, জানিই না…”
আয়াত লজ্জায় চোখ ফিরিয়ে নেয়।
শ্বশুরবাড়ির প্রথম সকাল
সামিয়া আপু আয়াতকে এক বাটি দুধসেমাই আর গুড়ের রসগোল্লা নিয়ে দেখতে আসে, পাশে রাকিব ভাইয়া (সামিয়ার স্বামী), যিনি কাল রাতেই বিদেশ থেকে ফিরেছেন শুধু রায়হানের বিয়েতে অংশ নিতে।
সামিয়া আয়াতকে জড়িয়ে ধরে বলে, — “আমার ছোট ভাইয়ের বউ এতো সুন্দর হবে ভাবিনি… জানো, রায়হান তো কখনো কারো নামই নিতো না, তোমাকে নিয়ে ওর চোখে আলাদা এক আলো ছিল সবসময়!”
রাকিব ভাইয়া হেসে বলেন, — “এই ঘরে ঢুকেই তোমার কদর বেড়ে গেল আয়াত! ভাইয়া এখন রোমান্টিক হিরো হয়ে গেছে!”
সবাই হেসে ওঠে।
আখি ছুটে এসে বলে, — “ভাবি! ভাবি! চলো না, তোমাকে আমাদের ঘরদোর, ছাদ, বাগান সব দেখাতে হবে! নতুন করে!তোমার জন্য ভাইয়া সব নতুন করে গুছিয়েছে। আর হ্যাঁ, তুমি আমাকে বকা দিও না কিন্তু, আমি তো একটু দুষ্টু!”
আয়াত হেসে বলে, — “তুমি যদি দুষ্টু হও, আমি তো আরো বেশি দুষ্ট ভাবি হবো!”
আখি মুখ গোমড়া করে বলে, — “তবে আমি কিন্তু রায়হান ভাইয়াকে দিয়ে শাসন করাবো!”
রায়হান ঢুকে বলে, — “আচ্ছা, আমি এখন কার ভাই, আর কার বর বুঝতেই পারছি না!”
আয়াত ও আখি একসাথে বলে, — “দুজনের-ই!” — এবং তারপর তিনজনেই হেসে গড়িয়ে পড়ে।
রায়হানের বন্ধুরা এসে হাজির
জুবায়ের, রিফাত, লিমন, রাকিব, রাজু, সিয়াম সবাই এসে রায়হানকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা শুরু করল।
জুবায়ের বলে, — “রায়হান ভাই, আজ তো ভাইই না, এখন আপনি পুরোদস্তুর হেনস্তা হবো… মানে জামাই!”
রায়হান বলল, — “ভাই, আমার জীবন তো এখন আয়াতের হাতে… এখন যা বলবে তাই করবো!”
আয়াত পেছন থেকে বলে, — “এইটা রেকর্ড করে রাখো… পরে যেন না বলে আমি জোর করি!”
সবাই হেসে ফেলে।
সন্ধ্যায় ছাদে হালকা বাতাসে আয়াত আর রায়হান একসাথে বসে।
রায়হান আয়াতের কানে কানে বলে, — “শোন আয়াত, আমি ভাবছি আমাদের মেয়ের নাম রাখবো ‘জুই’। কেমন?”
বিয়ের দিনের সকালটা যেন এক আলাদা রঙে শুরু হয়েছিল। চারপাশে সাজসজ্জার তাড়া, গেটের সামনের তোরণ — লাল, সোনালি আর মেরুনের ঝলকে যেন রঙিন একটা স্বপ্নের রাজ্য।
কমিউনিটি সেন্টারটা আজ যেন জ্যোতিতে ভেসে যাচ্ছে। ঢুকতেই বিশাল ফুলের তোরণ, পাশে লেখা – “রায়হান ❤️ আয়াত” – তার নিচে ছোট করে – “তোমার আমার প্রেমের শুরুটা বন্ধুত্ব হলেও, শেষটা চিরসঙ্গী হয়ে থাকুক”
আয়াতের সাজ ঘরে ঢোকার আগেই মিরা, ইশা, স্নেহা, রাইমা, সামিয়া, ইসমিন সবাই মিলে হাসি-ঠাট্টা, টিকলি গোঁজানো নিয়ে তুমুল ব্যস্ত। আয়াত আজ গাঢ় মেরুন শাড়িতে, মাথায় সোনালি টিকলি, মেক-আপ, গলায় ভারি সোনার হার — একদম যেন রাজকন্যা। তার চোখে জলরঙা কাজল, ঠোঁটে হালকা লাল রঙ... আর সেই চিরচেনা লজ্জা-মাখানো হাসিটা, যা রায়হানকে পাগল করে দেয়।
রায়হান আজ পরেছে মেরুন পাঞ্জাবি আর সোনালি পাগড়ি। চোখে যেন এক অদ্ভুত শান্তি আর উত্তেজনার মিশেল। জুবায়ের আর রিফাত মিলে গেট ধরা শুরু করতেই, হাসিতে ফেটে পড়ে সবাই। রায়হান গম্ভীর মুখে বলে, — “বন্ধুর বিয়েতে যদি গেট না ধরি, তাহলে তো জীবনে গেটই বন্ধ থাকবে!”
কাজী সাহেব চলে এসেছে" কাজী সাহেব প্রথমেই আয়াত কে জিজ্ঞেস করলো "মা, তুমি কী রায়হান হোসেন আরাফ কে তোমার জীবনসঙ্গী হিসেবে কবুল করছো? তবে বলো আলহামদুলিল্লাহ কবুল! আয়াতের বুক কাপছে আয়াত কাপা কাপা কন্ঠে বললো–" আলহামদুলিল্লাহ কবুল" রায়হান ও বললো আলহামদুলিল্লাহ কবুল কবুল কবুল!
বিয়ের কাজ শেষ আয়াতের ভিতরে চলছে এক অজানা উত্তেজনা!
ছবি তোলা, খাওয়া-দাওয়া, কেক কাটার বিশেষ মুহূর্ত
মিডিয়া টিম ছবি তুলতে তুলতে ক্লান্ত, অথচ ক্লিক হচ্ছে একটার পর একটা। কেক কাটার মুহূর্তে আয়াতের হাতে খেয়ে রায়হান একটু হেসে বলল, — “আজ থেকে রোজ খাওয়াবে, ঠিক আছে?”
হঠাৎ করেই কোথা থেকে যেনো জিহাদ আসে সবাইকে অবাক করে দিয়ে হাটু গেড়ে স্নেহার সামনে বসে বলা শুরু করলো" I Love you miss Raima akter Sneha,Do You Love me? স্নেহাও বেশ অবাক হলো এতদিন বন্ধু ছাড়া অন্য কোন চোখেই দেখেনি জিহাদ কে! তবে আজ? ওপাশ থেকে ইশার বয় ফ্রেন্ড রিফাত বললো স্নেহা হ্যাঁ করে দে আর কতদিন সিং গেল থাকবি? স্নেহা কিছু ক্ষন ভেবে মুচকি হেসে ফুল নিয়ে বললো "Yes,i love you too!
ইশা, স্নেহা, ফিহাহ, সাবিহা, রিয়া, সামিয়া, সবাই গায়ে হলুদের স্মৃতি টেনে এনে হাসি ঠাট্টা করছে। মিরা বলছে, — “আমার আপু তো এখন একেবারে ম্যাডাম হয়ে গেলো! জামাইর নাম নিচ্ছো না তো?”
