নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ডালিয়াকে তার শ্বাশুড়ি খাদিজা বেগম এক বালতি কাপড় ধুইতে দিয়ে যায়। সকাল থেকে গরমের মধ্যে রান্নাবান্না করে ঘর পরিস্কার করেছে। পেটটা চিনচিন ব্যাথা করছে। ১০ টা বাজে কিন্তু এখনো এক দানা পেটে পরেনি।
ডালিয়া ক্লান্ত কন্ঠে বলে
" মা আমি খাবার খেয়ে নিই, তারপর কাপড় গুলো ধুয়ে দিব। "
খাদিজা বেগম কর্কশ গলায় বলেন
" এতো আইলশামী করো কেন বউ, খাইলে তোমার শইল ভারী ওইয়া যাইব আর কাম করতা পারতা না, এক্ষনই যাও কাপড় কয়ডা ধুইয়া মেইলা দেও। দেরি করলে কাপড় শুকাইতো না, রইদ পইরা যাইবো । "
" মা আমার শরীল টা আজকে ভালো লাগছে না পেটটা ব্যাথা করছে। "
" একদম বাহানা করবা না, পোলা মাইয়া আমরাও পয়দা করছি। এমন সময় কাম কাজ করলে তোমার শরীলের লাইগাই বালা, কাম কাজ না করলে শইল ভারী ওইয়া যাইবো। আমি পোয়াতি আছিলাম বালা ১০ জনের কাম একলাই করছি। "
ডালিয়া আর কিছু না বলে চুপচাপ কাপড় ধুইতে যায়।
৫ ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট ডালিয়া। ' নুসরাত জাহান ডালিয়া ', বাবার আদরের ছোট্ট পরী তাই উনার পছন্দের ফুলের নামের সাথে মিল রেখেই নাম করণ করা হয়েছে । বাবা 'নেওয়াজ মুর্শেদ' কলেজের প্রফেসর। তিন ভাই ভালো মানের চাকরি করে, বোনের ভালো জায়গায় বিয়ে হয়েছে। ঢাকায় তাদের নিজস্ব বাসাবাড়ি। উচ্চবিত্ত বলা চলে। বাড়ি থাকতে এক গ্লাস পানি গড়িয়ে খেতে হয়নি ওর।খেতে না চাইলে মা মুখে তুলে খাইয়ে দিত। আর সেই সুখের জীবনে ভালোবাসা নামক অনুভূতিটা এসে সব কিছু উলোটপালোট করে দিল। আনিস নামক একটা ব্যাকার ছেলে যাকে মন দিয়ে বসেছিল ডালিয়া। বাবা ভাইয়ের পছন্দ হলো না আনিসকে। তারা এই ছেলের কাছে বিয়ে দিবে না তাদের আদরের দোলালিকে। তাদের মতোই একটা উচ্চবিত্ত পরিবারে ঠিক করলো ডালিয়ার বিয়ে। নিজের ভালোবাসার মানুষকে হারানোর ভয়ে বিয়ের আসর থেকে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে আসলো অচেনা শহরে, অচেনা মানুষের ভীরে, ভালোবাসা টানে। বাবা স্ট্রোক করেছিল ডালিয়া পালিয়ে আসবার পরে, ভাইয়েরা তাকে অনেক বুঝিয়ে বাড়ি নিবার চেষ্টা করেছিল কিন্তু সার্থপর ডালিয়ার কাছে ১৯ বছরের স্নেহ ভালোবাসার থেকে কদিনের চেনা ভালোবাসাই বড়, বাবাকে দেখার জন্যও যায়নি সে। এর পর থেকে বাবার বাড়ির আর কেউ খুঁজ নেয়নি ডালিয়ার,ওদের জন্য ডালিয়া মৃত । ডালিয়া নিজে তাদের সাথে কথা বলতে চাইলেও ওরা এড়িয়ে গেছে।
ডালিয়ার বিয়ের দুইবছর পার হয়ে গেছে, আনিস যখন ব্যাকার ছিল টিউশনি করে যা রোজগার করতো তা দিতেই টেনেটুনে সংসার চালিয়ে নিতো ডালিয়া, স্বামী শাশুড়ী আর ডালিয়া এই তিনজনের সংসার। শাশুড়ী যদিও সব সময়েই কড়া স্বভাবের, (ভিতরে একটু নরম) তবে আনিস ডালিয়াকে ভালোবাসায় মুড়িয়ে রাখতো। এতো অভাবের মধ্যোই ডালিয়া খুঁজে নিয়েছিল সুখ। আনিসের ভালো মানের চাকরি হলো অভাব দূর হলো সেই সাথে পরিবর্তন হলো আনিসের