🌷Writer Rahi🎀

টম এন্ড জেরি

পর্ব : ১৩
রাহি চৌধুরী তোহা

স্নিগ্ধা সোফায় মন-মরা হয়ে বসে আছে।
আলামিন মিয়া পাশে বসে জিজ্ঞেস করলেন—
~ কী হয়েছে বুড়ির?

স্নিগ্ধা মলিন হেসে বলল—
~ তেমন কিছু না দাদা।

আলামিন মিয়া—
~ দীপ্তের সাথে ঝগড়া হয়েছে?

হঠাৎ পিছন থেকে দীপ্ত চেঁচিয়ে উঠল—
~ তোমরা শুধু আমাকে কেনো দোষ দিচ্ছো?

আলামিন মিয়া আর স্নিগ্ধা একই সাথে পিছনে তাকায়। দীপ্ত এগিয়ে আসতে আসতে বলে—
~ তোমাদের সমস্যা কী? এই শাঁকচুন্নির কিছু হলে আমাকে কেনো দোষ দাও?

স্নিগ্ধা রেগে গিয়ে বলে—
~ ওই বাদর, তোকে কখন কে কী বলল?…
ওহ সরি, বাদর না—ছাগল!

দীপ্তও ছাড়ে না।
~ তুই পেত্নী, শাঁকচুন্নি—সব!

স্নিগ্ধা কটমট চোখে তাকিয়ে বলে —
~ আর তুই বাদর, ছাগল, খাটাশ—সব তুই!

আলামিন মিয়া উচ্চ স্বরে বলে —
~ চুপ করো! বাড়িতে মেহমান আছে—দেখতে পারছো না?

স্নিগ্ধা রেগে ওপরতলায় উঠে যায়।


---

সন্ধ্যা প্রায় ঘনিয়ে এসেছে। চারদিকে আজানের ধ্বনি।
স্নিগ্ধা অজু করে নামাজ পড়ে, তারপর পড়তে বসে। ভবিষ্যৎ নিয়ে তার স্বপ্ন অনেক বড়।
টানা তিন ঘণ্টা পড়ার পর প্রচণ্ড পিপাসা লাগে। রুমে পানি নেই, তাই ওড়না গায়ে দিয়ে নিচে নামে।

রান্নাঘর থেকে পানি খেয়ে ফিরে আসতে গিয়েই হঠাৎ কারেন্ট চলে যায়।

স্নিগ্ধা বিরবির করে বলে —
~ এই কারেন্টওয়ালা বেটার কি ইমান নেই? যখন-তখন কারেন্ট নিয়ে যায়! বরদোয়া দিলাম—জীবনে বউ পাবি না, খচ্চর বেটা!

ঠিক তখনই ড্রয়িং রুমের কোণে কিছু আলো দেখা গেলো। স্নিগ্ধার মুখে হাসি ফুটে উঠল।
~ কে ওখানে?

ইয়াসিন ফোনের লাইট নিজের মুখে ধরে বলে—
~ আমি ইয়াসিন। পরী।

স্নিগ্ধা আস্তে করে বলে —
~ আমার একটা কাজ করবেন প্লিজ?

ইয়াসিন হেসে বলে —
~ অবশ্যই! পরীর জন্য আমি সব করতে রাজি— এমনকি নিজের জীবন দিতেও একবার ভাববো না!

স্নিগ্ধা হাসি মুখে বলে —
~ এখন জীবন দেওয়া লাগবে না, একটু উপরে দিয়ে আসুন।

ইয়াসিন সম্মান করে পাশে রাস্তা ছেড়ে বলে —
~ চলুন পরী।

দু’জন সিঁড়ি দিয়ে উঠছে, আর দীপ্ত সিঁড়ি দিয়ে নামছিল।
দীপ্ত ইয়াসিনকে দেখে বিরবির করে বলে —
~ নাটক যতো সব!

স্নিগ্ধা শুনে বেঙচি কাটে।

রুমের সামনে এসে স্নিগ্ধা বলে —
~ Thank you.

~ Most welcome, পরী।

স্নিগ্ধা রুমে ঢুকতে যাবে, তখন ইয়াসিন ডাকে—
~ পরী…!

স্নিগ্ধা ঘুরে দাঁড়িয়ে বলে —
~ হুম, বলুন?

ইয়াসিন একটু চুল চুলকে দাঁড়িয়ে বলে—
~ কিছু বলার ছিল।

~ হুম বলুন, শুনছি।

ইয়াসিন সোজা হয়ে সাহস সঞ্চয় করে বলে —
~ ভালোবাসি।

স্নিগ্ধা অবাক হয়ে বলে —
~ ক…কি?

ইয়াসিন এক নিঃশ্বাসে বলে —
~ আমি তোমাকে ভালোবাসি। যেদিন প্রথম দেখেছি সেদিনই।
ভয়ে বলতে পারিনি।
সেদিন শাড়ি পরে তুমি আমার শান্ত মনে অশান্তি লাগিয়ে দিয়েছিলে।
বলতাম, কিন্তু দীপ্তের জন্য বলতে পারিনি।

সব বলে চুপ করে গেলো ইয়াসিন।
স্নিগ্ধা স্থির চোখে তাকিয়ে আছে।

ইয়াসিন আস্তে করে বলে—
~ সমস্যা নেই। ভাবার জন্য আজ রাতটা দিলাম। কাল আমাকে জানিও… পরী।

ইয়াসিন চলে যায়।
স্নিগ্ধা কিছু না ভেবে চুপচাপ আবার পড়তে বসে।


---

চলবে…

6 days ago | [YT] | 9