✿𝑨𝒔𝒔𝒂𝒍𝒂𝒎𝒖 𝒂𝒍𝒂𝒊𝒌𝒖𝒎...✿
❉𝑾𝒆𝒍𝒄𝒐𝒎𝒆 𝒕𝒐 𝒎𝒚 𝒚𝒐𝒖𝒕𝒖𝒃𝒆 𝒄𝒉𝒂𝒏𝒏𝒆𝒍...❉
ღ𝑨𝒃𝒐𝒖𝒕 𝒎𝒆𝒆𝒆𝒉...👀🫶
♡𝑵𝒂𝒎𝒆:𝒀𝒐𝒖 𝒌𝒏𝒐𝒘...🥹🎀
♡𝑨𝒈𝒆:𝑾𝒉𝒚...!?😐
♡𝑹𝒆𝒍𝒊𝒈𝒊𝒐𝒏𝒔:𝑴𝒖𝒔𝒍𝒊𝒎 𝒈𝒊𝒓𝒍...!!😫❤️🙌
♡𝑨𝒍𝒂𝒓𝒕:𝑵𝒐𝒐𝒏-𝒎𝒂𝒉𝒓𝒂𝒎 𝒏𝒐𝒕 𝒂𝒍𝒍𝒐𝒘 𝒎𝒚 𝒄𝒉𝒂𝒏𝒏𝒆𝒍..!!
♡1𝐬𝐭 𝒄𝒉𝒂𝒏𝒏𝒆𝒍:❝@Luckygirl57❞
{𝑺𝒐 𝒔𝒖𝒃𝒔𝒄𝒓𝒊𝒃𝒆 𝒇𝒂𝒔𝒕...!😩🫶}
~𝒊𝒇 𝒚𝒐𝒖 𝒍𝒊𝒌𝒆 𝒎𝒚 𝒗𝒊𝒅𝒆𝒐𝒔..?👀
𝑻𝒉𝒆𝒏 𝒕𝒉𝒆𝒆𝒏𝒏...!!😫
✵𝑳𝒊𝒌𝒆,𝒄𝒐𝒎𝒎𝒆𝒏𝒕&𝒔𝒉𝒂𝒓𝒆 𝒎𝒚 𝒗𝒊𝒅𝒆𝒐𝒔...💕
𝑨𝒏𝒅𝒅𝒅 𝒔𝒖𝒃𝒔𝒄𝒓𝒊𝒃𝒆 𝒎𝒚 𝒄𝒉𝒂𝒏𝒏𝒆𝒍..✵
☆
☆
☆
☆
☆
☆
𝑳𝒂𝒔𝒕𝒍𝒚...✿
𝓐𝓵𝓵𝓪𝓱 𝓗𝓪𝓯𝓮𝓮𝓮𝔃...👀🫶
রঙ্গনা🫶🏻
~প্রেয়সীর হৃদয় ব্যাকুল📍
লেখিকা:-নাবিলা ইষ্ক
পর্ব:৪
_______________________
~~~~~~~~~~<3~~~~~~~~~~
_______________________
-:তন্ময়ের ফোনে লাগাতার কল আসছে৷তাকে কল করছে পরিবারের সবাই৷যেমন বড় চাচ্চু তাকে দুবার কল করেছে৷ছোট চাচ্চু করেছে চারবার৷ছোট চাচি ছয়বার৷তার মা করেছে নয়বার৷মোট কথা শতশত মিসডকলস এসেছে৷কিন্তু তন্ময় দেখেনি৷সাইলেন্ট করা ছিলো তার ফোন৷এখন হাতে নিয়ে কল দেখেও কাউকে কল ব্যাক করেনি৷সবাই অরু এবং দীপ্তর চিন্তায়৷স্কুল থেকে হয়তো এতক্ষণে বাড়িতে ফোন গিয়েছে তাদের অ্যাবসেন্সের৷তন্ময় শাবিহাকে বললো,
~তোর ফোন কই..?
~ফোন অফিসে৷
~ধর কথা বল৷ জানিয়ে দে ওরা তোর কাছে৷
তন্ময় তার ছোট চাচ্চুকে কল ব্যাক করে শাবিহাকে ধরিয়ে দিলো।শাবিহা সবকিছু খুলে বললো।এগুলো শুনে রেগে গেল বাড়ির সবাই৷আজ বাড়িতে গেলে অরু এবং দীপ্তর খবর আছে৷দীপ্ত শীতে এবং ভয়ে কাঁপছে অরুর পাশে৷তার পাছায় আজ ড্রাম বাজাবে তার বাবা৷অবশ্য অরুর কপালেও শনি আছে সেটা ভেবে ভয় কিছুটা কমে গেল তার।সে তো আর একা মাইর খাবেনা৷অরুও খাবে সাথে৷আপাতত রাতের বাজছে আটটা৷বৃষ্টিও থামছে না৷এদিকে কমবেশি সকলের কাপড়চোপড় ভিজেভিজে।অরু সমানে হাচি দিচ্ছে৷দীপ্তর নাক লাল হয়ে গিয়েছে৷এই বাচ্চার জ্বর আসবে বলে৷কপাল ছুঁয়ে দেখল গরম৷রাগান্বিত তন্ময় ডিসিশন নিল তার বাইকের চাবি অয়নকে দিয়ে,এখনই অরুদের নিয়ে বাসে করে রওনা হবে৷অয়ন তন্ময়কে বললো,
~ভাই এখানকার বাস গুলো পুরো ভর্তি হয়ে যাচ্ছে৷খালি বাস পাওয়া একটু মুশকিল৷
~অপেক্ষা করি...!
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর দু সিট ফাঁকা রয়েছে এমন একটি বাস পেল৷সামনে গেলে আরও সিট খালি হবে বলা হয়েছে৷তন্ময় সাইকেল গুলো বাসের ছাঁদে তুলতে বললো হেল্পারকে৷অয়নের সাইকেল সহ সবগুলো সাইকেল তোলা হয়েছে৷তারপর অরুদের নিয়ে উঠে গেল বাসে৷খালি দুটি সিটে দীপ্ত এবং মারজি বসেছে৷ওদের দুজনের অবস্থা বেশ নাজুক৷অবশ্য মারজি বলেছে সে দাঁড়াবে বরং অরু বসুক৷কিন্তু অরু না করে দিল৷সে দিব্বি স্ট্যান্ড ধরে দাঁড়িয়ে৷আরও প্যাসেঞ্জার উঠছে দেখে তন্ময় অরুর পেছনে দাঁড়ালো৷একপ্রকার সে তন্ময়ের দু'হাতের ভেতর৷ভেজা শরীরে তন্ময়ের সাথে লেগে থাকতে অরুর অদ্ভুত লাগছে৷ কেমন যেনো তার ঘনঘন শ্বাস ফেলতে হচ্ছে৷আঁড়চোখে পিছু ফিরতে নিলে তন্ময় তার ঘাড় চেপে ধরে সোজা করে৷রক্তিম চোখে তাকিয়ে বলে,
~চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক...!
অরু তার কথামতো একদম সোজা হয়ে দাঁড়ালো৷কখন দুহাত স্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে দিলো তার মনে নেই৷হঠাৎ বাস ঝাকিয়ে উঠলো৷অরু সামনে পড়ে যেতে নিচ্ছিলো৷নিজেকে বাঁচাতে পেছনের যা পেয়েছে টেনে ধরেছে৷তন্ময়ের বুকের দিকের শার্টের দুটো বোতাম শব্দ করে ছিঁড়ে গেল৷অরু হতবাক হয়ে গিয়েছে৷বড়বড় চোখ করে ফিরে তাকাল৷সে তন্ময়ের বুকের শার্ট টেনে ধরেছিল৷মাথা তুলে তাকিয়ে দেখল,তন্ময়ের চোখ জোড়া রাগে লাল হয়ে গেছে৷ভয়ে অরুর গলাটা শুকিয়ে কাঠকাঠ৷সে নিচে তাকিয়ে বোতাম খুঁজতে লাগলো৷পেল না,না পেয়ে শার্ট গুঁছিয়ে দিয়ে ভয়ে ভয়ে বললো,
~আমি সেলাই করে দিব হ্যাঁ ভাইয়া..?
তন্ময় রাগে বাকরুদ্ধ৷সে ঠিক কী করবে এই মেয়ের সাথে বুঝে উঠতে পারছে না৷একটা মানুষ এতটা মেসি কীভাবে হয়?ইচ্ছে করছে থাপ্পড় মেরে দাঁত ফেলে দিতে এর৷নিজেকে কোনোরকমে সামলে অরুকে ঘুরিয়ে ফেললো৷অরুর হাত দুটো পেছন থেকে পেঁচিয়ে ধরে রাখল৷
~এভাবেই পুরোটা রাস্তা যাবি৷
চোখজোড়া ভিজে উঠেছে অরুর৷খুব ব্যথা পাচ্ছে৷সে কী ইচ্ছে করে করেছে নাকি?লোকটা শুধু অরুকে বকাঝকা করে৷ছোট্ট মনের তাকে এভাবে বকাঝকা করলে হয়?কয়েকবার হাত ছাড়াতে চাইল৷তন্ময় আরও শক্ত করে ধরলো৷উপচে পড়া চোখের জল নিয়ে অরু এক অদ্ভুত অনুভূতি পেতে শুরু করেছে৷তার বুক এতো দ্রুত বেগে ছুটছে কেন?মাথা ব্যথা নিয়ে দীপ্ত পাশে মুখ লুকিয়ে হাসছে৷একসময় শব্দ করে হাসতে লাগলো৷তার হাসি দেখে অরু রেগে গেল৷ চোখ রাঙিয়ে তাকাল৷তাতে দীপ্তর হাসি বেড়ে গেল শতগুণ৷মারজির অবস্থাও একই৷সে নিজের হাসি লুকোতে জানালার বাহিরে তাকাল৷আধঘন্টার মধ্যেই বাস পৌঁছে গিয়েছে গন্তব্যে৷তন্ময় অরুর হাত ছেড়ে দিতেই সে কুঁকড়ে উঠলো৷ব্যথায় হাত অবশ হয়ে গিয়েছে একপ্রকার৷নাড়াতেও কষ্ট হচ্ছে৷তন্ময় তাকে ফেলেই দীপ্তকে নিয়ে নেমে গেল৷অরু নিজের হাত চেপে নেমে এসেছে একটু পর৷তার চোখের পাতায় তখনো জল৷হেচকি তুলে তন্ময়ের দিক তাকাল৷তন্ময় তখন বাস হেল্পারের সাথে সাইকেল নামাতে ব্যস্ত৷অয়নের সাইকেল নিয়ে মারজি দৌড় লাগালো৷সে দ্রুত পায়ে অয়নদের বাড়িতে সাইকেল রেখে এসে নিজেরটা নিয়ে চলে যাচ্ছে৷মোরেই তার জন্য তার ভাই এহসান অপেক্ষা করছে৷তন্ময় ধমকের সুরে বললো,
~দ্রুত ঘরে যা...!
অরু এক সেকেন্ড অপেক্ষা করলো না৷সাইকেল নিয়ে দ্রুত পায়ে চলে যাচ্ছে।হুট করে ফিরে তন্ময়কে ভেঙিয়ে গেল৷তারপর আরেকটু গিয়ে আবারো মাথা ঘুরিয়ে জিহ্বা দেখিয়ে চলে গেল ভেতরে৷দীপ্ত চাচ্ছিল তন্ময়কে টেনে বাড়ির ভেতরে নিবে।তবে যেই রাগী ভাবে তন্ময় তাকিয়ে আছে৷তা দেখে দীপ্তর গলা দিয়ে কোনো শব্দই বেরোলো না৷আলগোছে চলে এসেছে সেও৷যেতে নিয়ে বেশ কয়েকবার পিছু তাকাল৷তন্ময় তখনো দাঁড়িয়ে৷যতক্ষণ বাড়ির গেইটে না ঢুকেছে ততক্ষণ দাঁড়িয়েই ছিলো৷
ড্রয়িংরুমে মোস্তফা সাহেব বসে৷সদরদরজা সামনে দাঁড়িয়ে আনোয়ার সাহেব।সুমিতা বেগম দাঁড়িয়ে আছেন চিন্তিত চেহারা নিয়ে৷মুফতি বেগম রান্নাঘর থেকে বারবার চলে আসছেন৷কোনো কাজেই মন লাগছেনা৷ বাচ্চাগুলো এই প্রথম এমনটা করেছে৷আগে একটু লুকোচুরি করেছে তবে কিছু সময়ের জন্য৷এমন পুরোটা দিন পাড় করে দেয়নি৷অরু ঢুকতেই আনোয়ার সাহেব মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন৷ভেজা কাপড়চোপড় লক্ষ্য করতেই বললেন,
~কী করছ এগুলো মা?
সুমিতা বেগম তেড়ে এসেছেন৷ অরুর কান টেনে বললেন,
~কীসের মা?ওর পা দুটো ভাঙব আজ৷
দীপ্তকে ওহী সাহেব হাতের কাছে পেতেই পাছায় উদোম চড় বসালেন৷তবে একটাই চড় মেরেছেন৷ছেলের গরম শরীর উপলব্ধি করে মারার সাহস পেলেন না আর৷মুফতি বেগম ছেলেকে কোলে নিয়ে উপরে চলে গেলেন৷অরুকে মাথায় কয়েকটা চড় দিয়েছে সুমিতা বেগম৷তবে আনোয়ার সাহেবের উপস্থিত থাকায় মারতে পারেন নি৷মোস্তফা সাহেব প্রশ্ন করলেন,
~কে দিয়ে গিছে তোমাদের অরু...?
~তন্ময় ভাই৷
মোস্তফা সাহেব থমকে গেলেন৷তারপর দীর্ঘনিশ্বাস ফেললেন৷ আশা নিয়ে শুধালেন,
~চলে গেছে?
~দেখেছিলাম দাঁড়িয়ে৷
মোস্তফা সাহেব বললেন,
~যাও দ্রুত কাপড়চোপড় পরে নাও৷ঠান্ডা লেগে যাবে৷
~আচ্ছা বড় চাচ্চু৷
অরু নাক টানতে টানতে উপরে উঠছে৷পিছু ফিরে দেখল মোস্তফা সাহেব বাহিরের দিক যাচ্ছেন৷নিশ্চয়ই তন্ময় ভাইয়ের আশায়?কিন্তু তন্ময় ভাই কী এখনো আছে?মোস্তফা সাহেব বেরিয়ে মোরের মাথায় তাকালেন৷তন্ময় দাঁড়িয়ে আছে তখনো৷তার দৃষ্টি বাড়ির দিকই ছিলো৷বাবা ছেলের দৃষ্টি মুহুর্তেই এক হয়ে গেল৷অপ্রস্তুত ভাবে নড়ে উঠলেন মোস্তফা সাহেব৷এগিয়ে যাবেন নাকি বাড়ির ভেতরে চলে যাবেন?ছেলেকে কী তিনি ফেইস করতে পারবেন?তন্ময় এগিয়ে আসল না৷তবে সেখানকার একটা চায়ের দোকানে গিয়ে দাঁড়ালো এবং দুটো চায়ের অর্ডার দিল৷মোস্তফা সাহেব এগিয়ে যাচ্ছেন ছেলের দিক।দোকানের সামনে এসে পৌঁছে তিনি সময় নিয়ে ছেলের মুখের দিক তাকিয়ে রইলেন৷তন্ময় ও তাকাল৷ভাবলেসহীন ভঙ্গিতে বললো,
~বসো বাবা...!
মোস্তফা সাহেব বসলেন৷তন্ময়ও তার পাশে বসলো৷দোকানদার একটা চায়ের কাপ এগিয়ে দিতেই সেটা নিয়ে তন্ময় মোস্তফা সাহেবের দিক এগিয়ে দিল আর একটা নিজে নিল৷গরম গরম চায়ে চুমুক দিয়ে যাচ্ছে সমানে৷বাবার দিক তাকাচ্ছে না৷মোস্তফা সাহেব তখনো ছেলেকে দেখতে ব্যস্ত৷ছেলেটা তার শুকিয়ে গেছে৷ক্লান্ত,বিষন্ন চেহারা হয়ে আছে৷তার বুকটা জ্বলেপুড়ে ছারখার হতে লাগলো৷এতো কষ্ট করে এমন বড় রাজ্য দাঁড় করিয়ে কী হলো?এতো টাকাপয়সা কামানের কি মানে দাঁড়ায় যখন সন্তানেরা সেই টাকা ব্যবহার করেনা৷শাবিহা রিক্সা,বাস,অটো দিয়ে চলাফেরা করে,বাড়িতে দু তিনটা গাড়ি থাকতেও আর ছেলের কথা কী বা বলবেন!নিজেদের ফ্যাক্টরি,বিজনেস ছেড়ে অন্যের কোম্পানিতে চাকরি করে।হতাশায় তিনি নির্বোধ হয়ে গিয়েছেন৷তন্ময় জমিন থেকে নজর সরিয়ে বাবার দিক তাকাল৷খুব আদুরে কন্ঠে প্রশ্ন করলো,
~কেমন আছো বাবা?
