কলেজ থেকে ফেরার পরও আয়াতের মনে রয়ে গেল আজকের দিনের প্রতিটি মুহূর্ত। বন্ধুদের হাসি, রায়হানের চুপচাপ থাকা, আর মাঝে মাঝে সেই দৃষ্টির চুপিচুপি ছোঁয়া—সবকিছু যেন তার হৃদয়ের ভেতর গেঁথে রইল গভীরভাবে।
আর রায়হান? সে আজ অনেক কিছু ভাবছিল। আখির মুখে আয়াতের প্রশংসা শুনে মনে হচ্ছিল, যেন নিজের অজান্তেই সে আরেকটু কাছাকাছি চলে এসেছে তার স্বপ্নের মেয়েটির। কিন্তু এখনও পরিবারকে কিছু বলেনি। এমনকি আয়াতকে ভালোবাসার কথাটাও... না, এখনো না। তার মনে দ্বিধা—প্রথমে কী করবে? ভালোবাসার স্বীকারোক্তি নাকি পরিবারকে রাজি করানো?
এইসবের মাঝেই আরেকজনের উপস্থিতি ধীরে ধীরে ছায়া ফেলছে তাদের সম্পর্কের ওপর।
শুভ। একটা সময় আয়াতকে একপাক্ষিকভাবে ভালোবেসে বসেছিল ছেলেটি। তখন আয়াত বুঝিয়ে দিয়েছিল—"ভালোবাসা হয় সম্মতির, জোরের নয়।" শুভ থেমে যায়, কিন্তু আজকাল তার আচরণে যেন কোথাও একটা অপূর্ণতা, একরাশ অপমান আর একচিমটি প্রতিশোধের ছায়া খেলা করছে।
একদিন ক্লাস শেষে করিডোরে আয়াতকে একা পেয়ে বলে ওঠে— "তুমি জানো তো? কারো খুব প্রিয় হয়ে উঠলে, হারানোর ভয়টা মানুষ নিজেই তৈরি করে ফেলে..."
আয়াত চমকে তাকায়। ভয় নয়, বিরক্তি নয়, শুধু একটা অস্বস্তিকর শীতলতা বয়ে যায় তার শরীর জুড়ে। সে শান্ত স্বরে বলে, "তুমি আমাকে সম্মান দিলে, আমি সেটাকে শ্রদ্ধা করব। আর যদি কেউ আমার সম্মান নিয়ে খেলা করতে চায়, আমি থেমে থাকি না।"
শুভ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে আয়াতের চোখে, তারপর চলে যায়। সেই ছায়া যেন ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায় আলোয়।
এদিকে রায়হানের বড় বোন, যিনি তার স্বামীর বিদেশে থাকায় ভাইয়ের বাসাতেই থাকেন, বুঝতে পারছেন কিছু একটা আছে ভাইয়ের চোখে-মুখে। সন্ধ্যায় রান্নাঘরে চা বানাতে বানাতে সামিয়া বলেন— "দেখছো না ভাবি, ভাইয়ার চোখে এখন যেন কিছু লুকানো আছে। ওই যে রোমান্টিক হিরোরা থাকে না, যারা কাউকে ভালোবাসে কিন্তু কাউকে জানায় না?"
রায়হানের বড় বোন হেসে বলেন, "তাই যদি হয়, তবে তোমরা দুজনেই প্রমাণ চাওনি এখনো!"
সামিয়া ফিক করে হেসে ওঠে— "তাইলে তো ভাবি মিলে প্ল্যান করতে হবে, আয়াত আপু আর ভাইয়াকে মিলানোর!"
সেই হাসির আড়ালে যেন একটা নতুন সেতুবন্ধ তৈরি হচ্ছিল… আর সেই সেতু ধরে রায়হান একদিন সাহস করে বলবে— “আম্মু, আমি একজনকে ভালোবাসি… আয়াতকে…”
কিন্তু সেই মুহূর্ত এখনো আসেনি। আগে তাকে আয়াতকে বলতে হবে, আগে প্রমাণ করতে হবে সে সত্যিই… শুধুই আয়াতের।
Fairy Of Novel
প্রণয়ের কথা– পর্ব ২৬!
