— গায়ে হলুদ সকালবেলা থেকেই আয়াতদের বাড়ির উঠোনে যেন এক অন্যরকম উৎসবের ঘ্রাণ। সূর্যটা আজ একটু বেশিই হাসছে, হাওয়া আসছে হলুদ রঙের গান নিয়ে। সকাল থেকেই ব্যস্ততা, রান্নার গন্ধ, ফুলের সৌরভ, আর মাঝে মাঝে আয়াতের লাজুক হাসি — সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত মায়া জমেছে যেন।
আয়াত আজ হালকা হলুদ জামদানি পরে। চুলে বেণি করে বাঁধা গাঁদা ফুলের মালা, মুখে হালকা মেকআপ, ঠোঁটে একটা মিষ্টি গোলাপি ছোঁয়া। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখে, মনে মনে ভাবে — “এই আমি... আজ সত্যিই কারো হবো…”
হঠাৎ পেছন থেকে মিরা এসে বলে, — “আপু...তুমি আজ পরীর মতো লাগতেছো।” আয়াত হেসে বোনকে কোলে টেনে নেয়।
দুপুরের আয়োজন শুরু... একটু পরেই উঠোনে প্রবেশ করল গানে গানে বান্ধবীরা — ইশা, স্নেহা, রিয়া, ফিহা, সামিয়া, মারিয়া, রিফাত আর আরও অনেকে। হাতে ফুলের তোড়া, মাথায় ফুলের টায়রা, ঠোঁটে হাসি, চোখে জল।
ইশা বলল, — “আজ আমাদের প্রিন্সেসের হলুদ! সব কান্না থামিয়ে আজ শুধু হাসবি আয়াত!” স্নেহা বলে, — “কাল তুই ওর হবির কাছে যাবি, তাই আজ তোর সাথে শেষ পাগলামি করব!” সামিয়া আয়াতকে জড়িয়ে ধরে বলে, — “আজ আয়াত আমার ছোট বোন না, আমার গর্ব।”
গায়ে হলুদের মূল পর্ব এক এক করে সবাই আয়াতের গায়ে হলুদ লাগাচ্ছে। প্রথমে মা, তারপর বাবা, তারপর একে একে সবাই। আয়াতের চোখে একটু জল চলে আসে যখন সে দেখে, তার ফুফু যিনি বিধবা, তিনিও তাকে কাঁপা হাতে হলুদ মাখাচ্ছেন, আর বলছেন — — “তুই সুখে থাক আয়াত... সুখে থাক…”
স্নেহা হঠাৎ আয়াতের কানে ফিসফিস করে বলে, — “রায়হানের ভিডিও আসবে রে! এখন একটু লাজুক হয়ে আয়!” সবাই চিৎকার করে ওঠে – “আয়াত... রায়হান ভাইয়া আসছে!!”
রায়হান তখন অন্যপাশে, তার নিজের গায়ে হলুদের মাঝেও এক কোণে দাঁড়িয়ে আয়াতের ছবি দেখছে। ঠিক তখনই ফোনটা কাঁপে। ভিডিও কল। ওপাশে আয়াত, হাসছে, গায়ে হলুদ মেখে বসে আছে। রায়হান একটু চুপ করে থেকে বলল, — “আজ তোকে দেখে কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেললাম…” আয়াত চোখ নামিয়ে ফিসফিস করে বলে, — “আমিও…”
পাশে থাকা জুবায়ের হেসে বলে, — “দুইজনে এভাবে তাকায় থাকলে ভিডিও বন্ধ করে দিবো ভাইয়া!”
ডান্স, মজার মুহূর্ত আর আবেগ রিয়া আর সামিয়া আয়াতকে তুলে নাচিয়ে দিলো। গানে গানে সবাই একসাথে — “গায়ে হলুদের এই সন্ধ্যা, মনে রাখিস আয়াত... কাল তুই রায়হানের হবির ঘরনী!”
রিফাত আর ইশা একসাথে আয়াতের জন্য একটি ভিডিও তৈরি করেছে — কলেজের দিন, বন্ধুত্বের মূহূর্ত, রায়হানের সাথে স্মৃতি — আয়াতের চোখে জল চলে আসে, সবাই বলে, — “আজ কান্না না, আয়াত!”
স্নেহা বলল, — “কালকে রায়হান তোকে দেখে আবার প্রেমে পড়ে যাবে!” আয়াত একটু হেসে বলে, — “ও তো এখনও পড়ে আছে…”
রাতের শেষ মুহূর্ত সকলের হাসি, নাচ, কেক কাটা, হলুদের রঙে লেপটে থাকা সন্ধ্যার শেষ দিকে আয়াত একা উঠে যায় ছাদে। চাঁদ উঁকি দিচ্ছে। আয়াত আকাশের দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে বলে — “আল্লাহ… আমার রায়হানকে আমার জন্য রাখো… আমি তো শুধু ওর হতে চেয়েছিলাম।”
ঠিক তখনই পেছনে স্নেহা এসে বলে, — “তোদের দুজনকে আল্লাহ এক করেছেন আয়াত, তোদের কিছু হবে না।” আয়াত হাসে, চোখে জল... — “আমি জানি, ও আমায় অনেক ভালোবাসে….
Fairy Of Novel
প্রণয়ের কথা– পর্ব ৩৭ !