মোস্তফা সাহেবের চোখজোড়ায় জ্বালা করছে৷তিনি ছেলের থেকে চোখ সরিয়ে নিলেন।নিজের লালচে চোখজোড়া লুকানোর বৃথা চেষ্টায় পড়ে রইলেন৷অসহায় গলায় বললেন,
~সন্তান বাবাকে ফেলে রেখে গিয়ে জিজ্ঞেস করছে কেমন আছে তার বাবা!
~চা'টা ঠান্ডা হচ্ছে!খেয়ে নাও৷
~ভিজে কাপড়চোপড় পরে আছো এখনো৷ঠান্ডা লেগে যাবে৷ বাসায় আসো৷
~মা অপেক্ষায় আছে৷ফিরতে হবে আমায় বাবা৷
মোস্তফা সাহেব ছেলের দিক তাকালেন৷তন্ময় উঠে দুকাপ চায়ের টাকা পরিশোধ করল৷যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়েও দাঁড়িয়ে রইলো৷যেতে পারছে না৷মোস্তফা সাহেব নিজেই বাড়ির দিক চলে যাচ্ছেন৷সে সেভাবে বসে থাকলে ছেলে তার যাবেনা৷ভিজে কাপড়চোপড় নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে৷ছোট থেকেই খুব নাজুক স্বভাবের৷অল্পতেই ঠান্ডা,জ্বর লেগে যায় ছেলেটার৷রাতেই অসুস্থ হয়ে পড়বে ছেলেটা৷চিন্তায় মোস্তফা সাহেবের বুকটা ব্যথা করছে৷
✿চতুর্থ পর্বের প্রথম ধাপ...!🫶🏻
#উপন্যাস
#প্রেয়সীর হৃদয় ব্যাকুল
#নাবিলা ইষ্ক
1 week ago | [YT] | 6
View 0 replies
রঙ্গনা🫶🏻
~চিত্ত চিরে চৈত্রমাস
লেখিকা:মম সাহা
পর্ব:১/২
_______________________
~~~~~~~~~~<3~~~~~~~~~~
_______________________
-:ছাদে টুকটাক সবজি গাছের পাশাপাশি অনেক রকমের ফুল গাছ অবস্থিত।বিভিন্ন ধরণের ফুল সংগ্রহ করাই যেন চিত্রার কাজ।তার ভীষণ ভালো লাগে এ কাজ করতে। তাই তো ছাদে প্রবেশ করার সাথে সাথেই পা বাড়ালো ফুল গাছ গুলোর দিকে।কয়েকদিন আগে তিনটি নতুন ফুলের চারাগাছ লাগিয়ে ছিলো।আজ সব গুলোরই কি সুন্দর হাসি হাসি ফুটন্ত মুখ দেখা যাচ্ছে..!চিত্রা মুগ্ধতা সামলাতে না পেরে পত্রলেখা, মৌসন্ধ্যা আর রঙ্গন ফুলের গাছ থেকে একটা একটা করে ফুল ছিঁড়ে নিলো। এই ফুলের গাছ গুলো তত সহজলভ্য নয়।কিছুদিন আগে যখন সে এই তিনটা ফুলের গাছের জন্য হা হুতাশ করছিলো তখনই ছাঁদে দেখা যায় এ ফুলের গাছ।চিত্রা জানে, ভাইজান বা বড় চাচা ছাড়া কেউ এ কাজ করবে না।কারণ তারা দু'জনই চিত্রার সকল আবদার পূরণ করার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকে।আর চিত্রার আবদারটাও যেন তাদের কাছেই।আনমনেই ফুল গুলো মাথায় গুঁজতেই পেছন থেকে ভরাট পুরুষালী কণ্ঠ ভেসে এলো,
~এই মেয়ে, ফুল ছিঁড়েছো কেনো..?গাছের ফুল গাছেই শোভা পায়। তাকে ছিঁড়ে নিজের চুলে গোঁজার মধ্যে কোনো মহত্ত্ব নেই।
গম্ভীর পুরুষালী কণ্ঠের এমন ধমকে বিরক্ত হলো চিত্রা। সেই বিরক্ত ভাব কপাল কুঁচকে ঝেরে ফেলে বললো,
~গাছটা কি আপনার...!
~গাছটা কি তোমার..?তোমারও না।গাছটা বর্তমানে যেখানে অবস্থানরত,যে মাটির উপর দাঁড়িয়ে আছে,গাছটা এখন তার।
লোকটা যে বরাবরই যুক্তিতে পারদর্শী চিত্রা তা জানে।তাই এই গম্ভীর মানবকে বিব্রতবোধ করাতে কুটিল হেসে বললো,
~তাহলে আপনিও তো আমার বাড়িতে অবস্থান করছেন।তাহলে আপনি কি আমার...!
ছেলেটা হাসলো। চিত্রার মাথায় যে অস*ৎ বুদ্ধির ছড়াছড়ি সেটা তার ভালোই জানা আছে।তাই দু'আঙ্গুলের মাঝে সিগারেট টার শেষ টান দিয়ে ধোঁয়া গুলো আকাশ পানে উড়িয়ে কেমন সতর্ক কণ্ঠে বললো,
~আমায় জ্বালাতে এসো না মেয়ে,নিজেই জ্বলে যাবে।
চিত্রা মুখ ভেংচি কাটলো।গোমড়া মুখে বললো,
~নিচে আপার অনুষ্ঠান শুরুর পর্যায়ে,আপনাকে ডাকছে বড় চাচী।
~আমি গিয়ে কী করবো...?তোমার আপা কীভাবে এত খাবার খায়,সেটা দেখবো...!
চিত্রার পারদে পারদে বিরক্তের ভাব বাড়লো।মরিচ গাছের দিকে যেতে যেতে বললো,
~একদম আপনার গা ছাড়া ভাব আমায় দেখাবেন না।যেতে মন চাইলে যাবেন না হয় যাবেন না।অনুষ্ঠান তো আর আমার না যে আপনার হাতে পায়ে ধরে নিয়ে যাবো।আর তাছাড়া আপনি তো সবসময় বাসায় থাকেন না,আজ আছেন বলেই ডাকছে।
~আমি গেলে তো তোমার হি*টলার বাপ নাক-মুখ কুঁচকাবে।যাই একটু উনার শিরার-উপশিরার বিরক্ত ছড়িয়ে আসি।
চিত্রা আর কোনো উত্তর দিলো না।মরিচ গাছের দিকে এগিয়ে গেলো সে। লোকটার বাউণ্ডুলে,ছন্নছাড়া ভাবটা ঠিক পছন্দ না তার। বাবা-মেয়ের এ দিকে ভীষণ মিল। দু'জনেই এই ছেলেকে দেখতে পারে না। বাহারের ধপাধপ চলে যাওয়ার শব্দ শোনা গেলো।যেতে যেতে বললো,
~শুনো মেয়ে,
❝আমি ছুঁয়ে দিলে পরে,অকারণেই যাবে ঝড়ে,
গলে যেন সে বরফ গলে না।❞
চিত্রা তাকিয়ে রইলো লোকটার দিকে।শ্যামলা, ছিপছিপে গড়নের লোকটার এমন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জিনিস গুলোই যেন বয়ঃসন্ধির আকর্ষণ।মাথা ভর্তি ঝাঁকড়া চুল গুলো কেমন হেলেদুলে পড়ছে,সিগারেট ফুঁকে যাওয়া পোড়া ঠোঁটও যেন আরেক প্রকারের মা*দ*কতা আছে।পুড়ে যাওয়া গাড়ো খয়েরী রঙের ঠোঁটটাকে বহুরূপী ডালিয়া মনে হয়।চিত্রার ভাবনার মাঝেই নিচ থেকে হৈচৈ ভেসে এলো।চিত্রা দৌড়ে ছাঁদের কার্নিশ ঘেষে নিচে তাকাতেই দেখলো মহিন গাল ধরে দাঁড়িয়ে আছে আর তার সামনে বেশ গা ছাড়া ভাব নিয়ে দু'হাত পকেটে গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে বাহার।উফ্,সত্যিই লোকটা জ্বালিয়ে দিবে একদিন।
✿প্রথম পর্বের শেষ ধাপ...!🫶🏻
পর্ব:২
-:ঝরঝরে রোদ্দুরে ঘামে ভিজে জবজবে হয়ে আছে প্রত্যেকের শরীর। সাথে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেছে আকষ্মিক ঘটনায়। ধুপধাপ পা ফেলে তন্মধ্যেই ছুটে এসেছে চিত্রা। মহিন গালে হাত দিয়ে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সেও বোধহয় বুঝতে পারছে না চ*ড়ের কারণটা।তুহিন এগিয়ে এলো প্রথমে।কোনোরকমের উচ্চবাচ্য না করেই শীতল কণ্ঠে প্রশ্ন করলো,
~কী হয়েছে বাহার ভাই? মহিন কিছু করেছে...?
বাহার যে সবে একটা অদ্ভুত কাজ করেছে সেটার কোনো ছাপ তার মুখমন্ডলে নেই।বরং বেশ স্বাভাবিক কণ্ঠে বললো,
~আমি মানুষকে শুধু শুধু কিছু দেই না জানোই তো।নিশ্চয়ই সে দেওয়ার মতন কাজ করেছে তাই দিয়েছি।তুহিন মহিনের দিকে তাকালো।বাহার সোজাসাপ্টা উত্তর দিবে না সেটা সে বেশ ভালো করেই জানে।বাহারের চরিত্রের সাথে সোজাসাপটা উত্তরটা আশা করাও এক ধরণের বোকামি।তাই সে দ্বিতীয় প্রশ্নটা মহিনকেই করলো,
~কী করেছো মহিন?
ততক্ষণে মহিনেরও হতভম্ব ভাব কেটে গেলো।অবাক কণ্ঠে বললো,
~আমি তো কিছুই করি নি।
বাহার পকেটে হাত গুঁজেই হাসলো।ক্ষীণ হাসি।কিন্তু ততক্ষণে মহিনের পরিবার ক্ষেপে গেলো।হৈ হৈ করে ছুটে আসলো মহিনের মা মানে চাঁদনীর শাশুড়ি।আঙুল উঁচিয়ে বাহারের দিকে তাঁক করে দাঁত কিড়মিড় করে বললো,
~এই ছেলে, এই, তোমার সাহস কীভাবে হলো আমার ছেলের গায়ে হাত তোলার...?
~কিছুই তো করলাম না আন্টি।সাহসের কী দেখলেন এখনো?
মহিলার দাঁত কিড়মিড় করা প্রশ্নের জবাবে এমন উত্তর যেন অনাকাঙ্খিত ছিলো।দূর হতে চিত্রার ভয়ে হাত-পা কাঁপছে।এখানে তার বাবা উপস্থিত না থাকলে হয়তো এতটা ভয় তাকে কাবু করতে পারতো না।অথচ তার বাবা র*ক্তলাল চক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে।ঘটনা বিগড়াতে যে বেশি সময় লাগবে না তা বুঝতে বেশি সময় লাগলো না চিত্রার।মহিনের মা লতা বেগমের রাগ চক্রবৃদ্ধি আকারে বাড়লো।বেছে বেছে সে চিত্রার বাবা নুরুল সওদাগরের দিকে তাকিয়েই চোখ দিয়ে অগ্নিবর্ষণ করে বললো,
~ভাই সাহেব, আপনারা হা করে সবটা দেখছেন...!বাহিরের একটা উটকো ছেলে আপনাদের সামনে এমন একটা কান্ড ঘটিয়ে ফেললো অথচ আপনারা নিশ্চুপ?ছেলেটাকে ধমকও দিচ্ছেন না...!
~উনার ধমকের পরোয়া অন্তত বাহার করে না,আন্টি।ভুল জায়গায় ভুল তথ্য প্রেরণ করাটাই বোধহয় মহিলা সমাজের কাজ।
এবারও বাহারের কণ্ঠ স্বাভাবিক।কিন্তু স্বাভাবিক থাকতে পারলেন না নুরুল সওদাগর।খেঁক খেঁক করে বলে উঠলেন,
~এই অ*ভ*দ্র ছেলে, বড়দের সাথে কীভাবে কথা বলতে হয় জানো না?অন্যায় করেছো অথচ নূন্যতম লজ্জাবোধ নেই।
~লজ্জাবোধের ফাংশনটা আমার ঠিক কাজ করে না।আর ভুল জায়গায় তো আরও আগে কাজ করে না।সূর্যের তেজ বাড়লো,সাথে তড়তড় করে বাড়লো নুরুল সওদাগরের রাগ।বড় বড় পা ফেলে এগিয়ে এলো বাহারের দিকে।বাহারের বুকের বা'পাশটাতে ধাক্কা দিলো শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে।ছেলেটা দু'পা পিছিয়ে গেলো অপ্রত্যাশিত ধাক্কায়।অথচ কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালেন না নুরুল সওদাগরকে।বরং কোনো বাক্যব্যয় ছাড়াই বিরাট আরেকটা চ*ড় বসালো মহিনের গালে।পরিস্থিতি আরেক ধাপ হতভম্ব হলো।সবাই কেবল ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো।নুরুল আলমও কম হতভম্ব বোধহয় হলো না।বাহার যেন অদৃশ্য ভাবে চড়টা তাকেই দিলো।নুরুল আলমের মতন শক্ত,কঠোর পুরুষ ভাষা হারালেন।নিজের বড় ভাইয়ের দিকে তাকালেন হতভম্ব চোখে।কোনো মতে উচ্চারণ করলেন,
~বড়ভাই,আপনি দেখলেন তো...!
ছাঁদের কার্নিশ ঘেষে অনবরত কাক শোরগোল তুললো।পরিবেশ যেন প্রয়োজনের তুলনাও শীতল।চিত্রার বড় চাচা গলা পরিষ্কার করে যখন বাহারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালালেন বাহার সবাইকে অবাক করে দিয়ে তৃতীয় তথাপি শেষ চড়টা মারলো মহিনের ডান গালে এবং সবাইকে অবাকের চরম পর্যায়ে পৌঁছে দিয়ে পকেট থেকে সিগারেট বের করে হেলতে দুলতে চলে গেলো বাড়ির মেইন গেইট পেরিয়ে।সবাই কেবল তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।বর্তমানে এই তাকিয়ে থাকাটাই যেন উত্তম কাজ হয়ে দাঁড়ালো সবার কাছে।লতা বেগম তার পাশের চেয়ারটাই ধপ করে বসে পড়লেন।এতক্ষণের ঘটা কর্মকাণ্ড যেন সবারই নেহাৎ ভ্রম মনে হলো।বাহার যখন গেইট পেরিয়ে অদৃশ্য হলো উচ্চকন্ঠ শোনা গেলো নুরুল সওদাগরের।ভয়াবহ রকমের চিল্লিয়ে বললেন,
~এই বে*য়াদব ছেলেটা যেন এ বাড়িতে আর পা না রাখে।বিনা কারণে একটা ছেলেকে এত গুলো চড় মারলো অথচ তার ভয়,আফসোস কিছুই নেই?বড়ভাই,এটার বিহিত আপনাকেই করতে হবে।
~বাবা, বাহার ভাই অকারণে কিছুই করেন না আমরা সবাই ই জানি। নিশ্চয় আমাদের অজান্তে কিছু হয়েছে।
তুহিনের কথা থামলো তার কথার পৃষ্ঠে উত্তর দিলো চাঁদনীর স্বামী।লোকটা নিপাট ভদ্রলোক।খুব সহজে রেগে যান না,ভীষণ ঠান্ডা মানুষ।ঝুট-ঝামেলা এড়িয়ে চলে গিয়ে জীবনে সুখী মানুষ সে।কিন্তু আজকের অনাকাঙ্খিত ঘটনার পর লোকটাও চুপ থাকতে পারলো না।বিষ্ময় নিয়ে বললেন,
~তুহিন তোমার কথা-ই নাহয় মানলাম।এত গুলো চড় তো আর এমনি এমনি দেয় নি,নিশ্চয় কারণ আছে। বাহার ভাই এর উচিৎ ছিলো না সে কারণ গুলো বলার?এত গুলো মানুষকে এক সমুদ্র প্রশ্নের নিচে ফেলে দেওয়া টা উনার মতন বুদ্ধিমান লোকের কাছে প্রত্যাশিত নয়।সব জায়গায় গা ছাড়া ভাবটা আদৌও মানানসই?