— গায়ে হলুদ সকালবেলা থেকেই আয়াতদের বাড়ির উঠোনে যেন এক অন্যরকম উৎসবের ঘ্রাণ। সূর্যটা আজ একটু বেশিই হাসছে, হাওয়া আসছে হলুদ রঙের গান নিয়ে। সকাল থেকেই ব্যস্ততা, রান্নার গন্ধ, ফুলের সৌরভ, আর মাঝে মাঝে আয়াতের লাজুক হাসি — সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত মায়া জমেছে যেন।
আয়াত আজ হালকা হলুদ জামদানি পরে। চুলে বেণি করে বাঁধা গাঁদা ফুলের মালা, মুখে হালকা মেকআপ, ঠোঁটে একটা মিষ্টি গোলাপি ছোঁয়া। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখে, মনে মনে ভাবে — “এই আমি... আজ সত্যিই কারো হবো…”
হঠাৎ পেছন থেকে মিরা এসে বলে, — “আপু...তুমি আজ পরীর মতো লাগতেছো।” আয়াত হেসে বোনকে কোলে টেনে নেয়।
দুপুরের আয়োজন শুরু... একটু পরেই উঠোনে প্রবেশ করল গানে গানে বান্ধবীরা — ইশা, স্নেহা, রিয়া, ফিহা, সামিয়া, মারিয়া, রিফাত আর আরও অনেকে। হাতে ফুলের তোড়া, মাথায় ফুলের টায়রা, ঠোঁটে হাসি, চোখে জল।
ইশা বলল, — “আজ আমাদের প্রিন্সেসের হলুদ! সব কান্না থামিয়ে আজ শুধু হাসবি আয়াত!” স্নেহা বলে, — “কাল তুই ওর হবির কাছে যাবি, তাই আজ তোর সাথে শেষ পাগলামি করব!” সামিয়া আয়াতকে জড়িয়ে ধরে বলে, — “আজ আয়াত আমার ছোট বোন না, আমার গর্ব।”
গায়ে হলুদের মূল পর্ব এক এক করে সবাই আয়াতের গায়ে হলুদ লাগাচ্ছে। প্রথমে মা, তারপর বাবা, তারপর একে একে সবাই। আয়াতের চোখে একটু জল চলে আসে যখন সে দেখে, তার ফুফু যিনি বিধবা, তিনিও তাকে কাঁপা হাতে হলুদ মাখাচ্ছেন, আর বলছেন — — “তুই সুখে থাক আয়াত... সুখে থাক…”
স্নেহা হঠাৎ আয়াতের কানে ফিসফিস করে বলে, — “রায়হানের ভিডিও আসবে রে! এখন একটু লাজুক হয়ে আয়!” সবাই চিৎকার করে ওঠে – “আয়াত... রায়হান ভাইয়া আসছে!!”
রায়হান তখন অন্যপাশে, তার নিজের গায়ে হলুদের মাঝেও এক কোণে দাঁড়িয়ে আয়াতের ছবি দেখছে। ঠিক তখনই ফোনটা কাঁপে। ভিডিও কল। ওপাশে আয়াত, হাসছে, গায়ে হলুদ মেখে বসে আছে। রায়হান একটু চুপ করে থেকে বলল, — “আজ তোকে দেখে কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেললাম…” আয়াত চোখ নামিয়ে ফিসফিস করে বলে, — “আমিও…”
পাশে থাকা জুবায়ের হেসে বলে, — “দুইজনে এভাবে তাকায় থাকলে ভিডিও বন্ধ করে দিবো ভাইয়া!”
ডান্স, মজার মুহূর্ত আর আবেগ রিয়া আর সামিয়া আয়াতকে তুলে নাচিয়ে দিলো। গানে গানে সবাই একসাথে — “গায়ে হলুদের এই সন্ধ্যা, মনে রাখিস আয়াত... কাল তুই রায়হানের হবির ঘরনী!”
রিফাত আর ইশা একসাথে আয়াতের জন্য একটি ভিডিও তৈরি করেছে — কলেজের দিন, বন্ধুত্বের মূহূর্ত, রায়হানের সাথে স্মৃতি — আয়াতের চোখে জল চলে আসে, সবাই বলে, — “আজ কান্না না, আয়াত!”
স্নেহা বলল, — “কালকে রায়হান তোকে দেখে আবার প্রেমে পড়ে যাবে!” আয়াত একটু হেসে বলে, — “ও তো এখনও পড়ে আছে…”
রাতের শেষ মুহূর্ত সকলের হাসি, নাচ, কেক কাটা, হলুদের রঙে লেপটে থাকা সন্ধ্যার শেষ দিকে আয়াত একা উঠে যায় ছাদে। চাঁদ উঁকি দিচ্ছে। আয়াত আকাশের দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে বলে — “আল্লাহ… আমার রায়হানকে আমার জন্য রাখো… আমি তো শুধু ওর হতে চেয়েছিলাম।”
ঠিক তখনই পেছনে স্নেহা এসে বলে, — “তোদের দুজনকে আল্লাহ এক করেছেন আয়াত, তোদের কিছু হবে না।” আয়াত হাসে, চোখে জল... — “আমি জানি, ও আমায় অনেক ভালোবাসে….
রাত তখন ১১টা পেরিয়ে গেছে। আয়াতের ঘর আজ যেন আলোয় ভরা। খাটের ওপর রঙ-বেরঙের কাজ করা মেহেদি কাপড়, ফর্সা মুখে হালকা ক্লান্তি, কিন্তু তার চোখে খেলা করছে এক অন্যরকম আলোর ছোঁয়া।
ঘরের একপাশে বসে আছে স্নেহা, ইশা, সামিয়া, ফিহা, রিয়া, মারিয়া – সবাই আজ যেন আয়াতকে ঘিরেই এক অন্যরকম রঙে রাঙিয়ে তুলেছে। কেউ মেহেদির ডিজাইন বাছছে, কেউ আয়াতের হাত ধরে বলছে – “তোর বিয়ের ঘ্রাণটা পড়েই গ্যাছে আয়াত!”
রাতে আয়াত ঘুমাতে পারল না। একের পর এক স্মৃতি ভেসে আসছে — কলেজের প্রথম দিন, রায়হানের রাগ, অভিমান, কাছাকাছি আসা, আর অবশেষে পারিবারিক রাজি হওয়া। আয়াত জানে, এখন থেকে তার জীবনের পথচলা নতুনভাবে শুরু হবে।
📍১০ আগস্ট — মেহেদি নাইট বিকেল থেকেই বাড়িতে সাজসজ্জার ধুম। হলুদ-সবুজ থিমে সাজানো হয়েছে উঠোন, বাতির ঝলকানিতে যেন একেকটা তারা ঝরে পড়ছে। আয়াতের মাথায় গাঁদা ফুলের মালা, হাতে কাজ করা খয়েরি ডিজাইন। আজকের আয়াত যেন স্বপ্নের রাজকুমারী।
ঘড়ির কাঁটা তখন ঠিক ৯টা ১৭ মিনিট ছুঁই ছুঁই। রায়হান আয়াতদের বাড়ি থেকে ফেরার পর একাই বসে ছিল, মনের মধ্যে চলছিল হাজারো চিন্তার স্রোত। আনমনে সে কখনো হেসেছে, কখনো ভাবনার ভারে চুপ করে থেকেছে।
আজ তার ভেতরে যে আনন্দ—সেটা কি কেউ বোঝে?
পকেট থেকে ফোনটা বের করল। “Belifool” নামে সেভ করা নাম্বারে কল করল সে।
রায়হান: — “আচ্ছা রাখি, এখন অনেক কাজ… সব এরেঞ্জ করতে হবে!”
আয়াত একটু চুপ করে তারপর মৃদু কণ্ঠে বলল, — “শোন রায়হান…”
— “হুম?” — “I need you, dear… I love you.”
