ঘড়ির কাঁটা তখন ঠিক ৯টা ১৭ মিনিট ছুঁই ছুঁই। রায়হান আয়াতদের বাড়ি থেকে ফেরার পর একাই বসে ছিল, মনের মধ্যে চলছিল হাজারো চিন্তার স্রোত। আনমনে সে কখনো হেসেছে, কখনো ভাবনার ভারে চুপ করে থেকেছে।
আজ তার ভেতরে যে আনন্দ—সেটা কি কেউ বোঝে?
পকেট থেকে ফোনটা বের করল। “Belifool” নামে সেভ করা নাম্বারে কল করল সে।
রায়হান: — “আচ্ছা রাখি, এখন অনেক কাজ… সব এরেঞ্জ করতে হবে!”
আয়াত একটু চুপ করে তারপর মৃদু কণ্ঠে বলল, — “শোন রায়হান…”
— “হুম?” — “I need you, dear… I love you.”
বলেই কল কেটে দিলো আয়াত।
রায়হান ফোন হাতে নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে হাসে—একটা মেয়ে কীভাবে এত সহজে তার প্রাণটাকে ছুঁয়ে যায়!
বিকাল ৩টা…
আয়াত হঠাৎ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ৩টা বাজতে চলেছে! সে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে তাদের মেইন গেটের দিকে দৌড়ায়। গেটে পৌঁছেই দেখে, ব্রাউন টি-শার্ট পরা একটা ছেলে বাইকে বসে মোবাইল দেখছে।
Fairy Of Novel
প্রণয়ের কথা– পর্ব ৩৫!
লেখিকা: মারজিয়া আক্তার
ঘড়ির কাঁটা তখন ঠিক ৯টা ১৭ মিনিট ছুঁই ছুঁই।
রায়হান আয়াতদের বাড়ি থেকে ফেরার পর একাই বসে ছিল, মনের মধ্যে চলছিল হাজারো চিন্তার স্রোত। আনমনে সে কখনো হেসেছে, কখনো ভাবনার ভারে চুপ করে থেকেছে।
আজ তার ভেতরে যে আনন্দ—সেটা কি কেউ বোঝে?
পকেট থেকে ফোনটা বের করল। “Belifool” নামে সেভ করা নাম্বারে কল করল সে।
কিছুক্ষণ পর কল রিসিভ করল আয়াত।
নরম, কোমল কণ্ঠে আয়াত বলল,
— “আসসালামু আলাইকুম, স্যার?”
রায়হান অভিমানী গলায় জবাব দিল,
— “ওয়ালাইকুম আসসালাম... কল দিসনি কেনো? ভুলে গেছিস?”
আয়াত হেসে ঠাট্টা করল,
— “আমি ভাবলাম বউ পাবে বলে খুশিতে অজ্ঞান হয়ে গেছো, তাই আর ডিস্টার্ব করিনি!”
রায়হান একদম গম্ভীরভাবে বলল,
— “আয়াত... তুই কি আমায় পেয়ে খুশি?”
আয়াত এবার শান্ত গলায় বলল,
— “এখনো পাইনি তো!”
রায়হান আবার প্রশ্ন করল,
— “আমায় চাস তুই?”
আয়াত নিঃসংকোচে বলল,
— “তোমায় চাই বলেই তো এত বছর কারো হইনি…”
রায়হান মুচকি হেসে বলল,
— “কাল বেরোবি?”
আয়াত কৌতূহলী সুরে বলল,
— “কোথায়?”
রায়হান মজা করে বলল,
— “বিয়ে কি সেলোয়ার কামিজ পরে করবি?”
আয়াত চোখ গড়িয়ে বলল,
— “না তো!”
রায়হান:
— “তুই এখনো অবুঝ!”
আয়াত মিষ্টি সুরে বলল,
— “বুঝানোর জন্য তুমি তো আছো না!”
রায়হান একটু চুপ করে বলল,
— “আমি না থাকলে?”
আয়াত থেমে গলা নামিয়ে বলল,
— “তবে এই অবুঝ আমিও থাকবো না…”
রায়হান আবেগে ভেসে বলল,
— “হয়েছে… আমিও থাকবো, তুইও থাকবি! ওকে?”
আয়াত ধীরে বলল,
— “হ্যাঁ… সারাজীবন!”
রায়হান:
— “কাল শপিংয়ে যাবি, ২:৩০ টার দিকে রেডি থাকিস!”
আয়াত:
— “আচ্ছা!”
রায়হান:
— “আমার সাথে জুবায়ের আসবে। তুই ইশাকে নিয়ে আসিস।”
আয়াত:
— “ঠিক আছে!”
রায়হান এবার একটুখানি দুষ্টুমি করে বলল,
— “এই... কিছুদিন নিকের যত্ন নে, বিয়ের পর থেকে তোর সব দায়িত্ব আমার। উম... তুই তো পুরোটা আমার জান!”