অবস্থা বেগতিক।কথার পৃষ্ঠে শুরু হলো কথার ঘাত-প্রতিঘাত।অথচ যাকে নিয়ে এত কিছু সে নির্জীব ভকবে প্রস্থান করেছে।বাহার ভাইয়ের কাজটা বড্ড চোখে বাজলেও বাড়ির বেশিরভাগ মানুষই তার পক্ষেই কথা বলছে।কথা কাটাকাটি যখন বাজে পর্যায়ে তখন চিত্রার মনে হলো বাহারের পক্ষ থেকে একটা কারণ উল্লেখ্য করতে হবে যেন চড়টা যুক্তিযুক্ত হয়। যেমন ভাবনা,তেমন কাজ করার আগেই বাড়ির সবচেয়ে গম্ভীর,ঠান্ডা অহি কথা বলে উঠলো।খুব ক্ষীণ স্বরে বললো,
~বাহার ভাই আমার পক্ষ থেকে চড়টা মেরেছেন। উনার দোষ নেই।
অবাকের উপর অবাক হচ্ছে পরিবারের বড় সদস্যরা।ছোটোরাও সেই তালিকার বাহিরে না।অহির মা ছুটে এলেন মেয়ের দিকে।ধমকে বললেন,
~কি বলছিস,অহি!আজেবাজে কথা বলবি না একদম।
মায়ের ধমকে ভয়ে অহির মুখটা এতটুকু হলো।তখন মেয়েটার ভরসার হাত হয়ে এলো চিত্রার মা।এই ভদ্রমহিলা প্রচুর বুদ্ধিমতী।অহির কথার ইঙ্গিত বুঝতে তার এক সেকেন্ডও ব্যয় হলো না।তাই নিজের ছোটো জা কে চোখের ইশারায় চুপ করিয়ে অহিকে আদুরে স্বরে জিজ্ঞেস করলেন,
~আচ্ছা অহি,বলো তো মহিন ঠিক কী করেছে তোমার সাথে?অসভ্যতামো করেছে কি!
অহি উপর-নীচ মাথা নাড়ালো।যার অর্থ "হ্যাঁ"।চোখের গোল গোল গ্লাসের চশমাটা ঠেলে চোখের সাথে আঁটসাঁট করে দিয়ে নত মুখে বললো,
~মহিন আমার স্পর্শকাতর জায়গায় বাজে ভাবে ছুঁয়েছে।সেটাই হয়তো বাহার ভাই দেখে ফেলছে,আমি তো লজ্জায় প্রতিবাদ করতে পারতাম না,ভাগ্যিস উনি করে দিয়েছে।
সবার দৃষ্টি এবার মহিনের দিকে পড়লো।মহিন অবাক চোখেই তাকিয়ে রইলো অহির দিকে।তুহিন এসে এলোপাথাড়ি কতগুলো আঘাত করলো তার শরীরে।ঘৃণায় প্রত্যেকের শরীর রি'রি করে উঠলো।অহি স্বভাবসুলভ বেশ ঠান্ডা মেয়ে।এই মেয়ে যে বানিয়ে বানিয়ে কিছু বলবে না সেটা সবারই জানা।লতা বেগম নিজের ছেলের বেহাল অবস্থা মানতে না পেরে ছেলের সামনে সুরক্ষার দেয়াল হয়ে দাঁড়ালেন।ছেলেকে নিজের পিছে আড়াল করে হাত জোর করে বললেন,
~আমার ছেলেকে আর মেরো না,বাবা।অনেক তো মেরেছো।ও ক্ষমা চাইবে অহির কাছে।এবার মতন ছেড়ে দেও।আমি ওর আচরণে লজ্জিত।ভাবতে পারি নি আমার ছেলে এমন হবে।ক্ষমা করো বাবা।
তুহিনের রাগ তখন আকাশ সমান।নিজের বাড়ির মেয়েদের সে যথেষ্ট সামলে রাখে,অথচ এই আত্মীয় নামক জা*নোয়ারটা নাকি বাজে আচরণ করে বেঁচে যাবে,কখনোই না।
তুহিন তার বাবার উদ্দেশ্যে হুংকার ছাড়লো,
~বাবা,এবার আপনি কিছু বলবেন না?এতক্ষণ তো অনেক কথা বলছিলেন।ওরে এবার জেলে দেন।এত বড় সাহস ওর।হ্যারাসমেন্টের দায়ে জেলের ঘানি টানবে ও।ব্যবস্থা করুন।
উৎসবমুখর পরিবেশটা হুট করে ভয়াবহ রূপ ধারণ করলো।চেরিকে আকড়ে ধরে নিরুত্তর দাঁড়িয়ে রইলো চিত্রা।সওদাগর বাড়ির সকল সদস্যই বেশ চতুর।আত্মীয়দের মাঝে এমন বিশ্রী ঘটনা ঘটলে তাদের বড় মেয়ের সংসারেও যে আঁচ আসতে পারে সেটা তাদের ঢের জানা।পাড়া প্রতিবেশী তন্মধ্যেই ছিঃছিঃ শুরু করলো।তিলকে তাল বানালো।অহির চরিত্রে কিঞ্চিৎ কালি ছোড়াছুড়ি হয়ে গেলো।বাড়ির সবচেয়ে বড় সদস্য আফজাল সওদাগর নিজের মুখ খুললেন
✿দ্বিতীয় পর্বের প্রথম ধাপ...!🫶🏻
#চিত্ত_চিরে_চৈত্রমাস
#মম_সাহা
1 week ago | [YT] | 9
View 5 replies
রঙ্গনা🫶🏻
~প্রেয়সীর হৃদয় ব্যাকুল📍
লেখিকা:-নাবিলা ইষ্ক
পর্ব:৩
_______________________
~~~~~~~~~~<3~~~~~~~~~~
_______________________
-:সাইকেল করে এতটা পথ অতিক্রম করা সহজ বিষয় নয়৷ মাঝরাস্তায় অরুর খিদে পেয়েছে৷ দীপ্ত বললো তারও খিদে পেয়েছে৷ অয়ন তাদের নিয়ে একটা হোটেলে ঢুকল৷ তখন অলরেডি বারোটা বেজে গিয়েছে৷ সাড়া রাস্তায় তারা যেভাবে হৈচৈ করতে করতে এসেছে সময় তো যাবেই৷ পরোটা ভাজি অর্ডার করলো সবার জন্য৷ খেতে নিয়ে তাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে৷ মারজি বললো,
~অয়ন ভাই তোমাকে নাকি সুমনা পছন্দ করে..?
~তো...?
দীপ্ত বললো,
~তন্ময় ভাইকেও পছন্দ করে এই মেয়ে৷পছন্দ বললে ভুল হবে৷একদম আমার ভাইয়ের গলায় ঝুলে পড়তে চায়৷ সেবার অরু আপুর মামামামী আমাদের বাড়িতে এসে,বড়ো চাচ্চুর সামনে একটু বাজিয়ে গিয়েছে৷মানে তারা নিজের মেয়ে আমাদের বাসায় দিতে চায়৷ অয়ন নাক ছিঁটকে বললো,
~ক্যারেক্টরল্যাস মেয়ে৷
হুট করে অয়নের চোখ হোটেলের বাইরে চলে গেল৷সুমনা সহ বেশকিছু ছেলেমেয়েদের একসাথে যেতে দেখল৷সেটা সে অরুকে বললো৷অরু সঙ্গে সঙ্গে টেবিল থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো৷ তার পিছুপিছু বাকিরাও বেরিয়ে এসেছে৷ অয়ন ঠিক দেখেছে৷সুমনার সাথে দুটো মেয়ে আর চারটা ছেলে রয়েছে।অরু নাকমুখ কুঁচকে ফেললো৷অয়ন বললো,
~ওরা মনে হয়,পার্কের দিক যাচ্ছে৷
মারজি বললো,
~আমরাও যাই গিয়ে দেখি কী করে..?সুমনা কি সেইফ ওদের সাথে..?এখানকার একটা ছেলেমেয়েও ভালো না৷
অয়ন শেষে ছেলেটাকে দেখিয়ে বললো,
~এই ছেলেটা বেশকিছু মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে৷মেয়েদের সাথে খারাপ কাজ করে তা ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল করে৷
অরু চিন্তিত সুরে বললো,
~তাহলে তো সুমনা সেইফে নেই৷আমরা ফলো করে কিছুটা দেখি...?
অয়ন মাথা দোলাল৷সুমনাদের ফলো করতে করতে দুপুর তিনটা বেজে গেল৷আপাতত সুমনারা পার্কের সামনে দাঁড়িয়ে৷ভেতরে যাবে মনে হয়।ওদের দলের একজন দৌড়ে দোকানের দিক ছুটেছে৷ফিরেছে বেশকিছু সিগারেট নিয়ে৷অরু আর মারজি মুখে হাত দিয়ে রয়েছে৷তারা দুজন অবাকের সপ্তমে৷তারপর দেখল সুমনারা সবাই গোল হয়ে একটা গাছের পেছনে বসেছে এবং লুকিয়ে সিগারেট খেয়ে যাচ্ছে৷অরু ঘুরে দাঁড়িয়ে বললো,
~আমরা চলে যাই চলো...!
ঘুরেফিরে আবারো স্ট্যান্ডের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে তারা৷ মেইন রোড ধরে সবাই সাইকেল করে পাল্লা লাগালো৷যে যত দ্রুত যেতে পারে৷ অয়ন সর্বপ্রথম৷তারপর অরু তারপর দীপ্ত৷পেছনে মারজি৷তাদের সাইকেল পাল্লা থেমেছে তৃতীয় বাস স্ট্যান্ডের সামনে৷আর তিন চারটা বাস স্ট্যান্ড পাড় করতে হবে৷অয়নের পেছনে তারা আবারো চললো৷শাবিহার অফিসের সামনে পৌঁছাতে নিয়ে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে৷ পৃথিবী অন্ধকার৷ চাঁদ ডুবে গিয়ে আকাশে মেঘ জমেছে৷ বৃষ্টি হবে মনে হয়৷ আবহাওয়া খারাপ৷ আশ্চর্যজনক ভাবে শাবিহাও তখন বেরিয়েছে খেতে৷তার ব্রেক-টাইম৷রোজকার মতো তন্ময়ও সেই মুহুর্তে বাইক নিয়ে থেমেছে শাবিহার সামনে৷ আর তন্ময়ের সামনে চার সাইকেল৷ তন্ময়ের নজর পেয়ে অরু ঘাবড়ে গেল৷ সাইকেল ধরে রাখা তার হাত শক্ত হয়ে গেল৷শাবিহাও কিংকর্তব্যবিমূঢ়৷সে অরুদের দিক যেতে নিচ্ছিলো, আর তখনই নেমেছে তুমুল বৃষ্টি৷ভিজিয়ে দিচ্ছে উপস্থিত সবাইকে৷তন্ময়ের চোখমুখ শক্ত৷বাইক থেকে নেমে এগিয়ে আসলো৷
~এখানে কেন তোরা...?
দীপ্তর কোনোকিছুরই পরোয়া নেই এখন৷সে তার সাইকেল ফেলে তন্ময়ের কোলে ঝাপিয়ে পড়লো৷কেঁদেকেটে তন্ময়ের শার্ট ভিজিয়ে দিচ্ছে৷ঠিক কতমাস পর সে তন্ময়কে দেখছে হিসেব নেই৷এদিকে বৃষ্টির মধ্যে হুট করে ঝাকড়া চুলের দীপ্তকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে তন্ময়৷তার রাগ কিছুটা কমে গেল দীপ্তর কান্ডে৷ এখন অরুকে চোখ রাঙাবে নাকি দীপ্তকে শান্ত করবে বুঝে উঠতে পারছেনা৷শাবিহা সবাইকে তাড়া লাগালো৷বললো,
~স্ট্যান্ডের ভেতর দাঁড়া৷ভিজে যাচ্ছিস৷
সবাই নিজেদের সাইকেল চাপিয়ে স্ট্যান্ডের ভেতর দাঁড়ালো৷কমবেশি সবাই ভিজে গিয়েছে৷তবে অয়ন ভেতরে আসলো না৷সে খোলা আসমানের নিচে দাঁড়িয়ে৷অয়নের দেখাদেখি মারজিও বৃষ্টির মধ্যে গিয়ে দাঁড়ালো৷ ভালো লাগছে এখানকার বৃষ্টি৷ তন্ময় তাদের দিক নজর কীভাবে রাখবে?সে অরু এবং দীপ্তর সাহস দেখে হতভম্ব৷ দীপ্তকে কোল থেকে নামিয়ে ধমকে উঠলো,
~এখানে কী করছিস...?
~সাইকেল দিয়ে আপুর সাথে দেখা করতে
আসছি৷আমি কিন্তু আসতে চাই নাই৷অরু আপু জোর করে নিয়ে আসছে৷
এসবকিছুর গুরু কে বুঝতে বাকি রইলো না তন্ময়ের৷সে তেড়েমেরে অরুর দিক এগিয়ে গেল৷ভয়ে অরু দৌড়ে বৃষ্টির মধ্যে চলে গিয়েছে৷ঠিক অয়নের পেছনে গিয়ে ভিজতে লাগলো।তন্ময় তখন রাগে থরথর করে কাঁপছে৷দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
~সাহস আকাশ ছুঁয়েছে না...?
~এই দীপ্ত মিথ্যে বলছে বিশ্বাস করু....!🙂ও উল্টো বললো যে আপুকে খুব মিস করছে৷দেখতে চায় একটু৷আমি ভাবলাম বেচারা কষ্ট বুকে চেপে কতক্ষণ রাখবে৷তাই নিয়ে আসলাম৷শাবিহা হেসে বললো,
~আমরা কিন্তু একই বাসায় থাকি মনে রাখিস..!😁তবে আমাকে এমন সারপ্রাইজ দিয়েছিস যে এখনো হজম করতে পারছিনা৷তা কী খাওয়াবো তোদের...?কি খাবি..?এসেছিস তাও এমন ওয়েদারে..!দীপ্ত বললো,
~এই ওয়েদারে চা হয়ে যাক..?ওইতো টং৷
অয়ন বললো,
~আমি এনে দিচ্ছি৷
অরু আর মারজি দ্রুত স্ট্যান্ডের ভেতর চলে গেল৷তন্ময় খোলা আসমানের নিচে যেতেই বৃষ্টিতে সম্পুর্ন ভিজে গেল৷লেপ্টে থাকা শার্ট ভেদ করে তার সুঠাম দেহ দেখা যাচ্ছে৷অরুর চোখজোড়া আঁড়চোখে সেখানে চলে গেল এবং চোখজোড়া কিছুক্ষণ পিটপিট করে চেয়ে রইলো৷তারপর মাথা ঘুরিয়ে ফেললো৷আবারো আঁড়চোখে তাকাল৷মোট ছয় কাপ চা এনেছে৷একেকজন একেকটা কাপ হাতে নিয়েছে৷গরম ধুঁয়া উড়ছে চায়ের থেকে৷কাপে চুমুক দিয়ে মারজি বললো,
~চা'টা বেশ মজা৷
অয়ন আনমনে বললো,
~হ্যাঁ৷এই চাচার দুধ চা অসম্ভব স্বাদের।
~যেভাবে বলছ যেমন তুমি প্রত্যেকদিন এসে খাও অয়ন ভাই।
অয়ন চমকে গেল৷তারপর ছুতো ধরে বললো,
~বন্ধুকে মাঝেমধ্যে ড্রপ করি এখানে তো!
তন্ময়ের মেজাজ তুঙ্গে৷তাই তাকে কেউ বিরক্ত করছে না৷টাই অর্ধেক খুলে ঝুলিয়ে রেখেছে৷গরম চায়ে কয়েক চুমুক দিয়ে অরুর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে৷অরু তাকে দেখতেই চায়ের কাঁপ হাতে হাচি দিয়ে উঠলো৷ঠান্ডা লেগে যাচ্ছে তার৷কপাল কুঁচকে পকেট থেকে ভেজা রুমাল এগিয়ে দিলো তন্ময়৷অরু সেটা নিয়ে আলগোছে নাক পরিষ্কার করে বসলো৷নাক পরিষ্কার করে মনে পড়লো এটা তন্ময়ের রুমাল,টিস্যু না৷রুমালের দিক তাকিয়ে অরুর চোখজোড়া ভিজে উঠলো৷ এতো সুন্দর রুমালটা নষ্ট করে ফেলল৷এটা এখন ঘষেঘষে পরিষ্কার করে দিলেও তো তন্ময় আর ব্যবহার করবে না৷দীপ্ত চায়ের কাপ হাতে হাসছে৷
~আজ আমাদের অরু আপুর হাচি কাশি থেকে কেউ রক্ষা করতে পারবেনা।
বৃষ্টিতে ভিজেছে যেহেতু এবার অরু ঠান্ডায় পুরো বাড়ি মাথায় তুলে ফেলবে৷এভাবেই এর হাচি কাশির শেষ নেই৷এবার ঠান্ডার ছুতোয় তো তছনছ করে দিবে সবকিছু৷
✿তৃতীয় পর্বে শেষ ধাপ...!🫶🏻
#উপন্যাস
#প্রেয়সীর_হৃদয়_ব্যাকুল
#নাবিলা_ইষ্ক
1 week ago (edited) | [YT] | 9
View 1 reply
রঙ্গনা🫶🏻
~চিত্ত চিরে চৈত্রমাস
লেখিকা:মম সাহা
পর্ব:১
_______________________
~~~~~~~~~~<3~~~~~~~~~~
_______________________
-:চাঁদনী আপার দেবর আমার বুকে হাত দিয়েছে, আপা।আমি খুব ব্যাথা পেয়েছি জানো?কি বিশ্রী ছোঁয়া!