বলেই কল কেটে দিলো আয়াত।
রায়হান ফোন হাতে নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে হাসে—একটা মেয়ে কীভাবে এত সহজে তার প্রাণটাকে ছুঁয়ে যায়!
বিকাল ৩টা…
আয়াত হঠাৎ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ৩টা বাজতে চলেছে! সে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে তাদের মেইন গেটের দিকে দৌড়ায়। গেটে পৌঁছেই দেখে, ব্রাউন টি-শার্ট পরা একটা ছেলে বাইকে বসে মোবাইল দেখছে।
Fairy Of Novel
ছোট গল্প- তুমি আমার নীলচে বিকেল
লেখিকা: মারজিয়া আক্তার (My Birthday Special)
সাবিহা ইসলাম আলভি, সবার কাছে “সাবিহা”, একেবারেই সাধারণ একটি মেয়ে। চশমা পরা, হাসলে গালে ছোট্ট টোল পড়ে যায়, আর কথায় অদ্ভুত এক মিষ্টি সুর। সে সবসময় লাইব্রেরিতে বসে বই পড়ে। প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে সে খুব একটা ভাবে না, বরং বই আর কফিই তার সব।
অন্যদিকে আরিয়ান হোসাইন রেহান, কলেজের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছেলে। লম্বা, স্মার্ট, ক্রিকেট খেলে দারুণ। কিন্তু জনপ্রিয়তার ভিড়েও তার চোখে সবসময় এক ধরনের শান্ত খোঁজ থাকে—যেন কাউকে খুঁজছে।
তাদের প্রথম দেখা হয়েছিল একেবারে অদ্ভুতভাবে।
একদিন লাইব্রেরিতে সাবিহা একটা পুরনো বই খুঁজছিল। উপরের শেলফে বইটা রাখতে গিয়ে হঠাৎ করে হাত ফসকে বই পড়ে গেল।
ঠিক তখনই পিছন থেকে একটা কণ্ঠস্বর—
“সাবধান! আমি ধরছি।”
আরিয়ানই সেটা ধরেছিল।
তাদের চোখ হঠাৎ মিলল। কয়েক সেকেন্ডের জন্য দুজনেই থমকে গেল।
“থ্যাঙ্ক ইউ…” সাবিহা আস্তে বললো।
“নো প্রবলেম। তুমি সবসময় এত বই নিয়ে থাকো?” আরিয়ান মৃদু হেসে বললো।
সাবিহা একটু লজ্জা পেয়ে বইটা বুকে জড়িয়ে ধরলো। “আমি বই ছাড়া থাকতে পারি না।”
সেদিন থেকেই শুরু হলো তাদের গল্প।
প্রথমে তারা শুধু হালকা কথায় সীমাবদ্ধ থাকলো। লাইব্রেরিতে দেখা হলে দুটো লাইন, ক্যাফেটেরিয়ায় হাই-হ্যালো। ধীরে ধীরে কথোপকথন লম্বা হতে লাগলো।
একদিন কফি শপে আরিয়ান হেসে বললো,
“জানো, তোমার হাসি দেখে মনে হয় শীতের সকালের রোদ। একটু উষ্ণ, একটু শান্ত।”
সাবিহা চুপ করে গেল, তার গাল টুকটুকে লাল।
“তুমি সবসময় এমন কবিতা লিখে কথা বলো?” সে লাজুকভাবে জিজ্ঞেস করলো।
“না… শুধু তোমার জন্য।”
সেদিনের পর থেকে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের বাইরে আরেকটা অদ্ভুত টান তৈরি হলো।
শহরের বৃষ্টি ছিল তাদের প্রিয় সময়।
এক বিকেলে সাবিহা আরিয়ানকে বললো, “চল না, আমরা ভিজে যাই।”
“তুমি সত্যি? ছাতা আছে তো।”
“ছাতা নামিয়ে ফেলো।”
দুজনেই ভিজলো। সাবিহার ভিজে চুল কপালে লেগে গেল, আরিয়ান তাকিয়েই থাকলো।
“তুমি কি জানো, ভিজে গেলে তুমি আরও সুন্দর লাগো?”
সাবিহা চোখ ঘুরিয়ে বললো, “চুপ করো।”
কিন্তু তার ঠোঁটের কোণে লাজুক হাসি লুকানো গেল না।
সেই বৃষ্টির দিনে তারা প্রথম হাত ধরেছিল।
প্রেম মানে শুধু হাসি নয়, একটু অভিমানও থাকে।
একদিন সাবিহা রাগ করে বসে আছে।
“তুমি সারাদিন ক্রিকেট নিয়ে থাকো, আমার জন্য সময়ই দাও না।”
আরিয়ান হাসতে হাসতে বললো, “তাহলে আমার ব্যাট-বল বিক্রি করে দিই?”
“হ্যাঁ, দাও।”
“ঠিক আছে, কিন্তু তার দামে আমি তোমাকে একটা আংটি কিনবো।”
সাবিহা লজ্জায় মাটির দিকে তাকিয়ে গেল।
তার রাগ গলে গেল, শুধু ছোট্ট করে বললো, “পাগল।”
একদিন বিকেলে নদীর ধারে বসে দুজন। বাতাস বইছে, চারপাশে শান্ত পরিবেশ।
আরিয়ান সাবিহার দিকে তাকিয়ে বললো,
“তুমি জানো, আমার জীবনে অনেক মানুষ এসেছে-গেছে। কিন্তু তোমার সঙ্গে থাকার পর মনে হয়, আমি খুঁজে পেয়েছি আমার ঘর।”
সাবিহার চোখ ভিজে উঠলো।
“আমিও ভাবি, তুমি না থাকলে আমি এতটা হাসতে পারতাম না।”
তাদের নীরবতা হাজার কথার সমান।
প্রেম মানে কেবল সিনেমার মতো রঙিন মুহূর্ত নয়, বরং ছোট ছোট অভ্যাসও।
আরিয়ান সাবিহাকে প্রতিদিন সকালে “গুড মর্নিং” মেসেজ পাঠাতো।
সাবিহা আবার প্রতিদিন রাতে “কেয়ারফুলি স্লিপ” লিখে ঘুমাতে যেত।
এই ছোট ছোট কেয়ার, হাসি, অভিমান—সব মিলিয়ে তারা হয়ে উঠলো একে অপরের অপরিহার্য।
অনেক মাস পর, এক সন্ধ্যায় আরিয়ান সাবিহাকে বললো,
“আজ একটা স্পেশাল কথা বলবো।”
সাবিহা অবাক হলো।
আরিয়ান তার হাত ধরলো, চোখের দিকে তাকিয়ে ধীরে বললো—
“সাবিহা, আমি তোমাকে শুধু ভালোবাসি না। আমি চাই তুমি আমার সব সকাল, সব রাত, সব হাসি হয়ে থাকো। তুমি কি আমার সঙ্গে সারাজীবন কাটাতে চাও?”
সাবিহার চোখ ভিজে গেল। গলায় আটকে থাকা হাসি আর কান্না মিলিয়ে সে বললো—
“হ্যাঁ, আরিয়ান। সবসময়।”
চারপাশে বাতাস বইছিল, আকাশে লালচে সন্ধ্যা।
আর তাদের দুই হৃদয়ের ধ্বনি মিলে যাচ্ছিল এক সুরে।
সমাপ্তি......
1 week ago (edited) | [YT] | 5
View 8 replies
Fairy Of Novel
🎂~𝙄𝙩'𝙎 𝙈𝙮 𝘽𝙞𝙧𝙩𝙝𝙙𝙖𝙮~🍷
2 weeks ago | [YT] | 7
View 12 replies
Fairy Of Novel
THANK YOU FOR 50 SUBSCRIBERS....!
