সন্ধ্যার কিছু আগেই পুরো অডিটোরিয়ামে আলো জ্বলে ওঠে। মঞ্চে আল কুরআনের আয়াত তিলাওয়াতের জন্য প্রস্তুতি চলছে। ছাত্র-ছাত্রীরা ধীরে ধীরে আসছে। একপাশে সাজানো খেজুর, শরবত, নানা রকম ইফতারের আয়োজন। আয়াত আজ নীল সালোয়ার কামিজ পরে এসেছে। মুখে হালকা মেকআপ, চোখে কাজল। ইশা বলে ওঠে, — “তুই কি জানিস আজ কত সুন্দর লাগছিস?” আয়াত একটু হেসে বলে, — “আজ তো ইফতার মাহফিল... সাজলে কী হবে?” — “রায়হান আসছে তো, এতেই সব যুক্তি শেষ।”
রায়হান তখনই দরজা দিয়ে ঢোকে। সাদা পাঞ্জাবি, মাথায় টুপি, চোখে প্রশান্তি। জুবায়ের বলল, — “ভাই, আয়াতকে দেখে একবার বল—তুই ঠিক কতটা ভালোবাসিস।” রায়হান শুধু চোখ নামিয়ে একটানা তাকিয়ে রইল আয়াতের দিকে।
মঞ্চে প্রথমে হামদ পরিবেশন করে আয়াত। তার কণ্ঠে গেয়ে ওঠে: “আল্লাহর দয়া যার অন্তরে বাজে, সে কখনো একা হয় না...”
সবাই নিস্তব্ধ হয়ে শুনছে। রায়হানের চোখ যেন নড়ছেই না তার দিক থেকে। এরপর রায়হান স্টেজে উঠে সংক্ষিপ্ত দোয়া পাঠ করে। গলা স্বাভাবিক, কিন্তু তার শেষ কথাগুলো যেন আয়াতের দিকেই তাক করে বলা:
— “হে আল্লাহ, যাকে আমার হৃদয়ে রেখেছো, তাকে ভালো রেখো। সে যেন আমার আগে জান্নাতে পৌঁছায়, আর যদি ইচ্ছা করো... একসাথেই রাখো আমাদের।”
এই কথায় অডিটোরিয়াম নিঃশব্দ। আয়াত তাকিয়ে থাকে মঞ্চের দিকে, চোখে জল জমে ওঠে।
ইফতারের সময় রায়হান আয়াতের দিকে প্লেট এগিয়ে দেয়— — “তুই খেজুর খা আগে। রোজা ভাঙবি না তো?” আয়াত হাসে। — “তোমার দোয়াটা শুনে আমি অনেকক্ষণ চুপ ছিলাম।” — “চুপ থাকিস না। একদিন তুইই বলবি—যা আমি বলার সাহস পাই না।” — “কখনও সাহস করে বলবি?” — “যেদিন তুই বলবি, আজ আর লুকাবি না।”
ইফতার শেষে সবাই ফ্লোরে বসে দোয়া পড়ে। রায়হান ও আয়াত পাশাপাশি বসে, কেউ কিছু বলে না। কিন্তু তাদের দৃষ্টিতে যে অনুভব জমে আছে, সেটা পাশের সবাই অনুভব করতে পারে।
ইশা, স্নেহা আর জুবায়ের পাশে বসে থাকলেও তাদের যেন ব্যস্ততা নেই। ওরা শুধু তাকিয়ে থাকে সেই দুটো চোখে—যা কখনও প্রেম বলে না, তবুও প্রেমে ভরে থাকে।
রাত শেষে আয়াত ফোন হাতে নেয়। রায়হান মেসেজ করে— — “আজকের দোয়াটা কেমন লাগল?” — “সবচেয়ে বেশি আমি সেই লাইনটা অনুভব করেছিলাম… ‘যাকে আমার হৃদয়ে রেখেছো।’” — “তুই জানিস, সেটা তোর নাম ছাড়া আর কারো জন্য ছিল না।”
আয়াত এবার আর রিপ্লাই দেয় না। শুধু ডায়েরির পাতায় লিখে—
“ভালোবাসা মুখে নয়, সেই হাতে খেজুর ধরিয়ে দেয়, সেই দোয়ায় আমার নাম উচ্চারণ করে। আজ আমি নিশ্চিত—আমার হৃদয় ঠিক করেছে, আমার আল্লাহকেও বলে দিয়েছে— এই মানুষটাই আমার।”
Fairy Of Novel
প্রণয়ের কথা– পর্ব ১০!