সাত বর্ষীয় ছোটো বোনের মুখে এমন বিশ্রী একটা কথা শুনতেই শরীরটা শিরশির করে কেঁপে উঠলো চিত্রার। ঘর্মাক্ত মুখ খানা রাগে লালবর্ণ ধারণ করলো। বোনের দিকে দৃষ্টি দিতেই দেখলো ছোট্টো মেয়েটা ভয়ে কেমন গুটিশুঁটি মেরে আছে! তাড়াতাড়ি বোনকে নিজের দু'হাতের আঁজলে আগলে নিলো সে। হতভম্ব কণ্ঠে বললো,
~দেখি তো আমার চেরি সোনা, জামাটা একটু সরাও। আপা একটু দেখি।
সবচেয়ে নিকটতম ভরসার স্থান পেয়ে মেয়েটা নির্দ্বিধায় জামা সরালো। জামা সরাতেই আৎকে উঠলো চিত্রা। কেমন লাল হয়ে গেছে মেয়েটার সাদা ধবধবে চামড়াটা! কি ভীষণ বিশ্রী ভাবেই না ছুঁয়েছে এতটুকু বাচ্চাটাকে! ভাবতেই ঘৃণায় টইটম্বুর হয়ে গেলো চিত্রার শরীরের প্রতিটি শিরা-উপশিরা। ক্ষ্যাপে উঠলো সে। অথচ বাড়ি ভর্তি এত মানুষ! ঝোঁকের বশে কিছু করে বসলে তার খেসারত না আবার ছোটো চেরিকে দিতে হয়। বিরক্ত, রাগ দুটো অনুভূতি মিলেমিশে একাকার হয়ে যখন আ*ন্দোল*ন শুরু হলো চিত্রার মস্তিষ্কে, তখন বাহির থেকে তার ডাক পড়লো। আজ তার বড় বোন চাঁদনীর গর্ভকালীন সময়ের সাত মাস পূর্ণ হওয়ায় ছোটখাটো একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানেই চাঁদনীর শ্বশুর বাড়ির লোকজনও এসেছে। অবশ্য তার আপন বড় বোন না চাঁদনী, তার বড় চাচার মেয়ে হলো চাঁদনী আপা। আর ছোট্ট চেরিও তার আপন বোন না। তার ছোট চাচার মেয়ে হলো চেরি। চেরির পূর্ণনাম হলো তোফা। কিন্তু আদর করে সবাই বাচ্চাটাকে চেরি বলে। আর মেয়েটা চেরি ফলের মতনই সুন্দর, আদুরে, গোলগাল। তাই তো এতটুকু বাচ্চাও আজ বাজে ছোঁয়ার স্বীকার হলো।
চিত্রার পরিবারটা বেশ বড় পরিবার বলা যায়। চিত্রার মা-বাবা, বড় চাচা-চাচী, ছোট চাচা-চাচী, চিত্রার আপন বড় ভাই তুহিন, বড় চাচার ছেলে দু'জন দিহান আর তৃষান, ফুপি আর ফুপির একমাত্র ছেলে বাড়ির সবচেয়ে ছোট সদস্য অনয়, চেরি,চেরির আরেকজন বড় বোন যে চিত্রারও বড় অহি আপা এবং চিত্রা নিজে। চাঁদনীও বড় চাচার মেয়ে কিন্তু তার বিয়ে হয়েছে বিধায় তাকে এই পরিবারের দলে আর টানা হয় না কারণ সে এখন অন্যের ঘরের। একমাত্র চাঁদনীর বিয়ে হওয়ার ফলে এত বড় পরিবারে একজন মাত্র সদস্য কমেছে।
~আপা,আম্মু শুনলে তো আমায় বকবে তাই না?আম্মু তো বলে দুষ্টুমি করতে না এত।অচেনা কারো সাথে খেলতে না।আমি কীভাবে জানবো ঐ ভাইয়াটা আমাকে চকলেটের কথা বলে এমন ব্যাথা দিবে! আমি আর দুষ্টুমি করবো না, আপা।
চেরির এমন অসহায়ত্ব দেখে বুক ভার করে কান্না এলো চিত্রার।বয়ঃসন্ধির বয়স তো, তাই আবেগের স্রোতে কান্নাটাই আসে প্রথমে। কিন্তু সে কাঁদবে না মেয়েটার সামনে, তাহলে মেয়েটা আরও বেশি ভয় পেয়ে যাবে। কণ্ঠনালিতে আটকে থাকা কান্নার স্রোতটা গিলে ফেললো চিত্রা। খুব কষ্টে মুখে হাসি হাসি ভাব ফুটিয়ে বললো,
~কেনো খেলবে না তুমি হ্যাঁ..?অবশ্যই খেলবা। আপা আছি না তোমার সাথে? কেউ কিছু করবে না আর দেখো। তুমি কেবল ঐ পঁ*চা ভাইয়াটার রুমের সামনে আর যাবে না, কেমন?মনে থাকবে তো?
অবুঝ চেরি ডানে-বামে মাথা নাড়ালো। কি নিষ্পাপ ছোটো মুখখানা! টানা টানা, মায়া মায়া দু'টি চোখ বাচ্চাটার। অনেক ফর্সা আর স্বাস্থ্য ভালো হওয়ায় ভীষণ আদুরে লাগে মেয়েটাকে। আর এই ছোট্ট মেয়েটার শরীরে হাত দিতে নাকি বাঁধে নি ঐ লোকটার। কিছু তো একটা ব্যবস্থা করতেই হবে। এত সহজে তো ছাড়া যাবে না অ*স*ভ্য টাকে। বোনের মুখ খানা ধুইয়ে দিয়ে সুন্দর করে চুল গুলো বেঁধে দেয় চিত্রা। কান্না করতে করতে লাল হয়ে গেছে বাচ্চাটার মুখ। পারে না যেন বুকের সবটুকু স্নেহ ঢেলে দেয় মেয়েটার তরে।
চেরিকে তৈরী করিয়ে চিত্রা নিজেও গোসল করে এলো। মাত্রই কলেজে থেকে এসেছিলো সে। সামনে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা তার। তাই এখন নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে কলেজে। সে সুবাধেই বাড়িতে অনুষ্ঠান থাকা স্বত্তেও তাকে কলেজ যেতে হয়েছিলো। সে অবশ্য তত উন্নত শ্রেণীর ছাত্রী না। কোনোমতে চলনসই রেজাল্ট হলেই সে সন্তুষ্ট। ভাদ্রের উত্তপ্ত গরমে পরিবেশ ঘর্মাক্ত। আর সেই গরম দিয়ে এসে হুট করে এমন ঘটনার সম্মুখীন হওয়াতে বিরক্তিতে তেতো ভাব চলে এলো তার শরীরে। গোসল করায় আপাতত কিছুটা শান্তি মিলছে।
গোসল করে লাল টকটকে একটা থ্রি-পিস পড়লো চিত্রা। অতঃপর চেরির হাত ধরে বাড়ির বাগানের দিকে এগিয়ে গেলো,মূলত অনুষ্ঠান টা সেখানেই।
বিরাট আয়োজন করা হয়েছে চাঁদনীর জন্য। কত রকমের খাবারের যে আয়োজন করা হয়েছে তা হিসেব করেও শেষ করা যাবে না যেন। চিত্রা ছুটে এসেই ধপ করে তার আপুর পাশ ঘেঁষে বসে পড়লো।
চিত্রাকে দেখে ভারী পেটের গোলগাল, ফর্সা ধবধবে চাঁদনী মুচকি হাসলো। বাম গালটা টেনে দিয়ে বললো,
~কই ছিলিস চিতাবাঘ?এতক্ষণ লাগিয়ে কী পরীক্ষা দিয়েছিস শুনি! পরীক্ষাকে এত সিরিয়াসলি নেওয়ার মেয়ে তো তুই না? কি ব্যাপার শুনি!
বড় আপার দিকে আর চোখে তাকিয়ে মুখ বাঁকালো চিত্রা। বেশ ভাব নিয়েই বললো,
~তোমাদের মতন জর্জ-ব্যারিস্টার হওয়ার মতন ছাত্রী হয়তো না তাই বলে পাশ মার্কটা তুলবো না? বাবাকে তো চেনো, ফেল করার অপরাধে না আবার জেলে দিয়ে দেয়। নিজের ক্ষমতার যে দাপট দেখায় সে!
চিত্রার কথায় হাসলো চাঁদনী। মেয়েটা তার বাবাকে তেমন পছন্দ করে না বলা যায়, বেশ ভয় পায়। একমাত্র নিজের বাবাকে ছাড়া পুরো পৃথিবীকে উ*ত্যক্ত করার ক্ষমতা ওর আছে। বাবার সাথে ওর যে শীতল একটা যুদ্ধ প্রতিনিয়ত হয় তা সবারই জানা আছে। তবুও নিজের বাবাকে তো আর এমন কথা বলা শোভা পায় না। সেই জন্যই চাঁদনী চোখ রাঙালো, ছোট্টো ধমক দিয়ে বললো,
~এমন বলে না চিতাবাঘ,তুই না ভদ্র মেয়ে।
~হ্যাঁ, আমি কী তা অস্বীকার করেছি..?ভদ্র বলেই তো পিছে পিছে বলছি, অ*ভদ্র হলে তো মুখের সামনে বলতাম।
কথাটা বলেই ফিচলে হাসলো চিত্রা। চাঁদনী চেয়েও রাগী রাগী মুখ করে রাখতে পারলো না। চিত্রাটা এমনই, যেখানে থাকবে সেখানেই হাসির মেলা বসবে।
চাঁদনী আর চিত্রার কথার মাঝে চোখের গোল চশমাটা ঠেলতে ঠেলতে হরেক পদের ভাজার থালা নিয়ে উপস্থিত হলো অহি। ঘাঁড় অব্দি চুল গুলো গরমে বেশ বিরক্ত করছে তাকে। অহির মুখমন্ডলে একটা নিষ্পাপ নিষ্পাপ ভাব থাকে সবসময়। আর মেয়েটা বেশ গম্ভীরও।
বড় পিতলের থালাটার মাঝে সাত রকমের ভাজি। ভারী থালাটা চাঁদনীর সামনে রেখে ক্ষান্ত হলো সে। সব খাবার আপাতত চলে এসেছে। থালাটা রেখেই ওড়না দিয়ে নিজের মুখটা মুছলো অহি। চেরিকে নিজের দিকে টেনে নিয়ে ছোট্টো কণ্ঠে বললো,
~তোমার খিদে লেগেছে, চেরি? আপা কি তোমাকে খাবার খাইয়ে দিবো?
ছোট্টো চেরি অহির কোমড়ের দিকে জামা আঁকড়ে ডানে-বামে মাথা নাড়িয়ে বললো,
~বড় আপার খাওয়া হোক, তারপর আমি খাবো।চিত্রা আপা খাইয়ে দিবে।
চেরির কথাটা ভালো লাগলো না অহির। বিরক্তিতে নাক-মুখ কুঁচকে বললো,
~তোমার চিত্রা আপা নিজের খাবার নিজে খেতে পারে নাকি? যে তোমাকে খাইয়ে দিবে!
অহির কথায় মুখ ভেংচি কাটলো চিত্রা। চেরির দিকে তাকিয়ে মুখ ফুলিয়ে বললো,
~তোমার মেঝো আপা অনেক খেতে পারে বুঝলা? তাই তো এমন কাঠির লাহান শুকনা।
~এই চিত্রা, কেমন ভাষার ব্যবহার করিস বাড়িতে? তোর সাথে থেকে চেরিও এসব শিখে।
অহির নাক-মুখ ছিটকানো কথায় ফিক করে হেসে দিলো চিত্রা। হাসতে হাসতেই বললো,
~ছোট আপা, তুমি তো শিক্ষক হবে তাই না?তোমার সাথে পার্ফেক্ট মানাবে সেই পেশা।এখনই তোমার মাঝে একটা মাস্টারনি মাস্টারনি ভাব আছে। সমস্যা নাই, তুমি আমাদের দিয়েই প্রথম প্রেকটিস টা করতে পারো। আমরা মাইন্ড করবো না।
চিত্রার কথার তালে চাঁদনীও হাসলো। অহি কপাল কুঁচকে দাঁড়িয়ে রইলো উত্তর বিহীন। চিত্রার সাথে কথা বলা টাই একটা বোকামি। আর অহি বরাবরই নিজেকে ভীষণ চালাক দাবী করে।
পুরো বাগান ভর্তি নিজেদের বাড়ির মানুষেই গিজগিজ করছে। মাত্রই অনুষ্ঠান শুরু হবে। হুট করে কোর্ট প্যান্ট পড়া চাঁদনীর দেবরটা হাজির হলো। ধপ করে বসে পড়লো চিত্রার পাশে। তাকে দেখতেই গুটিয়ে গেলো ছোট্টো চেরি। চিত্রারও হাসি হাসি মুখে অমাবস্যা নামলো। মুখ আঁধার করে সে চাঁদনীর পাশ থেকে উঠে চেরির সাথে দাঁড়ালো।
চাঁদনীর দেবর মহিন সবার দিকে তাকিয়ে কেমন হাসলো। গদোগদো কণ্ঠে চিত্রার উদ্দেশ্যে বললো,
~আরে আরে বেয়াইন সাহেবা,উঠে পড়লেন যে! আমার পাশে বসলে কি ক্ষয় হয়ে যাবে নাকি শরীর?
চিত্রা মুখ বাঁকালো। অন্যদিকে তাকিয়ে বললো,
~আপনার তো অনেক কারেন্ট, যদি শক খেয়ে যাই।
চাঁদনী কোনো মতে নিজের হাসিমুখ বজায় রাখলো। বোনের এমন ভঙ্গির কথা তার যে তত পছন্দ হয় নি সেটা প্রকাশ না করার আপ্রাণ চেষ্টা চালালো।
চিত্রার বড় ভাই তুহিন এগিয়ে এলো বোনদের দিকে। বেশ গম্ভীর স্বরে বললো,
~চিত্রা, যা তো একটু ছাদে, ছাদের মরিচ গাছ থেকে কালো কালো কয়েকটা মরিচ তুলে আন। জানিস না চাঁদনীটা মরিচের ঘ্রাণ পেলেই খুশি হয়ে যায়? যা নিয়ে আয়।
~ভাইজান,বড় আপার পেটের ছোট্টো বাবুটা ঝাল খেতে পারবে?
চেরির প্রশ্নে হাসলো তুহিন। মাথায় আদুরে হাত বুলিয়ে বললো,
~হ্যাঁ খেতে পারবে, চেরি। ও তো খুব সাহসী বাবু, তাই পারবে। ঝাল না খেলে বড় হবে কীভাবে!
~ঝাল না খেলে বড় হওয়া যায় না বুঝি? এ জন্য ই কি বাহার ভাই এত ঝাল খায়? তাই তো বলি বাহার ভাই অত বড় কেন!