ভালোবাসা। সংসারের কাজ করতে করতে ডালিয়ার আর আগের মতো রুপ জৌলুশ নেই কেমন যেন ফিকে হয়ে গেছে। আনিস ডালিয়ার চেহারা নিয়ে এখন কথা শুনায়। যখন আনিস জানতে পারে ডালিয়া সন্তান সম্ভবা তখন কতবার বাচ্চাটাকে নষ্ট করতে চেয়েছে ও নাকি এখন বাচ্চার জন্য তৈরি না কিন্তু ডালিয়া পারেনি নিজের ভালোবাসার চিহ্নকে মুছে ফেলতে, পারেনি স্বামীর বাধ্য বউ হতে সেই থেকে তাদের সংসারে জগরা অশান্তি লেগেই আছে। এই অবস্থায় আনিস বহুবার হাত পর্যন্ত তুলেছে ডালিয়ার গায়ে সামান্য কথা কাটাকাটির জের ধরে। প্রেগন্যান্ট অবস্থায় যেই এক্সট্রা কেয়ার দরকার তা ডালিয়া পায় এই না উল্টে সাত বাদির কাজ একা হাতে করে। মাঝেমধ্যে শাশুড়ী হাত লাগায়,তবে উনি একদিন কাজ করলে দশ দিন উনার নাকি শরীল ব্যাথা করে। এইতো কয়দিন আগে, ডালিয়া পেট ব্যাথায় কাতরাচ্ছিল আনিস এসে ডালিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় কিন্তু ডালিয়া বারন করে দেয়, এই সময়ে ইন্টিমেট হলে বাচ্চারও ক্ষতি হয়। আনিস তবুও জেদ ধরে সে শারীরিক সম্পর্ক করবে, ডালিয়া নানান ভাবে বুঝায় তবুও আনিস জোর করে ইন্টিমেট হতে নিলে ডালিয়া আনিসকে একটা থাপ্পড় মারে। আনিসে মাথায় রক্ত উঠে যায়, বিপরীতে সে ডালিয়াকে পশুর মতো মারে। গাল চেপে ধরে বলে
আনিস তারপর রুম থেকে বের হয়ে চলে যায়। ডালিয়া সারারাত কান্না করে।সেদিনের মারের দাগ এখনো আছে।
কাপড় কাচতে কাচতে এইসব ভেবে দুফোঁটা জল গড়িয়ে পরলো ডালিয়ার চোখ বেয়ে। কাপড় ধুয়া শেষে বালতি হাতে নিয়ে এক পা এগুলেই ধপাশ করে পরে যায়, ফ্লোরে হয়তো বেখেয়ালে সাবানের গুড়া পরে গিয়েছিল যার কারনে পিচ্ছিল । পরে গিয়ে ডালিয়া জোরে চিৎকার দিয়ে বলে
" মাআআআ "
খাদিজা বেগম এক প্রতিবেশীর সাথে গল্পে ব্যাস্ত ছিলেন তাই তিনি ডালিয়ার ডাকে বিরক্ত হয়ে উঠে আসেন, সাথে আসে প্রতিবেশী মহিলাটি।
" কি বউ আবার কি নাটক শুরু করলা "
ডালিয়ার পা বেয়ে রক্ত বের হতে দেখে উনি একটু ভয় পেয়ে যান তারপর ডালিয়াকে কথা শুনিয়ে দেন। এত অসচেতন কেন, একটু সাবধানে কাজ করলেই তো হতো। প্রতিবেশী মহিলাটি উনাকে থামিয়ে বলেন "তারাতাড়ি হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। "
" কি কও,পোলারে না জানাইয়া হাসপাতালে কেমনে লইয়া যামো, ধাই লইয়া আই যাইয়া "
ওদিকে ডালিয়া ব্যাতায় কাতরাচ্ছে, চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পরছে। ও কাতর কন্ঠে বলে
" মা আমার বাচ্চাটাকে বাঁচান।"
খাদিজা বেগম ডালিয়ার দিকে বিরক্ত নিয়ে তাকিয়ে ছেলের ফোনে কল করেন, কিন্তু কল ধরার নাম গন্ধ নেই। শেষে প্রতিবেশী মহিলাটির জোরজবরদস্তির কারনে ডালিয়াকে হাসপাতালে নিতে বাধ্য হন। ওই মহিলাটি তার ছেলেকে ডেকে এনে ডালিয়াকে নিয়ে গিয়ে সিএনজিতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যায়। খাদিজা বেগম কালো মুখ করে ডালিয়ার সাথে যায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলেন
