Fairy Of Novel

প্রণয়ের কথা– শেষ পর্ব
লেখিকা: মারজিয়া আক্তার ||

সকালের আলোটা আয়াতের গালে এসে পড়তেই চোখ মেলে তাকায়…
প্রথম ভোর, নতুন এক পরিচয় — “রায়হানের স্ত্রী”।

ঘুম জড়ানো কণ্ঠে আয়াত বলল,
— “তুমি না সারারাত ঘুমাওনি! দেখ, চোখ কেমন লাল হয়ে গেছে…”

রায়হান হেসে বলল,
— “তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কখন সকাল হলো, জানিই না…”

আয়াত লজ্জায় চোখ ফিরিয়ে নেয়।

শ্বশুরবাড়ির প্রথম সকাল

সামিয়া আপু আয়াতকে এক বাটি দুধসেমাই আর গুড়ের রসগোল্লা নিয়ে দেখতে আসে, পাশে রাকিব ভাইয়া (সামিয়ার স্বামী), যিনি কাল রাতেই বিদেশ থেকে ফিরেছেন শুধু রায়হানের বিয়েতে অংশ নিতে।

সামিয়া আয়াতকে জড়িয়ে ধরে বলে,
— “আমার ছোট ভাইয়ের বউ এতো সুন্দর হবে ভাবিনি… জানো, রায়হান তো কখনো কারো নামই নিতো না, তোমাকে নিয়ে ওর চোখে আলাদা এক আলো ছিল সবসময়!”

রাকিব ভাইয়া হেসে বলেন,
— “এই ঘরে ঢুকেই তোমার কদর বেড়ে গেল আয়াত! ভাইয়া এখন রোমান্টিক হিরো হয়ে গেছে!”

সবাই হেসে ওঠে।



আখি ছুটে এসে বলে,
— “ভাবি! ভাবি! চলো না, তোমাকে আমাদের ঘরদোর, ছাদ, বাগান সব দেখাতে হবে! নতুন করে!তোমার জন্য ভাইয়া সব নতুন করে গুছিয়েছে। আর হ্যাঁ, তুমি আমাকে বকা দিও না কিন্তু, আমি তো একটু দুষ্টু!”

আয়াত হেসে বলে,
— “তুমি যদি দুষ্টু হও, আমি তো আরো বেশি দুষ্ট ভাবি হবো!”

আখি মুখ গোমড়া করে বলে,
— “তবে আমি কিন্তু রায়হান ভাইয়াকে দিয়ে শাসন করাবো!”

রায়হান ঢুকে বলে,
— “আচ্ছা, আমি এখন কার ভাই, আর কার বর বুঝতেই পারছি না!”

আয়াত ও আখি একসাথে বলে,
— “দুজনের-ই!” — এবং তারপর তিনজনেই হেসে গড়িয়ে পড়ে।

রায়হানের বন্ধুরা এসে হাজির

জুবায়ের, রিফাত, লিমন, রাকিব, রাজু, সিয়াম সবাই এসে রায়হানকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা শুরু করল।

জুবায়ের বলে,
— “রায়হান ভাই, আজ তো ভাইই না, এখন আপনি পুরোদস্তুর হেনস্তা হবো… মানে জামাই!”

রায়হান বলল,
— “ভাই, আমার জীবন তো এখন আয়াতের হাতে… এখন যা বলবে তাই করবো!”

আয়াত পেছন থেকে বলে,
— “এইটা রেকর্ড করে রাখো… পরে যেন না বলে আমি জোর করি!”

সবাই হেসে ফেলে।



সন্ধ্যায় ছাদে হালকা বাতাসে আয়াত আর রায়হান একসাথে বসে।

রায়হান আয়াতের কানে কানে বলে,
— “শোন আয়াত, আমি ভাবছি আমাদের মেয়ের নাম রাখবো ‘জুই’। কেমন?”

আয়াত হেসে বলে,
— “তুমি তো আজ থেকে মেয়ের বাবাও হয়ে গেলে?”

রায়হান চুপি চুপি কপালে চুমু দিয়ে বলে,
— “তুমি তো আজ আমার ঘরের রানী, ভাবছি ভবিষ্যতও আজই রঙিন করে ফেলি।”

আয়াত একটু চুপ করে থেকে বলে,
— “জুই নামটা শুনতেই মিষ্টি… একদিন হবে নিশ্চয়ই।”



মিরা এসে বলে,
— “দুলাভাই, দুলাভাই! আপুকে যেন কাঁদাও না, বুঝেছো? কাঁদালে কিন্তু আমিই প্রথমে কান ধরাবো!”

রায়হান মাথা নত করে বলে,
— “আপনার আপা আমার জীবন… ওর চোখে জল আসার আগেই আমি সব মুছে ফেলবো, ছোট শালীজান!”

সবাই হাসে, মিরা আবার জড়িয়ে ধরে রায়হানকে।

শেষ রাতের মিষ্টি অনুভব

সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পর, রায়হান আর আয়াত ছাদে গিয়ে একসাথে বসে।
নিঃশব্দতা ভেঙে রায়হান বলে,
— “তোমাকে পেয়ে আমি যেন আবার নতুন করে জন্ম নিলাম আয়াত…”

আয়াত কাঁধে মাথা রেখে বলে,
— “তুমি তো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলে, ভালোবাসা হলে… এখন তুমি আমার জীবন।”

একটা ছোট্ট চুপচাপ মুহূর্ত… চাঁদের আলোয় জ্বলজ্বল করছে আয়াতের চুড়ির কাঁচ।

রায়হান হেসে বললো–তুমি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার বেলিফুল"

আয়াত দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো"তুমিও!


সমাপ্ত......

3 weeks ago | [YT] | 3