তুহিন মিষ্টি হেসে চেরির গাল টেনে দিলো অতঃপর চোখের ইশারায় চিত্রাকে মরিচ আনার তাগাদা দিলো। যেই না চিত্রা যেতে নিবে তন্মধ্যেই চিত্রার বড় চাচী হাজির হয়। ব্যতিব্যস্ত কণ্ঠে বলে,
~আহা, দুপুর হয়ে এলো যে! অনুষ্ঠান শুরু করতে হবে।চিত্রা মা, যা তো বাহারকেও ডেকে আন। এক দৌড়ে যাবি আবার এক দৌড়ে আসবি।যা।
চিত্রা মাথা দুলিয়ে ছুট লাগালো ছাঁদের দিকে। তবে যাওয়ার আগে চেরিকে ছোট আপার সাথে থাকার নির্দেশ দিয়ে গেলো।
✿প্রথম পর্বে প্রথম ধাপ...!🫶🏻
#উপন্যাস
#চিত্ত_চিরে_চৈত্রমাস
#মম_সাহা
1 week ago (edited) | [YT] | 10
View 1 reply
রঙ্গনা🫶🏻
~প্রেয়সীর হৃদয় ব্যাকুল📍
লেখিকা:-নাবিলা ইষ্ক
পর্ব:২
_______________________
~~~~~~~~~~<3~~~~~~~~~~
_______________________
অরু দেখল মোস্তফা সাহেবের রুমের দরজা খোলা৷সে দরজা সরিয়ে মাথা ঢুকালো ভেতরে৷মোস্তফা সাহেব চেয়ারে বসে৷ঢুলছেন একটু একটু করে।মাথাটা নিচের দিক ফেলে রেখেছেন৷সামনে মদের বোতল৷লুকিয়ে মাঝেসাঝে খান একটু৷অরু আলগোছে ভেতরে ঢুকলো৷মোস্তফা সাহেব কারো উপস্থিতি টের পেয়ে চোখ খুললেন৷সোজা হয়ে বসলেন৷
~কিরে এখনো ঘুমাসনি যে...?
বলতে বলতে তিনি দ্রুত মদের বোতল লোকাতে চাইলেন৷কিন্তু অরু তাকে সেটা করতে দিলো না৷মোস্তফা সাহেবকে চেয়ারে ঠেলে দিয়ে বললো,
~আমি উঠিয়ে রাখছি৷বসো তুমি৷
মোস্তফা সাহেব হাসলেন৷তার হয়তো নেশা চড়েছে৷মাথাটা ঝিমাচ্ছে৷কথা বলতেও বেশ কষ্ট হচ্ছে৷একরাশ বিষন্নতা বুকে গেঁথে আছে তার৷অরু মোস্তফা সাহেবের হাত ধরে বললো,
~তন্ময় ভাই,বড় মা'র কথা মনে পড়ছে চাচ্চু..?
মোস্তফা সাহেব হাসলেন৷চোখজোড়া খুলে বুকের বা পাশ দেখিয়ে বললেন,
~খুব ব্যথা হয় এখানটায়৷এই ব্যথার যন্ত্রনা আজকাল সহ্য করা যাচ্ছে না রে৷
অরুর চোখজোড়া ভিজে উঠলো৷মোস্তফা সাহেব বিরবির করতে করতে,সেভাবেই ঘুমিয়ে পড়েছেন৷ অরু তাকে উঠিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলো৷কাঁথা দিয়ে শরীর ঢেকে ফিরতেই দেখলো শাবিহা দাঁড়িয়ে৷মুখে হাত চেপে কাঁদছে।অরুকে ফিরতে দেখে দ্রুত বেরিয়ে গেল সেখান থেকে৷অরু দরজা লাগিয়ে তার পিছু যেতে নিয়েও গেল না৷নিজের রুমের দিক চললো৷শাবিহা এখন একা থাকতে পছন্দ করবে৷আগ বাড়িয়ে সে গিয়ে উল্টো তার কান্না বাড়িয়ে দিবে৷তার থেকে বরং মন হালকা করুক কেঁদে৷নিজের রুমের দরজা লাগিয়ে বিছানায় উবুত হয়ে পড়লো৷হুট করে মনে পড়লো তন্ময়ের কথা৷আজকের খাবারের ছবি তুলেছে সে৷সেগুলো তন্ময়কে দেখিয়ে লোভ লাগাবে৷দ্রুত ছবি গুলো তন্ময়ের মেসেঞ্জারে পাঠাল৷পরক্ষণেই একটি ভয়েস ম্যাসেজ পেলো৷ যেখানে গম্ভীর স্বরে তন্ময় তাকে বল,
~এসে থাপ্পড় মেরে দাঁত ফেলে দিব বেয়াদপ!এটা ম্যাসেজ করার সময়...?
অরুর ছোট মন ভালো হয়ে গেল৷আজকাল তার মন তন্ময়ের ধমকে ভালো হয়ে যায়...🫶🏻
✿দ্বিতীয় পর্বে শেষ ধাপ...!🫶🏻
পর্ব:৩
অরুর নামের একটা ডাস্টবিন আছে৷ডিজাইনার ডাস্টবিন৷যেটার ডিজাইন সে নিজেই করেছে৷ এই ডাস্টবিনের উপরে লেখা 'অরুর পার্সোনাল ডাস্টবিন'এবং ডাস্টবিনটার অবস্থান ড্রয়িংরুমের কোণে৷আসতে যেতে নিলে সবার নজর প্রথমে এই ডাস্টবিনে চলে যাবে৷আগের সময় গুলো হলে এটা দেখলেই তন্ময় একটা লাথি মেরে যেতো৷আবার লাথি মেরে আসতো৷কয়েকবার এটাকে ফেলে দিতেও নিয়েছিলো৷ড্রয়িংরুমের কোণায় এমন হলদেটে একটা ডাস্টবিন কেউ রাখে...?তার উপর ডাস্টবিনটা বিচ্ছিরি ভাবে ডিজাইন করা৷তন্ময় ফেলতে নিয়ে অরুর কান্নাকাটির ঠেলায় পেরে উঠেনি ফেলতে৷এখন এই ডাস্টবিনের কাজ কী..?ডাস্টবিনের কাজ অরুর টিস্যু নেওয়া৷আপাতত ডাস্টবিন অর্ধেক টিস্যু দিয়ে ভর্তি৷ কারণও আছে৷গত পরশু একটি জনপ্রিয় নাটক হয়েছিল আরটিভিতে৷নাটকের নাম 'বড়ো ছেলে'৷অরু সেই নাটক দেখে কেঁদেকেটে শেষ৷টিস্যুর প্রয়োজনে সেদিন ডাস্টবিন অর্ধেক ভর্তি হয়ে গেল৷এইযে সাতসকালে ঘুম থেকে উঠেই,হাতে টিস্যু নিয়ে এসেছে সে৷আকাশ ডাইনিংয়ে বসে ব্রেকফাস্ট করছে৷অরুর হাতের টিস্যু দেখে নাক কুঁচকে বললো,
~ছিঃ...!এই তুই আমার সামনে থেকে সর৷
~এমন ভাব নিচ্ছ যেমন তোমার নাক পিটপিট করেনা...!
~না করেনা৷আমার নাক শক্তপোক্ত৷এসব পিটপিট হয়না৷তোর নাক পাতলা তাই পিটপিট করে৷এক কাজ কর তোর নাক নিয়ে আমার ক্লিনিকে আয়৷সেলাই করে দেই৷নাক পিটপিট দূর হয়ে যাবে৷
অরু কষ্ট পেল৷মনের দুঃখ এবং নাকের পিটপিট নিয়ে মুখ গোমড়া করে ফেললো৷মুফতি বেগম আঁচলে হাত মুছতে মুছতে এগিয়ে আসছেন৷আকাশকে চোখ রাঙিয়ে বললেন,
~এই তুই খেয়ে তাড়াতাড়ি ভাগ৷মেয়েটার পিছু লেগে থাকবি না একদম৷অরু তুই বোস৷খেয়ে নে৷
আকাশ ব্রেড চিবুচ্ছে৷চিবানোর ফাঁকে বললো,
~ও এখনো দাঁত ব্রাশ করেনি মা৷খাচ্চোর মেয়ে৷
অরু রেগে গেল৷
~মাথা গরম করে দিবেনা বলে দিলাম৷
~বলে দিয়ে আমাকে উদ্ধার করে দিলি৷
বলেই হাসতে লাগলো৷অরু রেগে সেখান থেকে চলে এলো৷বারান্দায় ঝুলানো টিয়াপাখিটি ঝিমিয়ে পড়েছে৷অরু দাঁত মাজতে মাজতে উঁকি দিল৷পাখিটিকে চোখ বন্ধ করে রাখতে দেখে এগিয়ে আসলো৷তারপর বেসামাল ভঙ্গিতে খাঁচা খানা নেড়ে দিল৷পাখিটি চেঁচিয়ে বন্দী খাঁচার মধ্যে ধড়ফড় করে উঠলো৷তারপর অরুর বত্রিশ দাঁত দেখে শান্ত হয়ে গেল৷আবারো নিজের যায়গায় বসে ঝিমাচ্ছে৷অরু পাখিটিকে কিছুক্ষণ বিরক্ত করার প্রত্যাশায় রইলো৷তবে পাখিটি বিরক্ত হচ্ছেনা৷নিজের মতো ঝিমিয়ে রয়েছে।
~আনইন্টারেস্টিং টিয়াপাখি তুই৷ধুর...!😒
সম্ভবত তিন বছর হবে পাখিটি তার কাছে৷ছোট টিয়াপাখিটি এখন বড় হয়ে গেছে৷কথা বলতে জানে টুকটাক৷তবে বলেনা৷খুব অলস!একদম অরুর মতো৷নিজের মতো পাখিটিকে হতে দেখে অরু বেশ হতাশ৷পাখিটিকে আত্নবিশ্বাসী,সাহসী,কর্মজীবী করতে চাওয়া তার মন এখন বেশ হতাশ৷টিয়াপাখিটি তাকে তন্ময় এনে দিয়েছিল৷অরুর স্পষ্ট মনে আছে সেই দিনটির কথা৷হয়েছে এমন অরুকে সুমিতা বেগম মেরেছেন৷মারার অবশ্য কারণ রয়েছে৷সুমিতা বেগম আটা গুলিয়ে রেখেছিলেন৷রুটি বানাবেন৷অথচ তিনি এসে দেখেন আটাতে এক গামলা পানি ঢেলে তা মতে যাচ্ছে অরু৷পাকনামি করে মায়ের সাহায্য করতে নেমেছিল বেচারি।ব্যস,রাগের মাথায় অরু বেশকিছু মাইর খেয়েছে মায়ের থেকে।মা'র খেয়ে পেট ভরে গিয়েছে বিদায় সারাদিন কিছুই খেল না৷মূল কথা সে রাগ করেছে।দরজা আটকে ঘরে পড়ে আছে৷কারো ডাকের সারাশব্দ করলো না৷রাতে বাড়ি ফিরে তন্ময় তাকে গম্ভীর স্বরে ডাকে৷অরু মনেমনে তন্ময়কে খুব ভয় পায়৷যা সে কখনো দেখায়না৷শুনেছে ভয় দেখালে ভয় বেশি পেতে হয়৷তাই যখন তন্ময় ডাকল দৌড়ে বেরোয়নি৷তবে সময় নিয়ে ঠিক দরজা খুলে বেরোলো৷তখন তন্ময় তার হাতের পাখি সহ খাঁচাটি অরুকে দিল৷তারপর ধমকের সুরে বললো,
~এক্ষুনি গিয়ে খেতে বোস,যা...!
পাখি পেয়ে খুশিতে অরু দু'প্লেট খাবার একাই খেয়ে নিয়েছিল৷হা হা...!😁
স্কুল ড্রেস পরিহিত অরু কাঁধে ব্যাগ চেপে নিচে নেমে এলো৷দীপ্ত তখন ডাইনিংয়ে বসে৷তৈরি হয়ে গিয়েছে জনাব৷অরু তার পাশে বসে দ্রুত ব্রেকফাস্ট করতে শুরু করেছে৷বাইরে থেকে মারজির কন্ঠ শোনা যাচ্ছে৷
~অরু!তাড়াতাড়ি..!
মারজির ডাকে সে ব্রেড হাতে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো৷পেছনে দীপ্তও অরুর দেখাদেখি একই কাজ করলো৷দুজনের পেছনে সুমিতা বেগম বললেন,
~আরে ঠিক ভাবে খেয়ে যাবি তো...!
তার কথা দুজনের একজনও শুনল না৷মারজি সাইকেল হাতে দাঁড়িয়ে৷পাশে তার ভাই এহসানও এসেছে৷তাদের বাড়ি পাশের লাইনে৷হাতে সময় থাকলে যাওয়ার সময় মাঝেমধ্যে অরু দীপ্তকে সাথে নিয়ে যায়৷তারা প্রায়সময় এক সাথেই যাতায়াত করে৷এমন সময় পাশের বিল্ডিং থেকে অয়ন বেরিয়েছে৷অয়নকে দেখে এহসান হেসে এগিয়ে গেল৷তাদের সাথে যোগদান হলো দীপ্ত৷তাদের তিনজনের পেছনে মারজি আর অরু হাঁটছে৷
~নাকটা এমন লাল হয়ে আছে কেন...?
~আর বলিস না...!
~মজার ব্যাপার ঘটেছে শুনেছিস..?
অরুর নিরাশ চোখজোড়া জ্বলজ্বল করে উঠলো৷
~কী...?
~মুবিন স্যার সুমনার নামে প্রিন্সিপালের কাছে নালিশ দিয়েছেন৷তাকে নাকি সুমনা বিরক্ত করে৷
বলেই হো হো শব্দে হাসতে লাগলো মারজি৷অরু চিন্তিত সুরে বললো,
~শুনেছিলাম তো তাদের রিলেশন চলছে...!
~আর রিলেশন৷মুবিন স্যার হয়তো এই মেয়েকে চিনে ফেলেছেন৷তাই আগাতে নিয়ে ফিরে এসেছেন৷
~তারপর..?প্রিন্সিপাল কোনো অ্যাকশন নিয়েছে..?
~বাবা-মা আনতে বলেছেন৷হয়তো আজ তোর মামা মামী আসবে কলেজ৷
অরুর কপাল জোড়া কুঁচকে গেল৷সে তার মামা মামীকে একদম পছন্দ করেনা৷নানি বাড়ির কাউকে পছন্দ না তার।সবাই ওঁৎ পেতে থাকে তার মা-বাবার মধ্যে ঝামেলা পাকানোর জন্য৷কিন্তু তার মা সেটা একদম বোঝেন না৷ভাইদের সাপোর্ট টেনে যান৷তাই অরু নানি বাড়ি আজকাল আর যায়না৷নানা-নানি বেঁচে নেই নানির বাড়িও নেই তারজন্য।আজ সে সোজা ক্লাসে ঢুকে বসে থাকবে৷একদম সামনে পড়বে না ওই দুজনের৷মারজি অরুর চিন্তিত চেহারা দেখে টপিক পরিবর্তন করার জন্য বললো,
~তন্ময় ভাই আর তোর বড় মা এখনো বাড়ি ফেরেনি..?দু'বছর তো হয়ে গেল।আর কতো...?তোর চাচ্চু কোনো স্টেপ নিচ্ছে না কেন এখনো...?বাবার থেকে শুনলাম তন্ময় ভাইদের বিজনেস খুব ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় আছে৷
দীর্ঘনিশ্বাস ফেললো অরু৷পারিবারিক ব্যাপার গুলো সে সবসময় এভোয়েড করে৷আজও একই কাজ করেছে৷মারজির কাঁধে মাথা রেখে চুপ রইলো৷তার চাচ্চুর কষ্ট সে নিতে পারছেনা৷সে জানে তার বড় মাও খুব কষ্টে আছে৷তন্ময় ভাইও খুব যন্ত্রনায়৷বাড়ির সবাই জানে তন্ময় ভাই তার বাবাকে কতটা ভালোবাসে এবং সম্মান করে৷ছোট থেকেই সে বাবার পাগল৷বাবার আদরের ছেলে হুট করে বাবার থেকে সরে গিয়েছে৷সেটা কতটা যন্ত্রনা দায়ক বাবা-ছেলের জন্য,তা অরু উপলব্ধি করতে পারছে একটু হলেও৷কিন্তু এখানে কারো কিছু করার নেই৷তারা নিজেরা যদি এই দ্বিধা,ক্ষোভ, অভিমানের দেয়াল না ভাঙে তাহলে অন্যকারো ভাঙার সাধ্য নেই৷কলেজের সামনে পৌঁছে অরু লুকিয়ে পড়লো৷মারজি অরুর পেছনে৷সেও দেখছে কল্লা বের করে৷সুমনা তার মা-বাবার সাথে দাঁড়িয়ে কাঁদছে৷তাদের ঘিরে ধরেছে শত স্টুডেন্টস৷
দীপ্ত চোখমুখ অন্ধকার করে ফেলেছে৷বিরক্ত নিয়ে বললো,
~তাদের দেখে কি এভাবে লুকিয়ে থাকবে নাকি...?ঘন্টা বেজে যাবে৷চলো ভেতরে দেরি হবে নাহলে৷
~দাঁড়া একটু৷ যেয়ে নেক৷
~যাবে বলে মনে হয়না৷ তোর জন্যই দাঁড়িয়ে৷
মারজির কথায় যুক্তি আছে৷ অরুর মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি চাপলো৷ গোলগাল চোখ করে প্রশ্ন করলো,
~বাংক দিবি..?চল ঘুরতে যাই৷
দীপ্ত চেঁচিয়ে উঠলো,
~খবরদার।আমি কিন্তু বিচার দিব চাচ্চুকে।
~দিস...!আপাতত তুই যা ভাগ৷
দীপ্ত চোখ রাঙাল৷
~তোমরা না গেলে আমিও যাচ্ছিনা৷
আচমকা তাদের পেছনে অয়ন এসে দাঁড়ালো৷নীচু সুরে বললো,
~আমিও তাহলে আজ বাংক দিব ভাবছি৷
খুশিতে অরু সাতসকালে চাঁদ দেখতে পারছে ৷কিন্তু কথা হলো,কোথায় যাবে...?দুশ্চিন্তায় থাকা সে হুট করে বললো,
~আপুকে সারপ্রাইজ দিতে যাই আপুর অফিসে..?এটা কেমন হবে..?আশপাশ ঘুরতে ঘুরতে যাবো৷আমাদের ঘুরাফেরাও হয়ে যাবে৷
রাজি হলো সবাই৷সঙ্গে সঙ্গে অরু,অয়ন, দীপ্ত মারজি একই গন্তব্যের জন্য রওনা হলো৷নিজেদের সাইকেল নিয়ে স্টেশনের সামনে এসে থামলো৷অরু বললো,
~অয়ন ভাইয়া তুমি রাস্তা চেনো...?আমি কিন্তু চিনি না৷
~সমস্যা নেই আমি চিনি৷চল...!