লেখিকা: মারজিয়া আক্তার
— গায়ে হলুদ
সকালবেলা থেকেই আয়াতদের বাড়ির উঠোনে যেন এক অন্যরকম উৎসবের ঘ্রাণ। সূর্যটা আজ একটু বেশিই হাসছে, হাওয়া আসছে হলুদ রঙের গান নিয়ে। সকাল থেকেই ব্যস্ততা, রান্নার গন্ধ, ফুলের সৌরভ, আর মাঝে মাঝে আয়াতের লাজুক হাসি — সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত মায়া জমেছে যেন।
আয়াত আজ হালকা হলুদ জামদানি পরে। চুলে বেণি করে বাঁধা গাঁদা ফুলের মালা, মুখে হালকা মেকআপ, ঠোঁটে একটা মিষ্টি গোলাপি ছোঁয়া। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখে, মনে মনে ভাবে —
“এই আমি... আজ সত্যিই কারো হবো…”
হঠাৎ পেছন থেকে মিরা এসে বলে,
— “আপু...তুমি আজ পরীর মতো লাগতেছো।”
আয়াত হেসে বোনকে কোলে টেনে নেয়।
দুপুরের আয়োজন শুরু...
একটু পরেই উঠোনে প্রবেশ করল গানে গানে বান্ধবীরা — ইশা, স্নেহা, রিয়া, ফিহা, সামিয়া, মারিয়া, রিফাত আর আরও অনেকে। হাতে ফুলের তোড়া, মাথায় ফুলের টায়রা, ঠোঁটে হাসি, চোখে জল।
ইশা বলল,
— “আজ আমাদের প্রিন্সেসের হলুদ! সব কান্না থামিয়ে আজ শুধু হাসবি আয়াত!”
স্নেহা বলে,
— “কাল তুই ওর হবির কাছে যাবি, তাই আজ তোর সাথে শেষ পাগলামি করব!”
সামিয়া আয়াতকে জড়িয়ে ধরে বলে,
— “আজ আয়াত আমার ছোট বোন না, আমার গর্ব।”
গায়ে হলুদের মূল পর্ব
এক এক করে সবাই আয়াতের গায়ে হলুদ লাগাচ্ছে। প্রথমে মা, তারপর বাবা, তারপর একে একে সবাই। আয়াতের চোখে একটু জল চলে আসে যখন সে দেখে, তার ফুফু যিনি বিধবা, তিনিও তাকে কাঁপা হাতে হলুদ মাখাচ্ছেন, আর বলছেন —
— “তুই সুখে থাক আয়াত... সুখে থাক…”
স্নেহা হঠাৎ আয়াতের কানে ফিসফিস করে বলে,
— “রায়হানের ভিডিও আসবে রে! এখন একটু লাজুক হয়ে আয়!”
সবাই চিৎকার করে ওঠে – “আয়াত... রায়হান ভাইয়া আসছে!!”
রায়হান তখন অন্যপাশে, তার নিজের গায়ে হলুদের মাঝেও এক কোণে দাঁড়িয়ে আয়াতের ছবি দেখছে। ঠিক তখনই ফোনটা কাঁপে। ভিডিও কল। ওপাশে আয়াত, হাসছে, গায়ে হলুদ মেখে বসে আছে।
রায়হান একটু চুপ করে থেকে বলল,
— “আজ তোকে দেখে কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেললাম…”
আয়াত চোখ নামিয়ে ফিসফিস করে বলে,
— “আমিও…”
পাশে থাকা জুবায়ের হেসে বলে,
— “দুইজনে এভাবে তাকায় থাকলে ভিডিও বন্ধ করে দিবো ভাইয়া!”
ডান্স, মজার মুহূর্ত আর আবেগ
রিয়া আর সামিয়া আয়াতকে তুলে নাচিয়ে দিলো। গানে গানে সবাই একসাথে —
“গায়ে হলুদের এই সন্ধ্যা, মনে রাখিস আয়াত... কাল তুই রায়হানের হবির ঘরনী!”
রিফাত আর ইশা একসাথে আয়াতের জন্য একটি ভিডিও তৈরি করেছে — কলেজের দিন, বন্ধুত্বের মূহূর্ত, রায়হানের সাথে স্মৃতি — আয়াতের চোখে জল চলে আসে, সবাই বলে,
— “আজ কান্না না, আয়াত!”
স্নেহা বলল,
— “কালকে রায়হান তোকে দেখে আবার প্রেমে পড়ে যাবে!”
আয়াত একটু হেসে বলে,
— “ও তো এখনও পড়ে আছে…”
রাতের শেষ মুহূর্ত
সকলের হাসি, নাচ, কেক কাটা, হলুদের রঙে লেপটে থাকা সন্ধ্যার শেষ দিকে আয়াত একা উঠে যায় ছাদে। চাঁদ উঁকি দিচ্ছে। আয়াত আকাশের দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে বলে —
“আল্লাহ… আমার রায়হানকে আমার জন্য রাখো… আমি তো শুধু ওর হতে চেয়েছিলাম।”
ঠিক তখনই পেছনে স্নেহা এসে বলে,
— “তোদের দুজনকে আল্লাহ এক করেছেন আয়াত, তোদের কিছু হবে না।”
আয়াত হাসে, চোখে জল...
— “আমি জানি, ও আমায় অনেক ভালোবাসে….
চলবে....
3 weeks ago | [YT] | 1