2 weeks ago | [YT] | 6
View 6 replies
Fairy Of Novel
প্রণয়ের কথা সকল পর্বের লিংক একসাথে 👇
১.
youtube.com/post/Ugkxj65ASBFSuz6R_OD_LSVcBH5zjygl3…
২.
youtube.com/post/UgkxMr5KESO3cToDqSv46W76NFv7lbwgZ…
৩.
youtube.com/post/UgkxWxc8yeb0Ml2HE6xS-Uqexc-NFlNhi…
৪.
youtube.com/post/Ugkx_R_fCznkvwDx9k8SqOGcWZbpnMKZY…
৫.
youtube.com/post/UgkxWzD6jGCd2Okf3jIwo9yQVBRqghcq9…
৬.
youtube.com/post/UgkxP1JwbAz3RbQH-R2OXpP6VELtkJzC-…
৭.
youtube.com/post/UgkxNiY3CjHYrFSb-38gwguNUENRZ2PNT…
৮.
youtube.com/post/UgkxtWuyD_4IopJCgZFeLJZv659YgeaVa…
৯.
youtube.com/post/UgkxHrz9jo0b5cHCI-FYnyTpwM6MgItLO…
১০.
youtube.com/post/Ugkxu-PF501__kPdeKSgJTW8G6xnCRUTm…
১১.
youtube.com/post/UgkxUImK4gUNu5IVawZ_0YElF2zL6i6_j…
১২.
youtube.com/post/Ugkxvz6WBfn3A2OvEPqSP5QhyG21sVB3d…
১৩.
youtube.com/post/UgkxfjdLPjfyrnIN9WxpTgwA859D-kReV…
১৪.
youtube.com/post/UgkxeZIYZwikNYeIbg1ww0NGi436HvcO7…
১৫.
youtube.com/post/UgkxAP72dsvQsoo6uIDDUEv48ERvFIkEN…
১৬.
youtube.com/post/UgkxpW8HT5Jb6251kLRlQ4EvurMMY_42u…
১৭.
youtube.com/post/UgkxH810MrHdbSLR5Cn3a_JYD-7GPRsOj…
১৮.
youtube.com/post/Ugkx_yPMDVwxbqMCEerwOcWvzKDirlPrB…
১৯.
youtube.com/post/UgkxSyLY-KUGt2VQaRRBJQ48H9BEHF6Sc…
২০.
youtube.com/post/Ugkx9LTt1mdRza2ge7qCOJTj_bmwkwdm3…
২১.
youtube.com/post/Ugkx3PcOuQZQmD8xdniXszZ3h52HaY5Kj…
২২.
youtube.com/post/UgkxW0w9EwP6-t8Lf5a8z8pL0Tnwr1SRG…
২৩.
youtube.com/post/Ugkx23-r50nIbTFEPdQBA_yX3aMAKLrr7…
২৪.
youtube.com/post/UgkxkTGp6zyrJaY4nKBKqnaaebvVca3dR…
২৫.
youtube.com/post/Ugkx3fKXdxNLQBDqnghY1qtOT8e2ZaKqM…
২৬.
youtube.com/post/Ugkx8cHWvENtJq4Ug_61lWvUI942wj1Ny…
২৭.
youtube.com/post/Ugkxsrh09TbFJUmHB_VV_n_GgXFrnbO5m…
২৮.
youtube.com/post/UgkxJEl98IcRkLSLlp8t3jWzHfjE-JH8f…
২৯.
youtube.com/post/Ugkx1OOksB8FBXIdioILdYEYMmeZOsDYk…
৩০.
youtube.com/post/UgkxIawyDT97n0LS_ma0PWs-papgo2_UT…
৩১.Special Moment
youtube.com/post/Ugkx5yHRVLVDziUv1gq9p1UJQ1vpZluv1…
৩২.Propose Spacail
youtube.com/post/Ugkxo1UHFpKtmXATvBv5C3NXkDhScHksJ…
৩৩.
youtube.com/post/UgkxOn3_lKEhbjnNq8Tf31HYrMGzRKLmv…
৩৪.
youtube.com/post/Ugkx2J0APGvEPGN06MK_hj5xz44YE5e_f…
৩৫.
youtube.com/post/UgkxOvrpjjzgKVUgC-fEPoMjU_93dsasT…
৩৬.Mehendi
youtube.com/post/UgkxatijJrgdj2Btv5jdV6r8v6fPe4MER…
৩৭.Haldi Night
youtube.com/post/UgkxEOWJDiy05qnnTRu2orBQKEseanz7c…
৩৮.Wedding
youtube.com/post/UgkxsjNZreTbZDa-96s88knFTsb6QoxAj…
৩৯.শেষ পর্ব
youtube.com/post/UgkxkTVKz-KxyzVlyhB7guKpoLsk_5CWt…
রায়হানের চিঠি ~
youtube.com/post/UgkxjvdxfHunwr3ghd1bFgRJw9r3akwrI…
সবাইকে পড়ার অনুরোধ রইলো..!🕊️
Please Share.....??🪄
2 weeks ago | [YT] | 6
View 6 replies
Fairy Of Novel
প্রণয়ের কথা –রায়হানের চিঠি আয়াতের জন্য!
প্রিয় প্রণয়ের নারী আয়াত,
আজ তুমি আমার ঘরের আলো।
তুমি ঘুমিয়ে আছো পাশে, নিঃশব্দ নিঃশ্বাসে… আর আমি তাকিয়ে আছি তোমার মুখের দিকে — যেমন তাকিয়ে থেকেছি সেই কলেজ লাইফে, আড়াল থেকে…
তখন তোমার চোখে তাকাতে সাহস হতো না, আর আজ? আজ এই চোখেই আমার জীবনের পূর্ণতা।
আয়াত, জানো?
তুমি শুধু আমার প্রেমিকা না…
তুমি আমার বন্ধু, আমার অভিমান, আমার সকাল-বিকেল, আমার নিজের গড়ে তোলা স্বপ্ন।
যেদিন প্রথম তুমি “রায়হান, আমার রাগ শেষ” বলে হাসলে… আমি বুঝেছিলাম, ভালোবাসা আসলে শব্দে না — অনুভবে জমে।
আজ আমরা এক ছাদের নিচে, এক বিছানায়, এক জীবনে।
আমি চেয়েছিলাম, আমার জীবনের গল্পটা এমন একজন দিয়ে শুরু হোক, যার চোখে ভরসা থাকে, কণ্ঠে কোমলতা থাকে, আর হাতে হাত রেখে বলার সাহস থাকে —
“তুমি আছো তো, আমি ভয় পাই না।”
আমি জানি, আমি ভুল করব… রাগ করে ফেলব… হয়ত তোমার চোখ ভিজে যাবে।
কিন্তু আমি প্রতিজ্ঞা করছি, যতবার ভাঙবে, ততবার জোড়া দেব… যতবার তুমি চুপ করবে, আমি বুঝে নিব…
কারণ, আমি তোমার প্রেমে না… আমি তোমাতে আছি।
তুমি আজ আমার স্ত্রী — কিন্তু তার থেকেও বড় কথা, তুমি আমার সবচেয়ে কাছের মানুষ।
আয়াত....