✿তৃতীয় পর্বে প্রথম ধাপ...!🫶🏻
#উপন্যাস
#প্রেয়সীর_হৃদয়_ব্যাকুল
#নাবিলা_ইষ্ক
1 week ago (edited) | [YT] | 11
View 1 reply
রঙ্গনা🫶🏻
~প্রেয়সীর হৃদয় ব্যাকুল📍
লেখিকা:-নাবিলা ইষ্ক
পর্ব:২
_______________________
~~~~~~~~~~<3~~~~~~~~~~
_______________________
-:তন্ময় ফিরেছে শুনে অরু কান পেতে৷কিন্তু স্পষ্ট কোনোকিছুই শুনতে পারছেনা।এতো ছোট স্বরে কথা বলে এই লোক..!টেবিলে বসে কান পেতে থাকলে শোনা যাবেনা৷আর এমন আধোআধো স্বরের কন্ঠ অরুর শুনতে বিরক্ত লাগে৷তাই সে টেবিল ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো৷ছোট ছোট পায়ে দরজার পর্দা দ্বারা আড়াল হয়ে কান পেতে দিল।তন্ময় তখন জুতো খুলছে দুয়ারের সামনে৷জবেদা বেগম ছেলের ব্যাগ হাতে দাঁড়িয়ে৷ তন্ময় বললো,
~ভালো কাজের লোকের সন্ধান পেয়েছি৷কাল আসতে বলবো...?
~আবার একই প্রসঙ্গ...?এতটুকু কাজ আমি একাই করে নিতে পারি৷সারাদিন বাসায় একাই বসে থাকি৷কাজের লোকের প্রয়োজন নেই৷
~একা থাকো বিদায় তো বলছি।সাথী পেয়ে যাবে কথা বলার৷
~না দরকার নেই৷
~তাহলে তুমি আমার কাপড়চোপড়ে হাত দিবেনা৷আমি নিজেরটা নিজেই ধুয়ে নিব৷
জবেদা বেগম অসহায় হয়ে পড়লেন।তন্ময় আবারো বললো,
~তোমার কোমরে সমস্যা৷ডাক্তার না করেছে বসে কাজকর্ম করতে৷এখন তুমি যদি এসব ধোয়ামোছা করো,কীভাবে হবে মা..?এমন বাচ্চাদের মতো জেদ ধরে থাকলে হয়...?
ছেলের গম্ভীরমুখ দেখে জবেদা বেগম আর তর্ক করলেন না৷বরং রান্নাঘরের দিক যেতে নিচ্ছিলেন৷তন্ময় পেছন থেকে জবেদা বেগমের চোখের সামনে,আজকের নিউজপেপার মেলে ধরলো৷শাবিহার ছবি দেখে তিনি ভড়কে গেলেন৷তন্ময়ের হাত থেকে নিউজপেপার নিয়ে পড়তে শুরু করলেন৷মেয়ের সম্পর্কে এতো সুন্দর প্রশংসা পত্রিকায় ছেপেছে দেখে,তার চোখজোড়া ভিজে উঠেছে৷আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে আর্টিকেল বেশ কয়েকবার রিপিট করে পড়ছেন৷তন্ময় হেসে রুমের দিক পা বাড়ালো৷অরু সঙ্গে সঙ্গে টেবিলে গিয়ে বসেছে৷রুমে ঢুকে অরুকে এভাবে দেখে তন্ময় চমকে গেল৷অরুর আশেপাশে বইয়ের থেকে বেশি অপ্রোয়জনীয় জিনিসপত্র৷রুমাল,টিস্যু,ওড়না সাউন্ড বক্স৷এতকিছুর সামনে তন্ময় অরুর চেহারা দেখতে পারছেনা৷
~এসব কী করে রেখেছিস..?
অরু মাথা তুলে তাকাল না৷ বইয়ে নজর রেখে বললো,
~প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সামনে রেখেছি৷দরকার পড়ে আমার৷
এই পাগলকে জবাব দিলো না তন্ময়৷সে বই নিজের কাছে নিয়ে একটা নতুন চ্যাপ্টার বের করে অরুর সামনে দিয়ে বললো,
~দেখ সলভ করতে পারিস নাকি৷ভুল হলে সমস্যা নেই।আমি এসে বুঝিয়ে দিব৷
অরু মাথা দোলাল।তন্ময় বাথরুমে গিয়েছে৷সেদিকে নজর বুলিয়ে বইয়ের দিক তাকাল৷জবেদা বেগমের চোখজোড়া তখনো লাল৷তিনি এসে প্রশ্ন করলেন,
~তোর জন্য কফি করবো...?
~বড়ো মা শুধু এক গ্লাস পানি৷
~আচ্ছা৷
তন্ময় যখন বেরিয়েছে অরুর সামনে তখন একটি পানির গ্লাস৷সে এতটাই ব্যস্ত পড়ালেখায় যে পানিটুকু খায়নি৷তন্ময় জবেদা বেগমের থেকে কফি নিয়ে এসেছে৷অরুর পাশের চেয়ারে বসেছে সবে৷তখনই অরুর হাত লেগে পানির গ্লাস অসাবধানতা বসত তন্ময়ের উপর পড়লো৷তার সাদা টি-শার্ট ভিজে বুকের দুপাশের কয়লা স্পষ্ট ফুটে উঠেছে৷এবারো অরু হন্তদন্ত হয়ে তন্ময়ের বুক পরিষ্কার করতে নেমেছে৷তন্ময়কে ঠেলেঠুলে তার পরিষ্কারের কার্যক্রম চলছে৷আর না নিতে পেরে তন্ময় চেঁচিয়ে উঠলো,
~অরু......!
আচমকা ধমকে অররু কেঁদে ফেলল৷ কাঁদতে কাঁদতে বললো,
~সরি ভাইয়া।দেখি নাই আমি৷
~তুই দেখিস কী....?আমার মাথা...!গাধা একটা৷তোর মতো এমন মেসি পার্সন আমি আমার লাইফে আর দুটো দেখিনি৷
অরুর কান্নাকাটির শুব্দ শুনে জবেদা বেগম চলে এসেছেন৷
~কী হয়েছে..?
~হয়েছে আমার মাথা৷
বলেই তন্ময় রুম থেকে বেরিয়ে গেল৷এদিকে অরু টিস্যু নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে নাক পরিষ্কার করে জবেদা বেগমের দিক তাকাল,
~তুমি বলো বড়ো মা৷পানি পড়েছে এটা কি আমার দোষ..?পানি চেয়েছি আমি,দিয়েছ তুমি,পড়েছে তার গায়ে৷তারমানে আমরা তিনজন সমান অপরাধী৷অথচ সে আমাকে ধমকে রাখলো না কিছু..!
জবেদা বেগম অরুর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
~থাক কাঁদিস না৷কাজ থেকে এসেছে তাই মাথা গরম৷এবার হাতপা সামলে রাখবি কেমন..?
অরু মাথা দুলিয়ে আবার চেয়ারে বসলো৷তন্ময় টি-শার্ট পরিবর্তন করে এসেছে৷দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে চেয়ার টেনে পাশে বসলো।অরুর সামনে থেকে বই নিয়ে কয়েকটি টপিক দাগাল করার জন্য৷সে খাতা কলম নিজের দিক নিয়ে বোঝাতে শুরু করেছে৷অরু নাক টেনে টেনে বোঝার চেষ্টা করছে৷তবে পারছে না৷নাক টানার শব্দে তন্ময়ের অর্ধেক কথাই সে শুনতে পারছেনা৷তন্ময় শব্দ করে কলম টেবিলে রেখে বলল,
~তুই বাথরুমে যা৷গিয়ে কান্নাকাটি,নাক পরিষ্কার আরো যত কাজ আছে সেড়ে আয়৷যা...!
অরু আরেকটু শব্দ করে কেঁদে বাথরুমের দিক হাঁটা দিল৷বাথরুমের ভেতরে ঢুকে নিজেকে আয়নায় দেখে তার কান্না থেমে গেল৷
~ইশ কী বিশ্রী৷এভাবে কেউ কান্না করে..?🙂
অরু মুখ ভালোমতো দেখে কয়েকটি সুন্দর পদক্ষেপ ট্রায় করছে কান্নার।অবশেষে নিজেকে গুঁছিয়ে নিয়ে বেরোলো৷তন্ময় তখন নিজের অফিসের ডকুমেন্টস দেখছে৷অরুকে দেখে বললো,
~বোস৷
অরু বসলো নিজের যায়গায়।আবারো পড়ায় মনোযোগী হলো৷তন্ময়ও তাকে মনোযোগ সহকারে ম্যাথম্যাটিকস বোঝাচ্ছে৷এমন সময় অরুর নাক আবারো পিটপিট করছে৷বোঝে উঠবার আগেই সে হাচি দিয়ে উঠলো৷তন্ময় পাথরের ন্যায়ে কিছুক্ষণ বসে থেকে উঠে চলে গেলো৷ যাওয়ার পূর্বে বললো,
~যা,বাসায় যা৷গিয়ে হাচি,কান্না যা আছে শেষ কর কালকের মধ্যে৷
অরু মুখ ভেঙিয়ে ব্যাগ গোছাতে শুরু করেছে৷কত্তো ভাব লোকটার৷এই একটু ঝামেলা তো আজকাল হয়েই থাকে৷সাধারণ বিষয়৷এতো রিয়েক্ট করার কী আছে..?🙄অরু ব্যাগ কাঁধে বেরিয়ে পড়লো৷যাবার সময় তার হাতে জবেদা বেগম চিংড়ির তরকারি ধরিয়ে দিলো৷এটা তার পছন্দের৷বাটি সাইকেলের সামনে রেখে,সাইকেল চালিয়ে বিল্ডিং থেকে বেরিয়ে গেল৷যেতে নিয়ে সে কয়েকবার হাচি দিয়ে উঠেছে৷পাঁচতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে কফি খেতে নিয়ে তার যাওয়ার পথে তাকিয়ে থাকা তন্ময়কে অরু দেখতে পেল না৷সে তখনো তার হাচি,কাশি নিয়ে বড়োই ব্যস্ত৷মোরের সামনে যেতেই সাইকেলের চেইন পড়ে গেল৷মাঝরাস্তায় ঠিক করতে ইচ্ছে হচ্ছে না বলে সাইকেল থেকে নেমে গেল৷সাইকেল হাতে চালিয়ে হেঁটে হেঁটে যাবে ডিসিশন নিল৷আসলে অরুর তন্ময় ভাই এতটা শান্ত কোনো কালেই ছিলো না৷গম্ভীর এবং অশান্ত প্রকৃতির লোক তিনি৷খুব কম কথা বলত সে৷দরকার ছাড়া তাকে বাড়িতে পাওয়া যেতো না৷সারাদিন নিজের বাবার বিজনেস দেখাশোনার দ্বায়িত্ব নিয়ে রেখেছিল যেমন৷কিন্তু তার পরিবর্তন ঘটে দুবছর আগে৷দু'বছর আগের ঘটনা তাকে একদম পরিবর্তন করে দেয়৷অরু সেই পরিবর্তনের সৎ ব্যবহার করছে৷ব্যবহার বললে ভুল হবে হয়তো।অরু ছোট থেকেই এমন৷ভীষণ ব্যাকুল এবং চঞ্চল স্বভাবের৷কোনোকিছু করতে গেলেই তার খিচুড়ি বানিয়ে ফেলে৷এরজন্যই হয়তো সে সকলের আদরের৷ এই চঞ্চল তাকে সবাই একটু বেশিই ভালোবাসে৷
~~~~~~~~~~~~~
রিক্সা এলাকার মোরে থেমেছে৷শাবিহা নেমে টাকা পরিশোধ করলো৷রিক্সা সামনে থেকে যেতেই সে এগিয়ে চললো৷যাবার পথে অয়নকে দেখল৷দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে৷ঠোঁটে সিগারেট গুঁজে ছিলো৷শাবিহাকে দেখে সেটা পিঠের পেছনে লুকিয়ে ফেললো৷মুখের সামনের ধোঁয়া গুলো সরাতে ব্যস্ত সে৷শাবিহা দেখেও না দেখার ভান করে এগোচ্ছে৷অয়ন বন্ধুদের ফেলে শাবিহার পিছু চলে এসেছে৷একহাত দূরত্ব রেখে শাবিহার পেছনে হাঁটছে৷হুট করে ধীর কন্ঠে গানের কয়েকটি লাইন গাইল৷
❝এই পথ যদি না শেষ হয়,
তবে কেমন হতো তুমি বলোত৷❞
শাবিহার পা জোড়া থেমে গেল।অয়নও ভড়কে নিজ যায়গায় দাঁড়িয়ে পড়লো৷চোরের মতো এদিকসেদিক তাকাতে লাগলোা।শাবিহা ঘুরে অয়নের সামানে দাঁড়ালো৷বললো,
~তোমার সাথে কথা আছে৷ রাতে ছাঁদে থেকো৷
~জি আচ্ছা৷
শাবিহা দ্রুত পায়ে চলে যাচ্ছিল৷ অয়ন বললো,
~ব্যাগ গুলো আমি নেই..?
~প্রয়োজন নেই৷
শাবিহা ব্যাগ গুলো শক্ত করে ধরে এগিয়ে চলেছে৷পেছনে ঠাই দাঁড়িয়ে অয়ন৷তারপর দৌড়ে আবারো শাবিহার পেছনে চলে এসেছে৷একহাত দূরত্ব বজায় রেখে হেটে চলেছে৷শাবিহা বাড়ির সামনে এসেও দেখল অয়ন তার পিছু৷তবুও কিছু বললো না৷কেচি গেইট খুলে ভেতরে গিয়ে আঁড়চোখে দেখল অয়নও তার পিছুপিছু আসছে৷শাবিহা রেগে বললো,
~ঘরে আসতে বলিনি৷
~ওহ্৷আমাকে অরু ইনভাইটেশন দিয়েছিল৷বললো ন'টায় চলে আসতে৷ট্রিট দিবে নাকি..!
~এই মেয়েটা...!
শাবিহা হনহনিয়ে ভেতরে ঢুকছে৷অয়ন হেসে সদরদরজা টপকে বেরিয়ে গেল৷সে তো যাবে তবে এভাবে নয়,ছাঁদ দিয়ে৷পেছন পেছন বাড়িতে ঢুকেছে নেহাতি শাবিহাকে জ্বালাতে৷এদিকে শাবিহা ঢুকে পেছন ফিরে দেখল কেউই নেই৷তাহলে কী মিথ্যে বললো ছেলেটা...?ড্রয়িংরুমে সবাই বসে৷অরু,রুবি,আকাশ,দীপ্ত৷সব কয়টা ওঁৎ পেতে তার অপেক্ষায় বসে।শাবিহাকে দেখেই অরু লাফিয়ে উঠলো৷একপ্রকার নিজেকে ছুড়ে মারল তার শরীরে৷টকটকে লাল নাক শাবিহার বুকে ঘষে বললো,
~কংগ্রাচুলেশনস বাবুন৷🥰
~থ্যাংকিউ আমার টিমটিম৷
দীপ্ত দৌড়ে শাবিহার হাত চেপে ধরেছে৷
~আমাকে থ্যাঙ্কিউ দিবেনা..?