" ইমিডিয়েটলি সিজার করাতে হবে নয়তো মা, বাচ্চা কাউকেই বাঁচানো যাবে না, আপনারা টাকা জমা করে দিবেন "
খাদিজা বেগম কে কিছু বলতে না দিয়েই ডালিয়াকে নিয়ে যাওয়া হয়।কারণ পেশেন্টের কন্ডিশন সিরিয়াস। এদিকে উনি বাহিরে বসে বসে টাকার হিসেব খষচে, আনিস কি এতো টাকা খরচ করবে, ডালিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে শুনলে নিশ্চয়ই আনিস রাগ করবে।
ওদিকে আনিস লাঞ্চ টাইমে ফোন হাতে নিয়ে দেখে মায়ের অনেকগুলো কল এসেছে, সে কল ব্যাক করে। খাদিজা বেগম আনিসকে সব খুলে বলে। আনিস যেন এখনি হাসপাতালে আসে। আনিস মায়ের উপর ক্ষেপে বলে
" হসপিটালে নিয়ে গেলে কেন? এখন কতগুলো টাকা যাবে হিসেব আছে তোমার? "
" আমি আনতে চাইনি বাবা ওই.... "
খাদিজা বেগমের কথা শেষ হওয়ার আগেই আনিস কল কেটে দেয়। বসের থেকে ছুটি নিয়ে চলে যায় হসপিটালে। আনিস হসপিটালে যেয়ে দেখে মা অপারেশন থিয়েটারের সামনে বসে আছে,আনিসও গিয়ে মায়ের পাশে বসে। মাকে জিজ্ঞেস করে
" টাকা জমা করেছো? "
" না, আমি টেহা কই থাইকা পামু। "
" টাকা ছাড়াই ওরা সিজারে নিয়ে গেল? আশ্চর্য! "
ডালিয়াকে একজন মহিলা ডাক্তার সিজার করেন,ওই মহিলাটি ডালিয়ার বড় বোনের ননদ, 'নাসিমা জাহান' উনি ডালিয়াকে চেনে তাই টাকার অপেক্ষা না করে ডালিয়াকে সিজার করতে নিয়ে যায়।
Biblab Diary
নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ডালিয়াকে তার শ্বাশুড়ি খাদিজা বেগম এক বালতি কাপড় ধুইতে দিয়ে যায়। সকাল থেকে গরমের মধ্যে রান্নাবান্না করে ঘর পরিস্কার করেছে। পেটটা চিনচিন ব্যাথা করছে। ১০ টা বাজে কিন্তু এখনো এক দানা পেটে পরেনি।
ডালিয়া ক্লান্ত কন্ঠে বলে
" মা আমি খাবার খেয়ে নিই, তারপর কাপড় গুলো ধুয়ে দিব। "
খাদিজা বেগম কর্কশ গলায় বলেন
" এতো আইলশামী করো কেন বউ, খাইলে তোমার শইল ভারী ওইয়া যাইব আর কাম করতা পারতা না, এক্ষনই যাও কাপড় কয়ডা ধুইয়া মেইলা দেও। দেরি করলে কাপড় শুকাইতো না, রইদ পইরা যাইবো । "
" মা আমার শরীল টা আজকে ভালো লাগছে না পেটটা ব্যাথা করছে। "
" একদম বাহানা করবা না, পোলা মাইয়া আমরাও পয়দা করছি। এমন সময় কাম কাজ করলে তোমার শরীলের লাইগাই বালা, কাম কাজ না করলে শইল ভারী ওইয়া যাইবো। আমি পোয়াতি আছিলাম বালা ১০ জনের কাম একলাই করছি। "
ডালিয়া আর কিছু না বলে চুপচাপ কাপড় ধুইতে যায়।
৫ ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট ডালিয়া। ' নুসরাত জাহান ডালিয়া ', বাবার আদরের ছোট্ট পরী তাই উনার পছন্দের ফুলের নামের সাথে মিল রেখেই নাম করণ করা হয়েছে । বাবা 'নেওয়াজ মুর্শেদ' কলেজের প্রফেসর। তিন ভাই ভালো মানের চাকরি করে, বোনের ভালো জায়গায় বিয়ে হয়েছে। ঢাকায় তাদের নিজস্ব বাসাবাড়ি। উচ্চবিত্ত বলা চলে। বাড়ি থাকতে এক গ্লাস পানি গড়িয়ে খেতে হয়নি ওর।