এ কথা বলেই কল কেটে দিলো রায়হান।
আয়াত লাজুক একটা হাসি দিলো, বুকের ভেতর অজানা শিহরণ…
পরদিন সকাল...
আয়াত ঘুম থেকে উঠে দেখল, ঘড়িতে বাজে ১০:২৬ AM!
তাড়াতাড়ি বিছানা ছেড়ে মোবাইল হাতে নিলো—রায়হানের অনেকগুলো মেসেজ!
প্রথমটায় লেখা:
“Good Morning ma’am 🌞”
সব মেসেজ পড়ে আয়াত লিখল:
— “Sorry for late reply… মাত্র ঘুম থেকে উঠিলাম!”
রায়হান সাথে সাথেই রিপ্লাই দিলো,
— “তাহলে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে কল দিও…”
৩০ মিনিট পর রায়হানের ফোন বেজে উঠলো। রিংটোন:
“যদি তোমার হাতটা ধরি আর কথার মায়ায় পড়ি, হবে কি তুমি কী আমার…?”
(রায়হান কালকেই সেট করেছিল)
কল রিসিভ করেই রায়হান গাইতে শুরু করল 🎶
— “শোন না রূপসী তুমি যে শ্রেয়সী, কী ভীষণ উদাসী প্রেয়সী...
জীবনের গলিতে এ গানের কলিতে চাইছি বলিতে ভালোবাসি…”
গান শেষ হতেই আয়াত হেসে বলল,
— “ওরে আমার সিঙ্গার রে!”
রায়হান হেসে বলল,
— “বিকাল ২:৩০ টায় বাসার সামনে থাকিস।”
আয়াত:
— “আচ্ছা!”
রায়হান:
— “কি কিনবি?”
আয়াত:
— “দেখা যাক!”
রায়হান:
— “আচ্ছা রাখি, এখন অনেক কাজ… সব এরেঞ্জ করতে হবে!”
আয়াত একটু চুপ করে তারপর মৃদু কণ্ঠে বলল,
— “শোন রায়হান…”
— “হুম?”
— “I need you, dear… I love you.”
বলেই কল কেটে দিলো আয়াত।
রায়হান ফোন হাতে নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে হাসে—একটা মেয়ে কীভাবে এত সহজে তার প্রাণটাকে ছুঁয়ে যায়!
বিকাল ৩টা…
আয়াত হঠাৎ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ৩টা বাজতে চলেছে!
সে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে তাদের মেইন গেটের দিকে দৌড়ায়।
গেটে পৌঁছেই দেখে, ব্রাউন টি-শার্ট পরা একটা ছেলে বাইকে বসে মোবাইল দেখছে।
— “রায়হান?”
রায়হান ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে হেসে বলল,
— “এসেছেন, মিস? এবার উঠুন!”
আয়াত হেসে বলল,
— “জুবায়ের আসেনি?”
রায়হান বলল,
— “না, আজ আমরা দুজনই যাবো! গাড়িতে উঠো!”
আয়াত আজ একটু বেশি ক্লোজ হয়েই বসে রায়হানের পাশে।
শপিং...
তারা ঢুকল একটা বড় শাড়ির দোকানে।
রায়হান আয়াতকে কয়েকটা শাড়ি দেখিয়ে বলল,
— “কোনটা নিবি?”
আয়াত তাকিয়ে বলল,
— “সবই তো সুন্দর!”
রায়হান হেসে বলল,
— “সব নিবি? তুই চাইলে নেব!”
আয়াত না না করে একটা মেরুন রঙের শাড়ি বেছে নিলো।
রায়হান মুগ্ধ হয়ে বলল,
— “ভীষণ মানাবে তোকে…”
তারা পুরো মার্কেট ঘুরে বিয়ের জন্য A-Z সবকিছু কিনলো।
আয়াতের সঙ্গে ম্যাচ করে রায়হান কিনলো পাঞ্জাবি, স্যুট।
শপিং শেষে দুজনেই ক্লান্ত।
রায়হান ড্রাইভার আঙ্কেলকে কল করল—সব প্যাকেট গাড়িতে উঠিয়ে দিলো।
রায়হান আয়াতকে জিজ্ঞেস করল,
— “কি খাবি?”
আয়াত বলল,
— “বিরিয়ানি!”
তারা গেল একটা রেস্টুরেন্টে। বিরিয়ানি খেলো, একসাথে, শান্তিতে।
সব শেষে রায়হান আয়াতকে নামিয়ে দিয়ে বলল,
— “কিছু লাগলে বলিস… আর কল দিস!”
আয়াত মাথা নেড়ে সম্মতি দিলো।
আর রায়হান চোখে ভরা ভালোবাসা নিয়ে তাকিয়ে থাকলো তার সেই Belifool এর দিকে…
চলবে......
3 weeks ago | [YT] | 2