ভালো থেকো… সবসময় আমার পাশে থেকো।
কারণ আমি “রায়হান” হয়েছি, শুধুই তোমার “আয়াত” হওয়ার জন্য।
আমার প্রণয়ের কথা সব তোমাকে ঘিরেই ||
–তোমার প্রণয়ের পুরুষ রায়হান
সমাপ্তি~🪄
2 weeks ago | [YT] | 3
View 1 reply
Fairy Of Novel
প্রণয়ের কথা– শেষ পর্ব
লেখিকা: মারজিয়া আক্তার ||
সকালের আলোটা আয়াতের গালে এসে পড়তেই চোখ মেলে তাকায়…
প্রথম ভোর, নতুন এক পরিচয় — “রায়হানের স্ত্রী”।
ঘুম জড়ানো কণ্ঠে আয়াত বলল,
— “তুমি না সারারাত ঘুমাওনি! দেখ, চোখ কেমন লাল হয়ে গেছে…”
রায়হান হেসে বলল,
— “তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কখন সকাল হলো, জানিই না…”
আয়াত লজ্জায় চোখ ফিরিয়ে নেয়।
শ্বশুরবাড়ির প্রথম সকাল
সামিয়া আপু আয়াতকে এক বাটি দুধসেমাই আর গুড়ের রসগোল্লা নিয়ে দেখতে আসে, পাশে রাকিব ভাইয়া (সামিয়ার স্বামী), যিনি কাল রাতেই বিদেশ থেকে ফিরেছেন শুধু রায়হানের বিয়েতে অংশ নিতে।
সামিয়া আয়াতকে জড়িয়ে ধরে বলে,
— “আমার ছোট ভাইয়ের বউ এতো সুন্দর হবে ভাবিনি… জানো, রায়হান তো কখনো কারো নামই নিতো না, তোমাকে নিয়ে ওর চোখে আলাদা এক আলো ছিল সবসময়!”
রাকিব ভাইয়া হেসে বলেন,
— “এই ঘরে ঢুকেই তোমার কদর বেড়ে গেল আয়াত! ভাইয়া এখন রোমান্টিক হিরো হয়ে গেছে!”
সবাই হেসে ওঠে।
আখি ছুটে এসে বলে,
— “ভাবি! ভাবি! চলো না, তোমাকে আমাদের ঘরদোর, ছাদ, বাগান সব দেখাতে হবে! নতুন করে!তোমার জন্য ভাইয়া সব নতুন করে গুছিয়েছে। আর হ্যাঁ, তুমি আমাকে বকা দিও না কিন্তু, আমি তো একটু দুষ্টু!”
আয়াত হেসে বলে,
— “তুমি যদি দুষ্টু হও, আমি তো আরো বেশি দুষ্ট ভাবি হবো!”
আখি মুখ গোমড়া করে বলে,
— “তবে আমি কিন্তু রায়হান ভাইয়াকে দিয়ে শাসন করাবো!”
রায়হান ঢুকে বলে,
— “আচ্ছা, আমি এখন কার ভাই, আর কার বর বুঝতেই পারছি না!”
আয়াত ও আখি একসাথে বলে,
— “দুজনের-ই!” — এবং তারপর তিনজনেই হেসে গড়িয়ে পড়ে।
রায়হানের বন্ধুরা এসে হাজির
জুবায়ের, রিফাত, লিমন, রাকিব, রাজু, সিয়াম সবাই এসে রায়হানকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা শুরু করল।
জুবায়ের বলে,
— “রায়হান ভাই, আজ তো ভাইই না, এখন আপনি পুরোদস্তুর হেনস্তা হবো… মানে জামাই!”
রায়হান বলল,
— “ভাই, আমার জীবন তো এখন আয়াতের হাতে… এখন যা বলবে তাই করবো!”
আয়াত পেছন থেকে বলে,
— “এইটা রেকর্ড করে রাখো… পরে যেন না বলে আমি জোর করি!”
সবাই হেসে ফেলে।
সন্ধ্যায় ছাদে হালকা বাতাসে আয়াত আর রায়হান একসাথে বসে।
রায়হান আয়াতের কানে কানে বলে,
— “শোন আয়াত, আমি ভাবছি আমাদের মেয়ের নাম রাখবো ‘জুই’। কেমন?”
আয়াত হেসে বলে,
— “তুমি তো আজ থেকে মেয়ের বাবাও হয়ে গেলে?”
রায়হান চুপি চুপি কপালে চুমু দিয়ে বলে,
— “তুমি তো আজ আমার ঘরের রানী, ভাবছি ভবিষ্যতও আজই রঙিন করে ফেলি।”
আয়াত একটু চুপ করে থেকে বলে,
— “জুই নামটা শুনতেই মিষ্টি… একদিন হবে নিশ্চয়ই।”
মিরা এসে বলে,
— “দুলাভাই, দুলাভাই! আপুকে যেন কাঁদাও না, বুঝেছো? কাঁদালে কিন্তু আমিই প্রথমে কান ধরাবো!”
রায়হান মাথা নত করে বলে,
— “আপনার আপা আমার জীবন… ওর চোখে জল আসার আগেই আমি সব মুছে ফেলবো, ছোট শালীজান!”
সবাই হাসে, মিরা আবার জড়িয়ে ধরে রায়হানকে।
শেষ রাতের মিষ্টি অনুভব
সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পর, রায়হান আর আয়াত ছাদে গিয়ে একসাথে বসে।
নিঃশব্দতা ভেঙে রায়হান বলে,
— “তোমাকে পেয়ে আমি যেন আবার নতুন করে জন্ম নিলাম আয়াত…”
আয়াত কাঁধে মাথা রেখে বলে,
— “তুমি তো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলে, ভালোবাসা হলে… এখন তুমি আমার জীবন।”
একটা ছোট্ট চুপচাপ মুহূর্ত… চাঁদের আলোয় জ্বলজ্বল করছে আয়াতের চুড়ির কাঁচ।
রায়হান হেসে বললো–তুমি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার বেলিফুল"
আয়াত দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো"তুমিও!
সমাপ্ত......
2 weeks ago | [YT] | 3
View 0 replies
Fairy Of Novel
প্রণয়ের কথা– পর্ব ৩৮!
লেখিকা: মারজিয়া আক্তার
বিয়ের দিনের সকালটা যেন এক আলাদা রঙে শুরু হয়েছিল। চারপাশে সাজসজ্জার তাড়া, গেটের সামনের তোরণ — লাল, সোনালি আর মেরুনের ঝলকে যেন রঙিন একটা স্বপ্নের রাজ্য।
কমিউনিটি সেন্টারটা আজ যেন জ্যোতিতে ভেসে যাচ্ছে। ঢুকতেই বিশাল ফুলের তোরণ, পাশে লেখা –
“রায়হান ❤️ আয়াত” –
তার নিচে ছোট করে – “তোমার আমার প্রেমের শুরুটা বন্ধুত্ব হলেও, শেষটা চিরসঙ্গী হয়ে থাকুক”
আয়াতের সাজ ঘরে ঢোকার আগেই মিরা, ইশা, স্নেহা, রাইমা, সামিয়া, ইসমিন সবাই মিলে হাসি-ঠাট্টা, টিকলি গোঁজানো নিয়ে তুমুল ব্যস্ত। আয়াত আজ গাঢ় মেরুন শাড়িতে, মাথায় সোনালি টিকলি, মেক-আপ, গলায় ভারি সোনার হার — একদম যেন রাজকন্যা।
তার চোখে জলরঙা কাজল, ঠোঁটে হালকা লাল রঙ... আর সেই চিরচেনা লজ্জা-মাখানো হাসিটা, যা রায়হানকে পাগল করে দেয়।
রায়হান আজ পরেছে মেরুন পাঞ্জাবি আর সোনালি পাগড়ি। চোখে যেন এক অদ্ভুত শান্তি আর উত্তেজনার মিশেল।
জুবায়ের আর রিফাত মিলে গেট ধরা শুরু করতেই, হাসিতে ফেটে পড়ে সবাই।
রায়হান গম্ভীর মুখে বলে,
— “বন্ধুর বিয়েতে যদি গেট না ধরি, তাহলে তো জীবনে গেটই বন্ধ থাকবে!”