~থ্যাংকিউ নুডলস৷
~ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম৷
~বাবা ফেরেনি..?
~না৷
অরু দীপ্তকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে খাবারের জিনিসপত্র গুলো ডাইনিংয়ে রাখল শাবিহা৷সুমিতা বেগম এক গ্লাস পানি নিয়ে আসলেন৷শাবিহার হাতে দিয়ে তার থেকে অফিস ব্যাগ নিজের হাতে নিলেন৷প্রশ্ন করলেন,
~খাবার এগুলো গরম করে দিব..?
~না চাচি৷এগুলো গরম৷মাত্রই অর্ডার করে বানিয়ে এনেছি৷
~আচ্ছা৷এই তোরা সর বসতে দে মেয়েটাকে৷
অরু বললো,
~মা আমরা এগুলো নিয়ে ছাঁদে গেলাম৷আড্ডা দিব৷
সুমিতা বেগম এই পাগলদের চক্করে পড়তে চান না৷আলগোছে চলে যাচ্ছেন৷শাবিহা নিজের রুমের দিক চললো৷গোসল নিয়ে তারপর সেও জয়েন হবে ভাইবোনদের আড্ডায়৷এদিকে পাটি থেকে ধরে যেসব জিনিসপত্র প্রয়োজন সবকিছু ছাঁদে নিচ্ছে অরু,রুবি এবং দীপ্ত৷তাদের হাতাহাতি কাজে সবকিছু মুহুর্তেই ছাঁদে আনতে পেরেছে৷আর অলরেডি ছাদে আকাশ বসে৷সে মুলত খাওয়ার জন্যই বসে৷খাওয়াদাওয়া শেষে তাকে আর পাওয়া যাবেনা৷এসব আড্ডা তারজন্য নয়৷কিন্তু যখন পাশের বিল্ডিং থেকে অয়ন লাফিয়ে এলো,আকাশ নিজের চিন্তাভাবনা পাল্টাল৷তারা দুজন মিলে আলাপ-আলোচনায় বিভোর৷কিন্তু একসময় জরুরি ফোনকল আসায় আকাশকে যেতে হবে।শাবিহা যখন ছাদে এসেছে আকাশ চলে গেছে৷আপাতত অরু,অয়ন,দীপ্ত এবং রুবি বসে৷শাবিহা অরুর পাশে বসলো৷তখনই সাউন্ড বক্স ছেড়েছে দীপ্ত৷একটি রোমান্টিক গান বাজছে৷কোক সকলের জন্য গ্লাসে ঢেলে,পিজ্জার বক্স খোলা হলো৷অমনি সবাই হামলে পড়েছে৷অরু পিজ্জার স্লাইস মুখে ঢুকিয়ে কেশে উঠলো৷দীপ্ত কোকের গ্লাস এগিয়ে দিয়ে বললো,
~তোমার কাশাকাশি যাবেনা..?
~যেভাবে বলছিস যেমন আমি সারাদিন কাশি..?
~সারাদিন কাশো না তবে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কাশতে কাশতে মানুষের মাথা গরম করে দাও৷
অরু এবারও মুখ ভেঙাল৷খাওয়াদাওয়ার মাঝে টুকটাক কথা চলছে৷আড্ডা শেষ হতে খুব রাত হয়েছে৷শাবিহা সবাইকে জিনিসপত্র ধরিয়ে
বললো,
~যা ঘুমিয়ে পড়৷
অরু আঁড়চোখে কয়েকবার পিছু তাকিয়ে চলে গেল৷অয়ন ছাদের শেষপ্রান্তে দাঁড়িয়ে৷চাঁদ ঠিক তাদের মাথার উপর৷ঘনঘন হাওয়া বইছে৷শাবিহা তার পাশে দাঁড়ালো৷প্রশ্ন করলো,
~আমার বয়স জানো..?
আজ অয়ন নিজেকে প্রস্তুত করে এনেছে৷তাই এই প্রশ্নে হিমশিম খায়নি৷বরং চাঁদের থেকে নজর সরিয়ে শাবিহার দিক রাখল৷জবাবে বলল,
~বয়স দিয়ে কিছুই হয়না৷মন বয়স মানে না,না মানে জাত,ধর্ম৷
~এতটুকু বয়সে কবিতা বলা খুব সহজ৷দুনিয়া দেখেছ কতটুকু..?
~যতটুকু দেখেছি ততটুকুতে না হলে,আমি পুরো দুনিয়া দেখতে প্রস্তুত৷
শাবিহা দীর্ঘনিশ্বাস ফেললো৷
~দেখ অয়ন।এসব বাচ্চামো ছেড়ে দাও৷তুমি আমাদের চেনাজানা৷ছোট ভাইয়ের মতো৷তোমাকে এগুলোতে মানায় না৷
~আমিতো আপনাকে বোনের মতো মানিনা৷
~মানতে শেখ৷
~আপনি তো আমার আপন বোন না৷কেন মানব...?
~না মানো বোন৷কিন্তু আমি তোমার বড় সেটার রেসপেক্ট তো করবে...?
~করছি বলেই আপনার থেকে আমি এখনো একহাত দূরে দাঁড়িয়ে৷রেসপেক্ট করি বলেই আপনি বলে সম্বোধন করছি৷রেসপেক্ট করি বলেই এখনো আপনাকে মনের কথা বলিনি৷আমি আপনাকে রেসপেক্ট করি৷
~বেশ ভালো৷সেই রেসপেক্ট ধরে রেখেই এসব আজেবাজে চিন্তাভাবনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল।
~চেষ্টা করেছি৷হয়না৷
~অয়ন...!
~আপনি আমার নাম উচ্চারণ করলে শুনতে ভালো লাগে৷😶
~তোমার থেকে আমি চার বছরের বড়৷
~তাতে কী..?বললাম তো বয়স দিয়ে মনের বিচার করা যায়না৷
~তোমাকে আমি প্রত্যেকদিন বোঝাতে আসবো না৷শুধু বলে রাখি তোমার এসব চিন্তাভাবনা সরিয়ে ফেল,আমার ভাই জানার আগে৷
~মারবে আমাকে...?
শবিহা চোখ রাঙাল৷ দ্রুত পায়ের গতিতে সেখান থেকে চলে যাচ্ছে৷অয়ন কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলো৷তারপর লাফিয়ে নিজেদের ছাদে চলে গেল৷সেখানেই বসে রইলো৷ছাঁদ থেকে নামলো না৷
✿দ্বিতীয় পর্বে প্রথম ধাপ...!🫶🏻
1 week ago | [YT] | 10
View 3 replies
রঙ্গনা🫶🏻
~প্রেয়সীর হৃদয় ব্যাকুল📍
লেখিকা:-নাবিলা ইষ্ক
পর্ব:১
_______________________
~~~~~~~~~~<3~~~~~~~~~~
_______________________
-:তন্ময় বাইক স্টার্ট করে যেতেই অয়ন ও বাইক স্টার্ট করে পেছন পেছন চললো৷বসুন্ধরার সামনে একটা রেস্টুরেন্টে বাইক থামাল৷অয়নও এসে পাশেই থেমেছে৷তন্ময় বাইক লক করে হেলমেট এবং চাবি নিয়ে শাবিহার দিক তাকাল৷সারাদিন কাজ করে শাবিহার চোখমুখ ক্লান্ত৷বোনের কাঁধ চেপে রেস্টুরেন্টের ভেতরে নিতে নিতে তন্ময় বললো,
~কী দরকার এতো কষ্ট করার..?পড়াশোনা মন দিয়ে কর শুধু৷
~তোমারও তো এতো কাজ করার প্রয়োজন নেই৷ বাবার এতো টাকাপয়সা ফেলে, কেন করো?
~তুই জানিস কেন করি...!
~তাহলে তুমিও জেনে নাও আমি কেন করি৷
তন্ময় তর্ক করতে জানেনা৷অল্পতেই হাড় মেনে যায়৷একটি সাইলেন্ট কর্নার বেছে নিল৷সেখানেই তিনজন বসলো৷শাবিহা বসে তন্ময়ের ঘামে ভেজা মুখ দেখে মন খারাপ করে ফেললো৷কখনো গাড়ি ছাড়া চলাচল না করা তার ভাই এখন এতো কষ্ট করে অফিস করে ভাবতেই,শাবিহার শ্বাস আটকে আসছে৷ ব্যাগ থেকে রুমাল বের করে তন্ময়ের কপালের ঘাম মুছে দিল৷
~অফিসে অনেক প্রেসার বুঝি..?
~হ্যাঁ একটু আকটু৷
~মা কেমন আছে..?
~ভালোই৷ তোর চিন্তা করে সারাদিন৷
~বাবার কথা জিজ্ঞেস করবে না ভাইয়া..?
তন্ময় ওয়েটার ডাকল৷শাবিহার কথাটি সম্পুর্ন অগ্রাহ্য করলো৷শাবিহা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে চোখ ফেরাতেই অয়নের উপর নজর পড়লো৷তার দিকই তাকিয়ে ফ্যালফ্যাল করে৷চোখ দিয়েই খেয়ে ফেলবে যেমন৷শাবিহার ইদানীং মনে হচ্ছে এই ছেলে নিজ থেকে থামবে না।তাকে খোলাখুলি ওর সাথে কথা বলতে হবে৷তন্ময় মেনু এগিয়ে দিয়ে বললো,
~কি খাবি অর্ডার দে৷
শাবিহা বললো,
~ট্রিট তো আমার দেওয়ার কথা..!
~তুই ট্রিট দিবি তাও আমাকে..?
~আমাকে এখনো ছোট ভেবে রেখেছ...?
~আমার কাছে ছোট্টো তুই...!
~হু৷
ওয়েটার অর্ডার নিয়ে যেতেই তন্ময় এবার অয়নের দিক ফিরল৷
~পড়াশোনা কেমন চলছে অয়ন..?
~ভালো ভাই৷
~একমাত্র ছেলে তুই তোর বাবার৷অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা তোর উপর৷তাই মন দিয়ে পড়াশোনা করবি৷
~জি৷
~তা প্রেম-ট্রেম করছিস নাকি...?
~ন..না ভাই৷একদম না৷
~কেন কাউকে ভালো লাগেনা..?
~ভালো তো লাগে৷
~কাকে..?
~আছে একজন৷কিন্তু এগোনোর সাহস পাচ্ছিনা৷
~আজকাল প্রপোজ করতে সাহস লাগে নাকি..?
~না আমার পছন্দের মানুষ খুব রাগী স্বভাবের৷যদি উল্টাপাল্টা রিয়েকশন করে...?
শাবিহা কেশে উঠলো৷তন্ময় কথা বন্ধ করে এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিলো৷পানি খেয়ে নিজেকে শান্ত করে শাবিহা টপিক ঘুরিয়ে ফেললো৷
~ভাইয়া আমি কিছু পার্সেল নিব অরুদের জন্য৷এখন নিলে তো ঠান্ডা হয়ে যাবে তাই না..?ভাবছি ছুটি হলেই নিয়ে ফিরবো৷ওদের আজ ট্রিট দিতেই হবে৷আমার অপেক্ষায় নিশ্চয়ই বসে একেকটা৷
তন্ময় বললো,
~এই অরু পড়তে আসছে না যে..?
~কি জানি..!
~গিয়ে বলিস আজ টাইম মতো চলে আসতে৷
~তুমি ওকে কেন পড়াচ্ছ..?এভাবেই সারাদিন অফিস করো৷বাসায় ফিরে রেস্ট করবা তা না..!তুমি জানো অরুর দেখাদেখি এখন দীপ্তও তোমার কাছে পড়তে চায়...?
তন্ময় হেসে বললো,
~ও তো ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট৷ওকে আমার পড়াতে কেন হবে..?অরু হায়ার ম্যাথম্যাটিকসে বেশ দুর্বল৷টিচার্সদের পড়ানো বোঝেনা বিদায় ওকে আমার আলাদা পড়ানো...।
~~~~~~~~~~~~
সাতটা ত্রিশে অরু কাঁধে ব্যাগ চেপে বেরিয়েছে৷তার উদ্দেশ্য তন্ময়ের বাসা৷ বেশিদূর না এখান থেকে৷সাইকেল করেই চলে যাওয়া যায়৷এতক্ষণে নিশ্চয়ই তন্ময় কাজ থেকে চলে এসেছে...?অরুর একটু সংকোচ অনুভব হচ্ছে৷কিন্তু এতো সংকোচ অনুভব করলে,হায়ার ম্যাথম্যাটিকসে আবারো চল্লিশের নিচে পাবে৷তন্ময় ছাড়া সে কারো থেকে পড়া বুঝে না৷তার টিচার্সরা তাকে হায়ার ম্যাথম্যাটিকস বোঝায় নাকি গরুর ঘাস খাওয়ায় অরু বুঝে পায়না৷তার তো ইচ্ছে করে সব কয়টা সাবজেক্ট তন্ময় থেকে পড়তে৷ কিন্তু তন্ময়ের সময় কই...?আগের দিন গুলো মনে পড়তে লাগল অরুর৷যখন তারা সবাই একসাথে একই ছাঁদের নিচে থাকতো৷তন্ময়কে ঘুম থেকে উঠেই দেখতে পেতো।সন্ধ্যার পর তন্ময় সবাইকে পড়াতে বসাতো৷কই সেই দিন গুলো..?তাদের পরিবার না ভাঙলে কী চলছিলো না...?এই দন্ড, ঝগড়াবিবাদ না হলে কী পারতো না...?অরু খুব করে চায় বড় চাচ্চু আর বড় মায়ের যেন ভুল বুঝাবুঝি শেষ হয়ে যায়৷আর কত.....?দুটো বছর তো হয়ে গেল৷ আর কত অপেক্ষা...?
অরু একটা আটতলা বিল্ডিংয়ের সামনে সাইকেল থামাল৷তাকে চিনে দারোয়ান ঢুকতে দিলো৷ঢুকে সাইকেল লক করে লিফট ধরলো৷তন্ময়দের ফ্ল্যাট পাঁচতলায়৷সেখানে পৌঁছে কলিং বেল চাপলো৷দরজা খুলে দিয়েছে জবেদা বেগম৷অরুর বড় মা৷অরু ব্যাগ ফেলে জাপ্টে ধরলো তাকে৷
~ভেতরে আয় আগে৷😊
গলা জাপ্টে ধরেই ভেতরে গেল৷ চারপাশে নজর বুলিয়ে বললো,
~কই তন্ময় ভাই..?👀
~আসছে বললো৷ তুই পড়তে বোস৷ এখনই চলে আসবে৷
অরু টেবিলে বসে সরঞ্জাম তৈরি করছে৷প্রথমে চুল বাঁধলো।যেনো চুল টুল কোথাও না উড়ে যায়৷তারপর টিস্যু এগিয়ে রাখল সামনে৷ যদি কাশি চলে আসে...? টিস্যু কাজে দিবে৷কিন্তু বায়ু দূষণ প্রতিরোধ কীভাবে করবে..?সে ভেবে রাখল, বায়ু দূষণ শুরু হবার আগেই উচ্চস্বরে কথা বলে,তন্ময়কে শুনতেই দেবেনা৷
✿পর্ব প্রথমের শেষ ধাপ...!🫶🏻
1 week ago (edited) | [YT] | 13
View 6 replies
রঙ্গনা🫶🏻
~প্রেয়সীর হৃদয় ব্যাকুল📍
লেখিকা:-নাবিলা ইষ্ক
পর্ব:১
_______________________
~~~~~~~~~~<3~~~~~~~~~~
_______________________
:-কিছু মাস ধরে অরু খুব ডিপ্রেশনে আছে৷তার ডিপ্রেশনের কারণ দাঁড়ালো তন্ময়ের সামনে গেলেই কিছু না কিছু উদ্ভট কান্ডকারখানা সে করে বসে৷যা খুবই বিব্রতকর..৷বিব্রতবোধ করতে করতেই মুলত তার ডিপ্রেশন চলে এসেছে৷যেমন প্রতিদিনের মতো গত সপ্তাহে সে তন্ময়ের বাসায় পড়তে গিয়েছিল৷পড়ার একফাঁকে তার হাঁচি এলো৷হাঁচি দিতে গিয়ে খেয়াল করলো...হাঁচির সাথে সর্দি বেরিয়ে গিয়েছে৷এমতাবস্থায় সে হাত আর নাকমুখ থেকে সরাতে পারছে না৷লুকিয়ে ওড়না বা জামায় যে মুছবে তারও উপায় নেই৷তন্ময় সামনেই বসে কফি খাচ্ছিলো৷বিষয়টি তন্ময়ের চোখে পৌঁছাতেই সে পেছন থেকে টিস্যু এগিয়ে দিলো৷তারপর কফি হাতে বেরিয়ে গেল৷বিষন্ন মন নিয়ে নাক পরিষ্কার করা অরুর জীবনে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতি ইদানীং হয়েই চলেছে৷যেমন পরশু তার টেস্ট ছিলো৷তন্ময় তাকে মনোযোগ সহকারে পড়াচ্ছিল..।অরুও মনোযোগ দিয়ে পড়ছে৷তাদের মধ্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ পড়ালেখা চলছে৷এমন সময় অরু শব্দ করে উঠলো৷এখন সেটা কীসের শব্দ ছিলো তা বুঝতে বাকি নেই কারো৷শব্দ শুনেও না শোনার ভাণ করে পড়িয়ে চলেছে তন্ময়৷কিন্তু অরু আর পড়তে পারল না৷হন্তদন্ত ভঙ্গিতে বইপত্র গুঁছিয়ে বেরিয়ে পড়লো৷সেই যে বেরিয়েছে লজ্জায় সে এখনো তন্ময়ের সামনে যেতে পারছে না৷বাড়িতে সারাদিন থাকে তখন তো এটা হয়না৷তাহলে তন্ময়ের সামনে গেলেই কেন হবে?নির্লজ্জ শব্দ একটা।লজ্জায় হতভম্ব অরু নিজের উপরেই চরম বিরক্ত৷বিরক্ত তাকে বিরক্ত করতে চলে এসেছে দীপ্ত৷দীপ্তর হাতে নিউজপেপার৷নিউজপেপারের এক অংশে বড় করে শাবিহার ছবি দেওয়া হয়েছে৷তন্ময়ের ছোট বোন শাবিহা একজন জার্নালিস্ট৷জার্নালিস্ট তাকে পত্রিকায় দেখতে পাওয়া আসলেই প্রশংসনীয়৷আর্টিকেলটায় ছোটছোট শব্দে প্রশংসা করা হয়েছে শাবিহার৷দীপ্ত গলা পরিষ্কার করে উচ্চস্বরে আর্টিকেল পড়তে শুরু করলো৷সম্পুর্নটা শুনে অরু তার বোনের উপর গর্বিত৷ব্যাগে বইপত্র গুঁছিয়ে নিয়ে দীপ্তর সামনে এসে দাঁড়ালো৷দীপ্তর হাত থেকে নিউজপেপার নিয়ে নিজে কয়েকবার দেখল৷
~মাথা নষ্ট করা সুন্দরীকে বুক ভেঙে ফেলার যন্ত্র লাগছে একদম৷আপুর এই ছবিটা কিন্তু আমার ভিষণ পছন্দের...!