লেখিকা: মারজিয়া আক্তার
কলেজের ইফতার মাহফিল।
সন্ধ্যার কিছু আগেই পুরো অডিটোরিয়ামে আলো জ্বলে ওঠে। মঞ্চে আল কুরআনের আয়াত তিলাওয়াতের জন্য প্রস্তুতি চলছে। ছাত্র-ছাত্রীরা ধীরে ধীরে আসছে। একপাশে সাজানো খেজুর, শরবত, নানা রকম ইফতারের আয়োজন।
আয়াত আজ নীল সালোয়ার কামিজ পরে এসেছে। মুখে হালকা মেকআপ, চোখে কাজল। ইশা বলে ওঠে,
— “তুই কি জানিস আজ কত সুন্দর লাগছিস?”
আয়াত একটু হেসে বলে,
— “আজ তো ইফতার মাহফিল... সাজলে কী হবে?”
— “রায়হান আসছে তো, এতেই সব যুক্তি শেষ।”
রায়হান তখনই দরজা দিয়ে ঢোকে।
সাদা পাঞ্জাবি, মাথায় টুপি, চোখে প্রশান্তি।
জুবায়ের বলল,
— “ভাই, আয়াতকে দেখে একবার বল—তুই ঠিক কতটা ভালোবাসিস।”
রায়হান শুধু চোখ নামিয়ে একটানা তাকিয়ে রইল আয়াতের দিকে।
মঞ্চে প্রথমে হামদ পরিবেশন করে আয়াত।
তার কণ্ঠে গেয়ে ওঠে:
“আল্লাহর দয়া যার অন্তরে বাজে, সে কখনো একা হয় না...”
সবাই নিস্তব্ধ হয়ে শুনছে। রায়হানের চোখ যেন নড়ছেই না তার দিক থেকে।
এরপর রায়হান স্টেজে উঠে সংক্ষিপ্ত দোয়া পাঠ করে। গলা স্বাভাবিক, কিন্তু তার শেষ কথাগুলো যেন আয়াতের দিকেই তাক করে বলা:
— “হে আল্লাহ, যাকে আমার হৃদয়ে রেখেছো, তাকে ভালো রেখো। সে যেন আমার আগে জান্নাতে পৌঁছায়, আর যদি ইচ্ছা করো... একসাথেই রাখো আমাদের।”
এই কথায় অডিটোরিয়াম নিঃশব্দ। আয়াত তাকিয়ে থাকে মঞ্চের দিকে, চোখে জল জমে ওঠে।
ইফতারের সময় রায়হান আয়াতের দিকে প্লেট এগিয়ে দেয়—
— “তুই খেজুর খা আগে। রোজা ভাঙবি না তো?”
আয়াত হাসে।
— “তোমার দোয়াটা শুনে আমি অনেকক্ষণ চুপ ছিলাম।”
— “চুপ থাকিস না। একদিন তুইই বলবি—যা আমি বলার সাহস পাই না।”
— “কখনও সাহস করে বলবি?”
— “যেদিন তুই বলবি, আজ আর লুকাবি না।”
ইফতার শেষে সবাই ফ্লোরে বসে দোয়া পড়ে।
রায়হান ও আয়াত পাশাপাশি বসে, কেউ কিছু বলে না। কিন্তু তাদের দৃষ্টিতে যে অনুভব জমে আছে, সেটা পাশের সবাই অনুভব করতে পারে।
ইশা, স্নেহা আর জুবায়ের পাশে বসে থাকলেও তাদের যেন ব্যস্ততা নেই।
ওরা শুধু তাকিয়ে থাকে সেই দুটো চোখে—যা কখনও প্রেম বলে না, তবুও প্রেমে ভরে থাকে।
রাত শেষে আয়াত ফোন হাতে নেয়।
রায়হান মেসেজ করে—
— “আজকের দোয়াটা কেমন লাগল?”
— “সবচেয়ে বেশি আমি সেই লাইনটা অনুভব করেছিলাম… ‘যাকে আমার হৃদয়ে রেখেছো।’”
— “তুই জানিস, সেটা তোর নাম ছাড়া আর কারো জন্য ছিল না।”
আয়াত এবার আর রিপ্লাই দেয় না।
শুধু ডায়েরির পাতায় লিখে—
“ভালোবাসা মুখে নয়,
সেই হাতে খেজুর ধরিয়ে দেয়,
সেই দোয়ায় আমার নাম উচ্চারণ করে।
আজ আমি নিশ্চিত—আমার হৃদয় ঠিক করেছে,
আমার আল্লাহকেও বলে দিয়েছে—
এই মানুষটাই আমার।”
চলবে...
1 month ago | [YT] | 1