লেখিকা: মারজিয়া আক্তার
কলেজ থেকে ফেরার পরও আয়াতের মনে রয়ে গেল আজকের দিনের প্রতিটি মুহূর্ত। বন্ধুদের হাসি, রায়হানের চুপচাপ থাকা, আর মাঝে মাঝে সেই দৃষ্টির চুপিচুপি ছোঁয়া—সবকিছু যেন তার হৃদয়ের ভেতর গেঁথে রইল গভীরভাবে।
আর রায়হান?
সে আজ অনেক কিছু ভাবছিল। আখির মুখে আয়াতের প্রশংসা শুনে মনে হচ্ছিল, যেন নিজের অজান্তেই সে আরেকটু কাছাকাছি চলে এসেছে তার স্বপ্নের মেয়েটির।
কিন্তু এখনও পরিবারকে কিছু বলেনি।
এমনকি আয়াতকে ভালোবাসার কথাটাও... না, এখনো না।
তার মনে দ্বিধা—প্রথমে কী করবে?
ভালোবাসার স্বীকারোক্তি নাকি পরিবারকে রাজি করানো?
এইসবের মাঝেই আরেকজনের উপস্থিতি ধীরে ধীরে ছায়া ফেলছে তাদের সম্পর্কের ওপর।
শুভ।
একটা সময় আয়াতকে একপাক্ষিকভাবে ভালোবেসে বসেছিল ছেলেটি।
তখন আয়াত বুঝিয়ে দিয়েছিল—"ভালোবাসা হয় সম্মতির, জোরের নয়।"
শুভ থেমে যায়, কিন্তু আজকাল তার আচরণে যেন কোথাও একটা অপূর্ণতা, একরাশ অপমান আর একচিমটি প্রতিশোধের ছায়া খেলা করছে।
একদিন ক্লাস শেষে করিডোরে আয়াতকে একা পেয়ে বলে ওঠে—
"তুমি জানো তো? কারো খুব প্রিয় হয়ে উঠলে, হারানোর ভয়টা মানুষ নিজেই তৈরি করে ফেলে..."
আয়াত চমকে তাকায়।
ভয় নয়, বিরক্তি নয়, শুধু একটা অস্বস্তিকর শীতলতা বয়ে যায় তার শরীর জুড়ে।
সে শান্ত স্বরে বলে,
"তুমি আমাকে সম্মান দিলে, আমি সেটাকে শ্রদ্ধা করব। আর যদি কেউ আমার সম্মান নিয়ে খেলা করতে চায়, আমি থেমে থাকি না।"
শুভ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে আয়াতের চোখে, তারপর চলে যায়।
সেই ছায়া যেন ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায় আলোয়।
এদিকে রায়হানের বড় বোন, যিনি তার স্বামীর বিদেশে থাকায় ভাইয়ের বাসাতেই থাকেন, বুঝতে পারছেন কিছু একটা আছে ভাইয়ের চোখে-মুখে।
সন্ধ্যায় রান্নাঘরে চা বানাতে বানাতে সামিয়া বলেন—
"দেখছো না ভাবি, ভাইয়ার চোখে এখন যেন কিছু লুকানো আছে। ওই যে রোমান্টিক হিরোরা থাকে না, যারা কাউকে ভালোবাসে কিন্তু কাউকে জানায় না?"
রায়হানের বড় বোন হেসে বলেন,
"তাই যদি হয়, তবে তোমরা দুজনেই প্রমাণ চাওনি এখনো!"
সামিয়া ফিক করে হেসে ওঠে—
"তাইলে তো ভাবি মিলে প্ল্যান করতে হবে, আয়াত আপু আর ভাইয়াকে মিলানোর!"
সেই হাসির আড়ালে যেন একটা নতুন সেতুবন্ধ তৈরি হচ্ছিল…
আর সেই সেতু ধরে রায়হান একদিন সাহস করে বলবে—
“আম্মু, আমি একজনকে ভালোবাসি… আয়াতকে…”
কিন্তু সেই মুহূর্ত এখনো আসেনি।
আগে তাকে আয়াতকে বলতে হবে,
আগে প্রমাণ করতে হবে সে সত্যিই… শুধুই আয়াতের।
চলবে.....
3 weeks ago | [YT] | 2