পাশের লেকের ধারে একটা ফুচকার দোকানে গিয়ে দাঁড়াল তারা। বিকেলের হাওয়া হালকা ঠান্ডা। লাল রোদের আলো আয়াতের মুখে পড়ছে। রায়হান চোখ সরিয়ে নিতে পারছে না। সে জানে, আজ কিছু না বলেও অনেক কিছু বলা হবে।
— “একটু টক ঝাল দিবেন?” — “দিবো আপু!” ফুচকা এসে গেলে আয়াত প্রথমটা মুখে দিল। দ্বিতীয়টা টক বেশি ছিল। গিলে ফেলতেই গলায় আটকে গেল।
— “কঁ কঁ খঁ খঁ... রা—রায়হান…” রায়হান সঙ্গে সঙ্গে তার হাত ধরে বলল, — “আয়াত! আয়াত! চোখ বন্ধ কর! চুপ করে থাক! পানি খা!”
সে সঙ্গে সঙ্গে পানি আনিয়ে গ্লাস তুলে দিল। আয়াতের চোখে জল এসে গেছে। এক হাতে মুখ চাপা দিয়ে বসে আছে।
রায়হান কাঁপা গলায় বলল, — “তুই কিছু হইলি না তো? বুকে লাগছে?” — “না, একটু ভয় পেয়েছিলাম।”
রায়হান তখন তার দিকে তাকিয়ে বলে, — “তুই আবার এরকম করলি না যেন... আমি কিন্তু সহ্য করতে পারব না।” আয়াত চোখ মুছতে মুছতে হেসে বলল, — “তোমার এত ভয় লাগল?” — “আমি ভয় পাই না। আমি শুধু তোকে কিছু হলে অসহায় হয়ে যাই।”
এই কথাটা শুনে আয়াত হঠাৎ থেমে যায়। কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর আয়াত বলল, — “তুমি তো এসব বলো না কখনো...” — “কারণ তুই না চাইলে আমি নিজেকে আটকে রাখি। কিন্তু আজ তুই কেঁদেছিলি... আমার সব বাধা ভেঙে গেল।”
হাওয়া বইছে, পাখিরা ডাকে। ফুচকার দোকানটা একপাশে। চারপাশে কোলাহল, কিন্তু দুজন যেন একটা নিজের জগতে।
আয়াত বলল, — “তুমি কি জানো রায়হান, কেউ যখন কোনো কিছু না চাইলেও পাশে থাকে, তখনই সে সবচেয়ে আপন হয়।” — “তুই কি বলতে চাস...” — “না কিছু না। সময় হলে বলব।”
রায়হান আর কিছু বলে না। তার চোখ বলছে, সে অনেক আগেই বুঝে গেছে।
তারা হেঁটে চলে আসে কলেজের সামনে। বিদায় নেওয়ার আগে আয়াত হালকা করে বলে, — “ধন্যবাদ আজকের ফুচকার জন্য। কিন্তু টকটা একটু কম হলে ভালো হতো।” রায়হান হেসে বলল, — “আগামীবার তুই বলবি কেমন হবে, আমি বানিয়ে আনব।”
সেদিন রাতে আয়াত তার ডায়েরিতে লেখে—
“ভালোবাসা মানেই গোলাপ, চকলেট না। ভালোবাসা মানেই ভয় পেলে কেউ ছুটে আসে, হাত ধরে বলে—‘আমি আছি’। আজ সেই ‘আমি’টাকে নতুন করে অনুভব করলাম। আমার ভালোবাসা, যার এখনো নাম দেইনি… তবুও সে আমার।”
Fairy Of Novel
প্রণয়ের কথা– পর্ব ৬!
লেখিকা: মারজিয়া আক্তার
কলেজ ক্যাম্পাসে প্রেমের বাতাস ঘুরছে।
ভ্যালেন্টাইন উইকের মাঝামাঝি।
দুপুরের ক্লাস শেষে সবাই ব্যস্ত নিজের মতো করে।
কেউ গিফট খুঁজছে, কেউ লাল গোলাপ হাতে হাঁটছে।
আর আয়াত—সে জানে আজকের দিনটা “বিশেষ” হতে পারত… যদি কেউ সেটা বিশেষ করে তুলত।
আয়াতের মুখে লিপস্টিক নেই, চোখে শুধু কাজল, আর চুলটা খোঁপা করে বাঁধা—তবুও তাকে দেখে মনে হয়, সে যেন নির্ভার, অথচ ভিতরে ভিতরে কেমন যেন অস্থির।
ওদিকে রায়হানও কলেজে এসেছে আজ একটু দেরি করে।
জুবায়ের বলল,
— “আজ আয়াতকে কিছু দিবি না?”