কাজী সাহেব চলে এসেছে"
কাজী সাহেব প্রথমেই আয়াত কে জিজ্ঞেস করলো "মা, তুমি কী রায়হান হোসেন আরাফ কে তোমার জীবনসঙ্গী হিসেবে কবুল করছো? তবে বলো আলহামদুলিল্লাহ কবুল!
আয়াতের বুক কাপছে আয়াত কাপা কাপা কন্ঠে বললো–" আলহামদুলিল্লাহ কবুল"
রায়হান ও বললো আলহামদুলিল্লাহ কবুল কবুল কবুল!
বিয়ের কাজ শেষ আয়াতের ভিতরে চলছে এক অজানা উত্তেজনা!
ছবি তোলা, খাওয়া-দাওয়া, কেক কাটার বিশেষ মুহূর্ত
মিডিয়া টিম ছবি তুলতে তুলতে ক্লান্ত, অথচ ক্লিক হচ্ছে একটার পর একটা।
কেক কাটার মুহূর্তে আয়াতের হাতে খেয়ে রায়হান একটু হেসে বলল,
— “আজ থেকে রোজ খাওয়াবে, ঠিক আছে?”
সবার সামনে আয়াত একটু লজ্জা পেলেও মাথা নেড়ে হেসে ফেলে।
হঠাৎ করেই কোথা থেকে যেনো জিহাদ আসে সবাইকে অবাক করে দিয়ে হাটু গেড়ে স্নেহার সামনে বসে বলা শুরু করলো" I Love you miss Raima akter Sneha,Do You Love me? স্নেহাও বেশ অবাক হলো এতদিন বন্ধু ছাড়া অন্য কোন চোখেই দেখেনি জিহাদ কে! তবে আজ? ওপাশ থেকে ইশার বয় ফ্রেন্ড রিফাত বললো স্নেহা হ্যাঁ করে দে আর কতদিন সিং গেল থাকবি? স্নেহা কিছু ক্ষন ভেবে মুচকি হেসে ফুল নিয়ে বললো "Yes,i love you too!
ইশা, স্নেহা, ফিহাহ, সাবিহা, রিয়া, সামিয়া, সবাই গায়ে হলুদের স্মৃতি টেনে এনে হাসি ঠাট্টা করছে।
মিরা বলছে,
— “আমার আপু তো এখন একেবারে ম্যাডাম হয়ে গেলো! জামাইর নাম নিচ্ছো না তো?”
স্নেহা একটু কান্না মুখ করে বলে,
— “তোকে ছাড়া ভার্সিটির দিনগুলো একদম শুন্য লাগবে রে আয়াত…”
আয়াত চোখে পানি এনে জড়িয়ে ধরে স্নেহাকে।
বাবা ইকবাল সাহেব, মা হাজিরা ইসলাম, বোন মিরা, সবাই দাঁড়িয়ে, মুখে হাসি কিন্তু চোখে জল।
আয়াত মা'কে জড়িয়ে ধরে বলে,
— “আম্মু, আমি না রোজ ফোন করব, ঠিক আছে?”
হাজিরা কাঁদতে কাঁদতে বলেন,
— “তোকে ছাড়া বাড়ি কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগবে রে আয়াত…”
🌌 রাতের গল্প — এক নতুন যাত্রার শুরু
বিয়ের রাত। আয়াত আর রায়হান এখন একসাথে, দু’জনের চোখে ক্লান্তি, আবেগ, আর ভালোবাসা।
আয়াত বলল,
—তুমি জানো? এই দিনের জন্য কত অপেক্ষা করেছি...!!
রায়হান আয়াতের হাতটা ধরে হাসল,
— “তোর চোখে চোখ রেখে বলছি, আয়াত — এই জীবনে তোকে ছাড়া আর কাউকে আমি কখনো ভাবিনি। তুই আমার সবকিছু।”
একটুখানি নির্জনতা, কিছু নিঃশব্দ অনুভব, আর নরম আলোর মাঝে…
একটা নতুন গল্পের শুরু হল — ভালোবাসার, বন্ধুত্বের, দায়িত্বের।
“আজ থেকে দু’জনের জীবন এক হল — এক ছাদের নিচে, এক হৃদয়ে, চিরজীবনের জন্য” ❤️🌙
চলবে.......
2 weeks ago | [YT] | 1
View 0 replies
Fairy Of Novel
প্রণয়ের কথা– পর্ব ৩৭ !
লেখিকা: মারজিয়া আক্তার
— গায়ে হলুদ
সকালবেলা থেকেই আয়াতদের বাড়ির উঠোনে যেন এক অন্যরকম উৎসবের ঘ্রাণ। সূর্যটা আজ একটু বেশিই হাসছে, হাওয়া আসছে হলুদ রঙের গান নিয়ে। সকাল থেকেই ব্যস্ততা, রান্নার গন্ধ, ফুলের সৌরভ, আর মাঝে মাঝে আয়াতের লাজুক হাসি — সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত মায়া জমেছে যেন।
আয়াত আজ হালকা হলুদ জামদানি পরে। চুলে বেণি করে বাঁধা গাঁদা ফুলের মালা, মুখে হালকা মেকআপ, ঠোঁটে একটা মিষ্টি গোলাপি ছোঁয়া। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখে, মনে মনে ভাবে —
“এই আমি... আজ সত্যিই কারো হবো…”
হঠাৎ পেছন থেকে মিরা এসে বলে,
— “আপু...তুমি আজ পরীর মতো লাগতেছো।”
আয়াত হেসে বোনকে কোলে টেনে নেয়।
দুপুরের আয়োজন শুরু...
একটু পরেই উঠোনে প্রবেশ করল গানে গানে বান্ধবীরা — ইশা, স্নেহা, রিয়া, ফিহা, সামিয়া, মারিয়া, রিফাত আর আরও অনেকে। হাতে ফুলের তোড়া, মাথায় ফুলের টায়রা, ঠোঁটে হাসি, চোখে জল।
ইশা বলল,
— “আজ আমাদের প্রিন্সেসের হলুদ! সব কান্না থামিয়ে আজ শুধু হাসবি আয়াত!”
স্নেহা বলে,
— “কাল তুই ওর হবির কাছে যাবি, তাই আজ তোর সাথে শেষ পাগলামি করব!”
সামিয়া আয়াতকে জড়িয়ে ধরে বলে,
— “আজ আয়াত আমার ছোট বোন না, আমার গর্ব।”
গায়ে হলুদের মূল পর্ব
এক এক করে সবাই আয়াতের গায়ে হলুদ লাগাচ্ছে। প্রথমে মা, তারপর বাবা, তারপর একে একে সবাই। আয়াতের চোখে একটু জল চলে আসে যখন সে দেখে, তার ফুফু যিনি বিধবা, তিনিও তাকে কাঁপা হাতে হলুদ মাখাচ্ছেন, আর বলছেন —
— “তুই সুখে থাক আয়াত... সুখে থাক…”
স্নেহা হঠাৎ আয়াতের কানে ফিসফিস করে বলে,
— “রায়হানের ভিডিও আসবে রে! এখন একটু লাজুক হয়ে আয়!”
সবাই চিৎকার করে ওঠে – “আয়াত... রায়হান ভাইয়া আসছে!!”