~আমারও তো পছন্দের৷
~বড় চাচ্চুকে দেখিয়েছিস..?
~সবাই দেখেছে৷শুধু তুমি মাত্র দেখছ৷
হুট করে অরুর বিষন্নতা আবারো ফিরে এলো৷যদি সে দীপ্তকে বলতে পারতো তার বিষন্ন মনের কারণ তাহলে হয়তো একটু মনে শান্তি পেত৷তারপর ভাবল দীপ্ত ছোট হলেও ছেলে মানুষ৷হেসে তাকে নিশ্চয়ই বলবে,
~ছিঃ...!তুমি বায়ু দূষণ করে ফেললে তাও তন্ময় ভাইয়ের সামনে..?
তখন তো অরু লজ্জায় জিন্দা মরে যাবে৷বিষন্ন মনকে শান্ত করে বললো,
~আকাশ ভাইয়া কোথায়..?বেরিয়েছে...?
~হ্যাঁ..৷
~আপুও বেরিয়েছে..?
~হ্যাঁ..।
~এই আপুকে ফোন করে বল আজ আমাদের ট্রিট দিতে৷
~তোমার বলতে হবেনা৷ এটা আগেই বলে রেখেছি৷আপু বলেছে রাতে ফেরার সময় পিজ্জা কোক এবং বার্গার আনবে সবার জন্য৷
~আচ্ছা।তুই এখনো বাড়িতে কেন..?স্কুল যাসনি...?
~আমার ডায়রিয়া হয়েছে৷আজ বড় চাচ্চু ছুটি নিয়ে দিয়েছে৷
অরুর মন খারাপ হয়ে এলো৷ তার ডায়রিয়া হয়না কেন..?ডায়রিয়া হলে দীপ্তর মতো সেও রেস্ট নিতে পারতো এই সুন্দর ওয়েদারে৷আফসোস পেটে জমিয়ে কাঁধে ব্যাগ চেপে বেরিয়ে পড়লো কলেজের উদ্দেশ্যে৷সাধারণত ড্রাইভার চাচা অরুকে আর দীপ্তকে একসাথে স্কুল দিয়ে আসে৷কারণ তাদের স্কুল,কলেজ এবং ভার্সিটি একসাথেই৷তবে মাঝেমধ্যে অরু বাইসাইকেল করে কলেজ যেতে সাচ্ছন্দ্য অনুভব করে৷যেমন আজ সে সাইকেল নিয়ে চললো৷হুট করে তার আরেকটি বিব্রতকর পরিস্থিতি মনে পড়লো...🙂মাস খানেক আগের ঘটনা৷অরু তন্ময়ের জন্য নিজে হাতে কফি করেছে এবং কফিটা ঠিক টি-টেবিলের উপরে রেখেছিলো৷তন্ময় গোসল সেড়ে কফি নিয়ে অরুর সামনে বসেছে৷অরুও পড়ার ফাঁকেফাঁকে চুলগুলো আলতো করে গুঁছিয়ে নিচ্ছে৷আশায় আছে কফির প্রশংসা শুনবে তন্ময়ের মুখ থেকে৷তৎক্ষণাৎ মাথা তুলে খেয়াল করলো তন্ময়ের কফির মগে একটা বড় চুল৷যেটা দেখে বোঝা যাচ্ছে তার মাথার৷এই চুল দেখলে তন্ময় কফি আর খাবেনা এরজন্য সে দ্রুত চুলটা সরিয়ে ফেলতে চাইছে৷বুদ্ধি করে এগিয়ে গেল সামনে৷তন্ময় কফি মুখে নিয়েছে আর অরু কফির মগ ধরেছে৷ছোট মগ দুজনের ধরায় দুজনেই একই মুহুর্তে আবার ছেড়ে দিয়েছে৷গরম কফির মগ পড়ল তন্ময়ের গুপ্ত স্থানে....বড়বড় চোখ করে চেঁচিয়ে উঠলো অরু..🙂দ্রুত এগিয়ে গিয়ে ঝাড়তে লাগলো তন্ময়ের গুপ্ত স্থানের উপর৷হতভম্বের মতো কিছুক্ষণ বসে থেকে তন্ময় উঠে দাঁড়িয়ে চলে গেল৷মাথাটা ঠান্ডা হতেই অরুর মস্তিষ্ক জ্বলে উঠলো৷তারপর হাতটা ধরে সে চেয়ে রইলো কিছুক্ষণ৷তারপর হাতটি বিছানায় ফেলে নিঃশব্দে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো৷ওটা কী তার ধরার মতো যায়গা?দুঃখে কষ্টে অরু তারপর একসপ্তাহ পড়তে যায়নি৷🤦♀️সেই লজ্জাজনক পরিস্থিতি মনে করে অরুর ডিপ্রেশন বেড়ে চলেছে৷সাইকেল নিয়ে কলেজের ভেতর ঢুকে মারজিকে দেখল৷সে সাইকেল পার্ক করছে৷অরু ওর পাশে সাইকেল পার্ক করে বললো,
-~ব্যাপার কী তোর..?কাল কলেজ আসলি না যে...?
~ডায়রিয়া...।
~আরে ভাই...! আমাকে বাদে সবার ডায়রিয়া৷ডায়রিয়া কী আমার সাথে শত্রুতা করেছে...? দীপ্তরও ডায়রিয়া হয়েছে৷
~তুই সেধে ডায়রিয়া চাইছিস..?ফালতু মেয়ে..!
~চাইব না..? ডায়রিয়া হলে যদি কলেজ মিস দেওয়া যায়, তাহলে আমি সেটাই চাই৷
~পাগল...!জানিস সুমনা নতুন প্রেম করছে..!
~কার সাথে..?
~স্কুলের সহযোগী শিক্ষক মুবিন স্যারের সাথে৷
অরু নিশ্চুপ হয়ে গেল৷সুমনা তার কাজিন৷কাজিনকে নিয়ে কী কেউ গসিপ করে..?হয়তো কেউ করেনা৷কিন্তু সে করে৷🙂করার অবশ্য অনেক কারণ আছে৷সুমনা আর তার কখনো বনে না৷বনবে কীভাবে..?সুমনার চলাফেরা আর তার চলাফেরায় আকাশপাতাল তফাৎ৷এই মেয়ে দু'একদিন পরপর নতুন প্রেমে জড়ায়৷ওর নামে কতো খারাপ আলাপ-আলোচনা শোনা যায়৷এর উপর বেশ কয়েকবার তন্ময়কে স্যাডুইউসডও করতে চেয়েছে৷তাও তার চোখের সামনে৷তন্ময় কখনো পাত্তা দেয়নি বিদায় সুযোগ পায়নি৷নাহলে অরুর মনে হয় তন্ময়কে নিজের সব বিলিয়ে দিতো,না চাইতেই৷ পেছন থেকে কেউ তার নাম ডাকল৷অরুর সঙ্গে মারজিও পেছনে তাকাল৷অয়ন সাদা শার্ট-প্যান্ট,গলায় টাই ঝুলিয়ে কাঁধে ব্যাগ চেপে এগিয়ে আসছে৷অয়ন তাদের সিনিয়র৷অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে এবার৷আবার তাদের বাড়িও পাশাপাশি৷এক ছাঁদ থেকে অন্য ছাঁদে লাফিয়ে আসা যাবে এমন সিচুয়েশন৷তাদের পরিবারের মধ্যেও বেশ সুন্দর একটা বন্ডিং আছে৷মজার বিষয় হচ্ছে অয়নের পিছেও সুমনা পড়েছিল৷কিন্তু অয়নের পাত্তা পায়নি৷অরু হেসে তাকাতেই অয়ন বললো,
~ট্রিট কই...?🤨
~আমাকে বলে লাভ নেই অয়ন ভাইয়া৷আপুকে গিয়ে বলতে হবে৷জার্নালিস্ট সে,ছবি পত্রিকায় তার ছেপেছে৷পাকাপোক্ত ভাবে নিজেকে স্যাটেলও করে নিচ্ছে।আর তুমি আমার থেকে ট্রিট চাও...?🙄
~তোর আপুকে বুঝি পাওয়া যায়..?
~আজ তাড়াতাড়ি ফিরবে৷ট্রিট দিবে৷ছাদে আমাদের আড্ডা হবে আজ৷তোমাকে ইনভাইটেশন দিলাম৷চলে আসিও৷
অয়নের চোখজোড়া জ্বলজ্বল করে উঠলো৷
~সত্যি...?🥹
~পাক্কা..!👀
~তাহলে আমি কিন্তু চলে আসবো৷ঠিক এক্সাক্ট সময় বল৷
~নয়টা..?
~আচ্ছা৷
অয়ন বন্ধুদের দিক চলে গেল৷যেতে নিয়ে আরেকবার শিয়রিটি দিলো,সে কিন্তু চলে আসবে৷অরু হেসে মাথা দোলাল৷মারজি অরুর পাশ থেকে ফিসফিসিয়ে বললো,
~দেখ সুমনা এদিকে তাকিয়ে৷
অরু হাসলো৷
~ওর ক্রাশ সেধে এসে কথা বলছে আমাদের সাথে তাই জ্বালা করছে ওর৷
দুজনেই অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো৷ হাসতে হাসতে এগিয়ে যাচ্ছে সামনে৷ যেমন আজকের মতো আনন্দ তারা আর পায়নি জীবনে৷
~~~~~~~~~~~~~~
শাবিহা মাত্রই অফিস থেকে বেরিয়েছে৷এখন সন্ধ্যা ছ'টায়৷কিছু খেয়ে আবার অফিসে ঢুকবে৷মুলত তাদের ব্রেক টাইম এখন৷হেঁটে বাস স্ট্যান্ডের সামনে দাঁড়ালো৷রাস্তা পাড় হয়ে ওপার যাবে৷এমন সময় তার ফোন বেজে উঠলো৷স্ক্রিনে 'তন্ময় ভাই' লেখাটি ভেসে উঠেছে৷শাবিহা কল রিসিভ করলো৷
~হ্যাঁ ভাই৷
~কোথায় তুই..?
~অফিস থেকে বেরোলাম মাত্র৷ব্রেক টাইম এখন৷বাস স্ট্যান্ডের সামনে দাঁড়িয়ে আছি৷
~আশেপাশেই আছি৷দাঁড়িয়ে থাক আসছি আমি৷
~আচ্ছা৷
শাবিহা কল কেটে পাশে তাকাল৷তার থেকে কিছুটা দূরে একটি ছেলে দাঁড়িয়ে৷পরনে সাদা হুডি৷আঁড়চোখে তার দিকেই তাকাচ্ছে৷ছেলেটিকে চিনতে সময় লাগলো না শাবিহার৷সময় লাগবে কীভাবে..?দিনে দুএকবার এই ছেলে ওর সামনে চলে আসবে কোনো না কোনো অজুহাত নিয়ে৷সবই বুঝে শাবিহা৷একটা ছেলে বারবার সামনে কেন আসছে বা কেন তাকে ফলো করছে,বা কেন তার দিক বারবার তাকায় এগুলো বুঝতে পারে সে..!বুঝলেই বা কী...? ভাবতেই শাবিহার লজ্জা লাগে৷সে এইবার মাস্টার্স প্রথম বর্ষে৷অয়ন মাত্র অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে৷বাচ্চা ছেলে৷মাত্র গ্রো-আপ করছে৷চেহারায় এখনো বাচ্চামো ভাব৷ক্লিন শেভে তাকে বাচ্চা তো লাগবেই৷তার উপর শাবিহার সন্দেহ জাগে,এই ছেলের মনে হয় এখনো দাড়িও গজায়নি৷নেহাতি বাচ্চা ছেলে৷তার উপর ছোট থেকে ওকে বড় হতে দেখেছে৷খারাপ কোনো ব্যবহার করতেও দ্বিধাবোধ হয়৷একপ্রকার সে জালে আটকে৷একটা কাটা তার গলায় আটকে৷না পারছে কাটা ফেলতে আর না পারছে গিলতে৷প্রতিদিনের মতো অভিনয় সুরে বললো,
~অয়ন তুমি এখানে...?
অয়ন ভদ্র ছেলের মতো এগিয়ে সামনে দাঁড়ালো৷ প্রত্যেকদিনের মতো মিথ্যে একটা বলে দিল৷
~বন্ধুকে ড্রপ করতে এসেছিলাম৷
~ওহ্ আচ্ছা৷
~কংগ্রাচুলেশনস...🥰
~থ্যাংকইউ৷
~ইউ ডিজার্ভ ইট৷
শাবিহা হাসলো৷ হেসে বললো,
~থ্যাংকস৷
তন্ময়ের পৌঁছাতে দশ মিনিট লেগেছে৷তাকে দেখেই বাইকের পেছনে উঠে বসলো শাবিহা৷তন্ময় হুট করে অয়নকে খেয়াল করলো৷যে আপাতত বাইকে বসে এখানে মাত্রই পৌঁছেছে এমন ভঙ্গিমা করছে৷
~তুই এখানে যে..?🤨
~হয়েছে কী ভাই...!🙂বন্ধু সজিবের এখানে দরকার ছিলো৷ড্রপ করতে এসেছিলাম৷
~তুই কী এখন বিজি..?
~না ভাই৷ বাসায় যাচ্ছিলাম৷
~তো আয় আমাদের সাথে৷আজ শাবিহা নামকরা জার্নালিস্টদের মধ্যে একজন হতে পেরেছে৷নিউজপেপার দেখেছিস..?আই এম প্রাউড অব হার৷তাই ওকে নিয়ে রেস্টুরেন্ট যাচ্ছিলাম৷আয় সাথে৷ট্রিট দেই৷
~আচ্ছা ভাই৷
✿পর্ব প্রথমের প্রথম ধাপ...!🫶🏻
1 week ago | [YT] | 12
View 3 replies
রঙ্গনা🫶🏻
Assalamualaikum...!🫶🏻
ভাবছি উপন্যাস দেওয়া শুরু করবো..👀
তো কোনটা দিব যানাবেন...🙌🏻
১.চিত্ত চিরে চৈত্রমাস...🌸
২.প্রেয়সীর হৃদয় ব্যাকুল....🖇️
৩.আমার কাব্যে তুমি প্রেয়সী...👉👈
2 weeks ago (edited) | [YT] | 14
View 19 replies