রায়হান হেসে বলল,
— “সে জানে, আমি কী দিই আর কী দিই না... তবুও আজ একটু আলাদা কিছু করব ভাবছি।”
দুপুরে ক্লাস শেষে আয়াত নিচের গেট দিয়ে বেরোতে গেলে রায়হান তাকে ডাকল।
— “তুই যাবি কোথায়?”
— “বাসায়। কেন?”
— “চল, একটু ঘুরি।”
— “ঘুরবি? আজ?”
— “হ্যাঁ। তুই খালি বল, ফুচকা খাস?”
আয়াত হেসে বলল,
— “ভ্যালেন্টাইনে ফুচকা? রোমান্স কোথায়?”
— “আমার ভালোবাসা হল একটু টক, একটু ঝাল... যেমন তুই।”
পাশের লেকের ধারে একটা ফুচকার দোকানে গিয়ে দাঁড়াল তারা।
বিকেলের হাওয়া হালকা ঠান্ডা। লাল রোদের আলো আয়াতের মুখে পড়ছে।
রায়হান চোখ সরিয়ে নিতে পারছে না।
সে জানে, আজ কিছু না বলেও অনেক কিছু বলা হবে।
— “একটু টক ঝাল দিবেন?”
— “দিবো আপু!”
ফুচকা এসে গেলে আয়াত প্রথমটা মুখে দিল।
দ্বিতীয়টা টক বেশি ছিল। গিলে ফেলতেই গলায় আটকে গেল।
— “কঁ কঁ খঁ খঁ... রা—রায়হান…”
রায়হান সঙ্গে সঙ্গে তার হাত ধরে বলল,
— “আয়াত! আয়াত! চোখ বন্ধ কর! চুপ করে থাক! পানি খা!”
সে সঙ্গে সঙ্গে পানি আনিয়ে গ্লাস তুলে দিল।
আয়াতের চোখে জল এসে গেছে। এক হাতে মুখ চাপা দিয়ে বসে আছে।
রায়হান কাঁপা গলায় বলল,
— “তুই কিছু হইলি না তো? বুকে লাগছে?”
— “না, একটু ভয় পেয়েছিলাম।”
রায়হান তখন তার দিকে তাকিয়ে বলে,
— “তুই আবার এরকম করলি না যেন... আমি কিন্তু সহ্য করতে পারব না।”
আয়াত চোখ মুছতে মুছতে হেসে বলল,
— “তোমার এত ভয় লাগল?”
— “আমি ভয় পাই না। আমি শুধু তোকে কিছু হলে অসহায় হয়ে যাই।”
এই কথাটা শুনে আয়াত হঠাৎ থেমে যায়।
কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর আয়াত বলল,
— “তুমি তো এসব বলো না কখনো...”
— “কারণ তুই না চাইলে আমি নিজেকে আটকে রাখি।
কিন্তু আজ তুই কেঁদেছিলি... আমার সব বাধা ভেঙে গেল।”
হাওয়া বইছে, পাখিরা ডাকে।
ফুচকার দোকানটা একপাশে।
চারপাশে কোলাহল, কিন্তু দুজন যেন একটা নিজের জগতে।
আয়াত বলল,
— “তুমি কি জানো রায়হান, কেউ যখন কোনো কিছু না চাইলেও পাশে থাকে, তখনই সে সবচেয়ে আপন হয়।”
— “তুই কি বলতে চাস...”
— “না কিছু না। সময় হলে বলব।”
রায়হান আর কিছু বলে না।
তার চোখ বলছে, সে অনেক আগেই বুঝে গেছে।
তারা হেঁটে চলে আসে কলেজের সামনে।
বিদায় নেওয়ার আগে আয়াত হালকা করে বলে,
— “ধন্যবাদ আজকের ফুচকার জন্য। কিন্তু টকটা একটু কম হলে ভালো হতো।”
রায়হান হেসে বলল,
— “আগামীবার তুই বলবি কেমন হবে, আমি বানিয়ে আনব।”
সেদিন রাতে আয়াত তার ডায়েরিতে লেখে—
“ভালোবাসা মানেই গোলাপ, চকলেট না।
ভালোবাসা মানেই ভয় পেলে কেউ ছুটে আসে, হাত ধরে বলে—‘আমি আছি’।
আজ সেই ‘আমি’টাকে নতুন করে অনুভব করলাম।
আমার ভালোবাসা, যার এখনো নাম দেইনি…
তবুও সে আমার।”
চলবে…
1 month ago | [YT] | 2