রায়হান তখন অন্যপাশে, তার নিজের গায়ে হলুদের মাঝেও এক কোণে দাঁড়িয়ে আয়াতের ছবি দেখছে। ঠিক তখনই ফোনটা কাঁপে। ভিডিও কল। ওপাশে আয়াত, হাসছে, গায়ে হলুদ মেখে বসে আছে।
রায়হান একটু চুপ করে থেকে বলল,
— “আজ তোকে দেখে কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেললাম…”
আয়াত চোখ নামিয়ে ফিসফিস করে বলে,
— “আমিও…”
পাশে থাকা জুবায়ের হেসে বলে,
— “দুইজনে এভাবে তাকায় থাকলে ভিডিও বন্ধ করে দিবো ভাইয়া!”
ডান্স, মজার মুহূর্ত আর আবেগ
রিয়া আর সামিয়া আয়াতকে তুলে নাচিয়ে দিলো। গানে গানে সবাই একসাথে —
“গায়ে হলুদের এই সন্ধ্যা, মনে রাখিস আয়াত... কাল তুই রায়হানের হবির ঘরনী!”
রিফাত আর ইশা একসাথে আয়াতের জন্য একটি ভিডিও তৈরি করেছে — কলেজের দিন, বন্ধুত্বের মূহূর্ত, রায়হানের সাথে স্মৃতি — আয়াতের চোখে জল চলে আসে, সবাই বলে,
— “আজ কান্না না, আয়াত!”
স্নেহা বলল,
— “কালকে রায়হান তোকে দেখে আবার প্রেমে পড়ে যাবে!”
আয়াত একটু হেসে বলে,
— “ও তো এখনও পড়ে আছে…”
রাতের শেষ মুহূর্ত
সকলের হাসি, নাচ, কেক কাটা, হলুদের রঙে লেপটে থাকা সন্ধ্যার শেষ দিকে আয়াত একা উঠে যায় ছাদে। চাঁদ উঁকি দিচ্ছে। আয়াত আকাশের দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে বলে —
“আল্লাহ… আমার রায়হানকে আমার জন্য রাখো… আমি তো শুধু ওর হতে চেয়েছিলাম।”
ঠিক তখনই পেছনে স্নেহা এসে বলে,
— “তোদের দুজনকে আল্লাহ এক করেছেন আয়াত, তোদের কিছু হবে না।”
আয়াত হাসে, চোখে জল...
— “আমি জানি, ও আমায় অনেক ভালোবাসে….
চলবে....
2 weeks ago | [YT] | 1
View 0 replies
Fairy Of Novel
প্রণয়ের কথা– পর্ব ৩৬!
লেখিকা: মারজিয়া আক্তার
রাত তখন ১১টা পেরিয়ে গেছে। আয়াতের ঘর আজ যেন আলোয় ভরা। খাটের ওপর রঙ-বেরঙের কাজ করা মেহেদি কাপড়, ফর্সা মুখে হালকা ক্লান্তি, কিন্তু তার চোখে খেলা করছে এক অন্যরকম আলোর ছোঁয়া।
ঘরের একপাশে বসে আছে স্নেহা, ইশা, সামিয়া, ফিহা, রিয়া, মারিয়া – সবাই আজ যেন আয়াতকে ঘিরেই এক অন্যরকম রঙে রাঙিয়ে তুলেছে। কেউ মেহেদির ডিজাইন বাছছে, কেউ আয়াতের হাত ধরে বলছে – “তোর বিয়ের ঘ্রাণটা পড়েই গ্যাছে আয়াত!”
স্নেহা আয়াতের পাশে এসে ফিসফিস করে বলল,
— “তোর রায়হান তো আজ রাতে ফোনেই বলল, ‘কালকের জন্য তোকে সাজিয়ে তুলব!’”
আয়াত একটু লজ্জা পেয়ে বলে,
— “প্লিজ তোরা চুপ কর না…”
সবাই একসাথে হেসে উঠে।
রাতে আয়াত ঘুমাতে পারল না। একের পর এক স্মৃতি ভেসে আসছে — কলেজের প্রথম দিন, রায়হানের রাগ, অভিমান, কাছাকাছি আসা, আর অবশেষে পারিবারিক রাজি হওয়া। আয়াত জানে, এখন থেকে তার জীবনের পথচলা নতুনভাবে শুরু হবে।
📍১০ আগস্ট — মেহেদি নাইট
বিকেল থেকেই বাড়িতে সাজসজ্জার ধুম। হলুদ-সবুজ থিমে সাজানো হয়েছে উঠোন, বাতির ঝলকানিতে যেন একেকটা তারা ঝরে পড়ছে। আয়াতের মাথায় গাঁদা ফুলের মালা, হাতে কাজ করা খয়েরি ডিজাইন। আজকের আয়াত যেন স্বপ্নের রাজকুমারী।
গান চলছে, মেয়েরা নাচছে, আয়াতের চাচাতো বোনেরা, বান্ধবীরা একসাথে বলছে –
— “এই আয়াতের তো পুরা রং লাগছে আজ! রায়হান দেখলে চোখ আটকে যাবে!”
স্নেহা বলল,
— “রায়হান ভাইয়া তো আসবেই না। ওর তো কাল গায়ে হলুদ। তবে শুনেছি, সামিয়া আপু ভিডিও কল দিবে ওকে।”
হঠাৎ ফোন বেজে উঠল। ভিডিও কল — রায়হান! আয়াত একটু অবাক হলেও ফোনটা তুলে নেয়। ওপাশে রায়হান পাঞ্জাবিতে সেজে বলল,
— “তুই এত সুন্দর লাগছিস কেন? কাল আমাকে হারিয়ে দিবি নাকি?”
আয়াত লাজুক হাসি দিয়ে বলে,
— “তুমি কাল দেখো, আজ শুধু ট্রেলার!”
রায়হান একটু চুপ করে থেকে বলে,
— “এই হাসিটাই আমার জীবন হয়ে গেছে আয়াত… কাল তোকে দেখে আবার নতুন করে ভালোবেসে ফেলব।”
সকলের চোখে জল, হাসির মাঝে লুকানো এক গা ছমছমে আবেগ।
রাত বাড়ে… গান থামে না, আয়াতের হাতের মেহেদি রাঙা হতে থাকে রায়হানের নামে। বোনেরা হাতে লেখা নাম খুঁজে বের করতে বলছে সবাইকে।
ইশা বলল,
— “যদি রায়হান ভাইয়া কাল নাম না খুঁজে পায়, তাহলে আয়াতকে কিছু চাইতে হবে!”
আয়াত হেসে বলে,
— “আমি চাইব না... ওর চোখেই আছে আমার জন্য সব উত্তর!”
আরেক প্রান্তে রায়হান একা বসে আয়াতের ছবি দেখছে ফোনে, তার চোখে আবেগ, অপেক্ষা… আর ভালোবাসা।
"মেহেদির এই রাত যেন প্রেমের এক অদৃশ্য কবিতা… যেখানে আয়াত আর রায়হান দুজনই আলাদা ঘরে থেকেও একে অপরের অস্তিত্বে জড়িয়ে আছে, নিঃশব্দে, নিঃশর্তে।"
চলবে......
2 weeks ago | [YT] | 2
View 2 replies
Fairy Of Novel
প্রণয়ের কথা– পর্ব ৩৫!
লেখিকা: মারজিয়া আক্তার
ঘড়ির কাঁটা তখন ঠিক ৯টা ১৭ মিনিট ছুঁই ছুঁই।
রায়হান আয়াতদের বাড়ি থেকে ফেরার পর একাই বসে ছিল, মনের মধ্যে চলছিল হাজারো চিন্তার স্রোত। আনমনে সে কখনো হেসেছে, কখনো ভাবনার ভারে চুপ করে থেকেছে।
আজ তার ভেতরে যে আনন্দ—সেটা কি কেউ বোঝে?
