Karchap Bicher 2.0

সবাইকে সবাইকে শ্রীশ্রী #জগদ্ধাত্রী পূজার প্রীতি ও শুভেচ্ছা 💚❣😇🫠

জগদ্ধাত্রী পূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি বিশেষ পূজা, যা দেবী দুর্গারই একটি রূপ দেবী জগদ্ধাত্রী-কে উৎসর্গ করে পালিত হয়। "জগদ্ধাত্রী" শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো "জগৎ ধারণকারিণী" বা "জগতের পালিকা"।
________________________________________
কবে হয় জগদ্ধাত্রী পূজা?
জগদ্ধাত্রী পূজা মূলত কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের নবমী তিথিতে অনুষ্ঠিত হয়। এটি সাধারণত দুর্গাপূজার প্রায় এক মাস পর আসে। যদিও প্রধান পূজা নবমীতে হয়, তবে দুর্গাপূজার মতোই অনেক জায়গায় ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত এই উৎসব পালিত হয়।
________________________________________
দেবী জগদ্ধাত্রীর রূপ
দেবী জগদ্ধাত্রী ত্রিনয়না, চতুর্ভূজা এবং সিংহবাহিনী। তাঁর চার হাতে থাকে শঙ্খ, চক্র, ধনুক ও বাণ। দেবী সিংহ, যা আবার হস্তীরূপী অসুর (করীন্দ্রাসুর)-এর পিঠে দাঁড়িয়ে থাকে। এই হস্তীরূপী অসুরকে বধ করার জন্যই দেবী জগদ্ধাত্রী আবির্ভূত হয়েছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। তাঁর গলায় নাগযজ্ঞোপবীত দেখা যায়। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষ করে চন্দননগর এবং নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর-এর জগদ্ধাত্রী পূজা তার বিশালতা ও জাঁকজমকের জন্য জগৎ বিখ্যাত।
________________________________________
পূজার পৌরাণিক প্রেক্ষাপট ও ইতিহাস
জগদ্ধাত্রী পূজার পেছনে বিভিন্ন পৌরাণিক ও ঐতিহাসিক কাহিনি প্রচলিত আছে:
• পৌরাণিক কাহিনি: কথিত আছে, মহিষাসুর বধের পর দেবতারা নিজেদের শক্তি নিয়ে অহংকার করতে শুরু করেন। তখন এক যক্ষ রূপে দেবী তাঁদের সম্মুখে আবির্ভূত হন এবং দেবতাদের শক্তি দেখিয়ে দেন যে, তাঁদের শক্তি আসলে দেবীরই দান। এই অহংকার ভাঙার পর দেবতারা দেবীর আরাধনা করেন। এরপর দেবী চতুর্ভূজা রূপে আবির্ভূত হন এবং এই রূপই জগদ্ধাত্রী নামে পরিচিত হন।
• ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগরে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় জগদ্ধাত্রী পূজার সূচনা করেন বলে প্রচলিত। তিনি কারাবন্দী থাকাকালীন স্বপ্নাদেশ পেয়ে কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের নবমী তিথিতে এই চতুর্ভূজা দেবীর আরাধনা করার আদেশ পান। কারামুক্ত হয়ে তিনি এই পূজার প্রচলন করেন। এরপর তাঁর দেওয়ান ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পূজার সূচনা করেন, যা পরবর্তীতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। কৃষ্ণনগরের 'বুড়িমার পূজা' প্রায় ২৫০ বছরের পুরনো এবং এটিও রাজবাড়ির পূজার দেখাদেখিই শুরু হয়েছিল।
________________________________________
পূজা পদ্ধতি ও নিয়ম
জগদ্ধাত্রী পূজা দুই পদ্ধতিতে পালিত হতে পারে:
• দুর্গাপূজার আদলে: অনেক স্থানে দুর্গাপূজার মতোই সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী — এই তিন দিন ধরে পূজা চলে।
• একদিনে পূজা: আবার কোথাও নবমীর দিনই তিনবার (সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী) পূজা সম্পন্ন করা হয়।
পূজার সময় দেবীকে বিভিন্ন উপাচার নিবেদন করা হয়, যেমন ফল, ফুল, মিষ্টি, নৈবেদ্য ইত্যাদি। ভক্তরা ভক্তি সহকারে মন্ত্র পাঠ ও আরতি করে থাকেন।
জগদ্ধাত্রী প্রণাম মন্ত্র:
"ওঁ জয়দে জগদানন্দে জগদেক প্রপূজিতে।
জয় সর্ব্বগতে দুর্গে জগদ্ধাত্রী নমোহস্তুতে।।"
________________________________________
জগদ্ধাত্রী পূজার ফল
বিশ্বাস করা হয় যে, নিষ্ঠা সহকারে দেবী জগদ্ধাত্রীর পূজা করলে ভক্তদের জীবনে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। দেবী তাঁর সন্তানদের সমস্ত বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করেন এবং তাদের দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা পূরণ করেন। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে, এই দিনে কিছু বিশেষ টোটকা বা আচার পালন করলে আর্থিক সমৃদ্ধি আসে এবং জীবনের নানা সমস্যা দূর হয়।
আপনার যদি জগদ্ধাত্রী পূজা সম্পর্কে আরও কিছু জানার থাকে, তবে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।

3 weeks ago | [YT] | 16