পকেট থেকে ফোনটা বের করল। “Belifool” নামে সেভ করা নাম্বারে কল করল সে।
কিছুক্ষণ পর কল রিসিভ করল আয়াত।
নরম, কোমল কণ্ঠে আয়াত বলল,
— “আসসালামু আলাইকুম, স্যার?”
রায়হান অভিমানী গলায় জবাব দিল,
— “ওয়ালাইকুম আসসালাম... কল দিসনি কেনো? ভুলে গেছিস?”
আয়াত হেসে ঠাট্টা করল,
— “আমি ভাবলাম বউ পাবে বলে খুশিতে অজ্ঞান হয়ে গেছো, তাই আর ডিস্টার্ব করিনি!”
রায়হান একদম গম্ভীরভাবে বলল,
— “আয়াত... তুই কি আমায় পেয়ে খুশি?”
আয়াত এবার শান্ত গলায় বলল,
— “এখনো পাইনি তো!”
রায়হান আবার প্রশ্ন করল,
— “আমায় চাস তুই?”
আয়াত নিঃসংকোচে বলল,
— “তোমায় চাই বলেই তো এত বছর কারো হইনি…”
রায়হান মুচকি হেসে বলল,
— “কাল বেরোবি?”
আয়াত কৌতূহলী সুরে বলল,
— “কোথায়?”
রায়হান মজা করে বলল,
— “বিয়ে কি সেলোয়ার কামিজ পরে করবি?”
আয়াত চোখ গড়িয়ে বলল,
— “না তো!”
রায়হান:
— “তুই এখনো অবুঝ!”
আয়াত মিষ্টি সুরে বলল,
— “বুঝানোর জন্য তুমি তো আছো না!”
রায়হান একটু চুপ করে বলল,
— “আমি না থাকলে?”
আয়াত থেমে গলা নামিয়ে বলল,
— “তবে এই অবুঝ আমিও থাকবো না…”
রায়হান আবেগে ভেসে বলল,
— “হয়েছে… আমিও থাকবো, তুইও থাকবি! ওকে?”
আয়াত ধীরে বলল,
— “হ্যাঁ… সারাজীবন!”
রায়হান:
— “কাল শপিংয়ে যাবি, ২:৩০ টার দিকে রেডি থাকিস!”
আয়াত:
— “আচ্ছা!”
রায়হান:
— “আমার সাথে জুবায়ের আসবে। তুই ইশাকে নিয়ে আসিস।”
আয়াত:
— “ঠিক আছে!”
রায়হান এবার একটুখানি দুষ্টুমি করে বলল,
— “এই... কিছুদিন নিকের যত্ন নে, বিয়ের পর থেকে তোর সব দায়িত্ব আমার। উম... তুই তো পুরোটা আমার জান!”
এ কথা বলেই কল কেটে দিলো রায়হান।
আয়াত লাজুক একটা হাসি দিলো, বুকের ভেতর অজানা শিহরণ…
পরদিন সকাল...
আয়াত ঘুম থেকে উঠে দেখল, ঘড়িতে বাজে ১০:২৬ AM!
তাড়াতাড়ি বিছানা ছেড়ে মোবাইল হাতে নিলো—রায়হানের অনেকগুলো মেসেজ!
প্রথমটায় লেখা:
“Good Morning ma’am 🌞”
সব মেসেজ পড়ে আয়াত লিখল:
— “Sorry for late reply… মাত্র ঘুম থেকে উঠিলাম!”
রায়হান সাথে সাথেই রিপ্লাই দিলো,
— “তাহলে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে কল দিও…”
৩০ মিনিট পর রায়হানের ফোন বেজে উঠলো। রিংটোন:
“যদি তোমার হাতটা ধরি আর কথার মায়ায় পড়ি, হবে কি তুমি কী আমার…?”
(রায়হান কালকেই সেট করেছিল)
কল রিসিভ করেই রায়হান গাইতে শুরু করল 🎶
— “শোন না রূপসী তুমি যে শ্রেয়সী, কী ভীষণ উদাসী প্রেয়সী...
জীবনের গলিতে এ গানের কলিতে চাইছি বলিতে ভালোবাসি…”
গান শেষ হতেই আয়াত হেসে বলল,
— “ওরে আমার সিঙ্গার রে!”
রায়হান হেসে বলল,
— “বিকাল ২:৩০ টায় বাসার সামনে থাকিস।”
আয়াত:
— “আচ্ছা!”
রায়হান:
— “কি কিনবি?”
আয়াত:
— “দেখা যাক!”
রায়হান:
— “আচ্ছা রাখি, এখন অনেক কাজ… সব এরেঞ্জ করতে হবে!”
আয়াত একটু চুপ করে তারপর মৃদু কণ্ঠে বলল,
— “শোন রায়হান…”
— “হুম?”
— “I need you, dear… I love you.”
বলেই কল কেটে দিলো আয়াত।
রায়হান ফোন হাতে নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে হাসে—একটা মেয়ে কীভাবে এত সহজে তার প্রাণটাকে ছুঁয়ে যায়!
বিকাল ৩টা…
আয়াত হঠাৎ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ৩টা বাজতে চলেছে!
সে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে তাদের মেইন গেটের দিকে দৌড়ায়।
গেটে পৌঁছেই দেখে, ব্রাউন টি-শার্ট পরা একটা ছেলে বাইকে বসে মোবাইল দেখছে।
— “রায়হান?”
রায়হান ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে হেসে বলল,
— “এসেছেন, মিস? এবার উঠুন!”
আয়াত হেসে বলল,
— “জুবায়ের আসেনি?”
রায়হান বলল,
— “না, আজ আমরা দুজনই যাবো! গাড়িতে উঠো!”
আয়াত আজ একটু বেশি ক্লোজ হয়েই বসে রায়হানের পাশে।
শপিং...
তারা ঢুকল একটা বড় শাড়ির দোকানে।
রায়হান আয়াতকে কয়েকটা শাড়ি দেখিয়ে বলল,
— “কোনটা নিবি?”
আয়াত তাকিয়ে বলল,
— “সবই তো সুন্দর!”
রায়হান হেসে বলল,
— “সব নিবি? তুই চাইলে নেব!”
আয়াত না না করে একটা মেরুন রঙের শাড়ি বেছে নিলো।
রায়হান মুগ্ধ হয়ে বলল,
— “ভীষণ মানাবে তোকে…”
তারা পুরো মার্কেট ঘুরে বিয়ের জন্য A-Z সবকিছু কিনলো।
আয়াতের সঙ্গে ম্যাচ করে রায়হান কিনলো পাঞ্জাবি, স্যুট।
শপিং শেষে দুজনেই ক্লান্ত।
রায়হান ড্রাইভার আঙ্কেলকে কল করল—সব প্যাকেট গাড়িতে উঠিয়ে দিলো।
রায়হান আয়াতকে জিজ্ঞেস করল,
— “কি খাবি?”
আয়াত বলল,
— “বিরিয়ানি!”
তারা গেল একটা রেস্টুরেন্টে। বিরিয়ানি খেলো, একসাথে, শান্তিতে।
সব শেষে রায়হান আয়াতকে নামিয়ে দিয়ে বলল,
— “কিছু লাগলে বলিস… আর কল দিস!”
আয়াত মাথা নেড়ে সম্মতি দিলো।
আর রায়হান চোখে ভরা ভালোবাসা নিয়ে তাকিয়ে থাকলো তার সেই Belifool এর দিকে…
চলবে......
2 weeks ago | [YT] | 2
View 0 replies
Load more