খেতে না চাইলে মা মুখে তুলে খাইয়ে দিত। আর সেই সুখের জীবনে ভালোবাসা নামক অনুভূতিটা এসে সব কিছু উলোটপালোট করে দিল। আনিস নামক একটা ব্যাকার ছেলে যাকে মন দিয়ে বসেছিল ডালিয়া। বাবা ভাইয়ের পছন্দ হলো না আনিসকে। তারা এই ছেলের কাছে বিয়ে দিবে না তাদের আদরের দোলালিকে। তাদের মতোই একটা উচ্চবিত্ত পরিবারে ঠিক করলো ডালিয়ার বিয়ে। নিজের ভালোবাসার মানুষকে হারানোর ভয়ে বিয়ের আসর থেকে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে আসলো অচেনা শহরে, অচেনা মানুষের ভীরে, ভালোবাসা টানে। বাবা স্ট্রোক করেছিল ডালিয়া পালিয়ে আসবার পরে, ভাইয়েরা তাকে অনেক বুঝিয়ে বাড়ি নিবার চেষ্টা করেছিল কিন্তু সার্থপর ডালিয়ার কাছে ১৯ বছরের স্নেহ ভালোবাসার থেকে কদিনের চেনা ভালোবাসাই বড়, বাবাকে দেখার জন্যও যায়নি সে। এর পর থেকে বাবার বাড়ির আর কেউ খুঁজ নেয়নি ডালিয়ার,ওদের জন্য ডালিয়া মৃত । ডালিয়া নিজে তাদের সাথে কথা বলতে চাইলেও ওরা এড়িয়ে গেছে।
ডালিয়ার বিয়ের দুইবছর পার হয়ে গেছে, আনিস যখন ব্যাকার ছিল টিউশনি করে যা রোজগার করতো তা দিতেই টেনেটুনে সংসার চালিয়ে নিতো ডালিয়া, স্বামী শাশুড়ী আর ডালিয়া এই তিনজনের সংসার। শাশুড়ী যদিও সব সময়েই কড়া স্বভাবের, (ভিতরে একটু নরম) তবে আনিস ডালিয়াকে ভালোবাসায় মুড়িয়ে রাখতো। এতো অভাবের মধ্যোই ডালিয়া খুঁজে নিয়েছিল সুখ।
আনিসের ভালো মানের চাকরি হলো অভাব দূর হলো সেই সাথে পরিবর্তন হলো আনিসের ভালোবাসা।
সংসারের কাজ করতে করতে ডালিয়ার আর আগের মতো রুপ জৌলুশ নেই কেমন যেন ফিকে হয়ে গেছে। আনিস ডালিয়ার চেহারা নিয়ে এখন কথা শুনায়।
যখন আনিস জানতে পারে ডালিয়া সন্তান সম্ভবা তখন কতবার বাচ্চাটাকে নষ্ট করতে চেয়েছে ও নাকি এখন বাচ্চার জন্য তৈরি না কিন্তু ডালিয়া পারেনি নিজের ভালোবাসার চিহ্নকে মুছে ফেলতে, পারেনি স্বামীর বাধ্য বউ হতে সেই থেকে তাদের সংসারে জগরা অশান্তি লেগেই আছে। এই অবস্থায় আনিস বহুবার হাত পর্যন্ত তুলেছে ডালিয়ার গায়ে সামান্য কথা কাটাকাটির জের ধরে। প্রেগন্যান্ট অবস্থায় যেই এক্সট্রা কেয়ার দরকার তা ডালিয়া পায় এই না উল্টে সাত বাদির কাজ একা হাতে করে। মাঝেমধ্যে শাশুড়ী হাত লাগায়,তবে উনি একদিন কাজ করলে দশ দিন উনার নাকি শরীল ব্যাথা করে।
এইতো কয়দিন আগে, ডালিয়া পেট ব্যাথায় কাতরাচ্ছিল আনিস এসে ডালিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় কিন্তু ডালিয়া বারন করে দেয়, এই সময়ে ইন্টিমেট হলে বাচ্চারও ক্ষতি হয়। আনিস তবুও জেদ ধরে সে শারীরিক সম্পর্ক করবে, ডালিয়া নানান ভাবে বুঝায় তবুও আনিস জোর করে ইন্টিমেট হতে নিলে ডালিয়া আনিসকে একটা থাপ্পড় মারে। আনিসে মাথায় রক্ত উঠে যায়, বিপরীতে সে ডালিয়াকে পশুর মতো মারে। গাল চেপে ধরে বলে
" মা*গি জামাইয়ের খাইশ মিটাইতে পারছ না তাইলে হিজরা হইলেই পারতি৷ "
আনিস তারপর রুম থেকে বের হয়ে চলে যায়। ডালিয়া সারারাত কান্না করে।সেদিনের মারের দাগ এখনো আছে।
কাপড় কাচতে কাচতে এইসব ভেবে দুফোঁটা জল গড়িয়ে পরলো ডালিয়ার চোখ বেয়ে। কাপড় ধুয়া শেষে বালতি হাতে নিয়ে এক পা এগুলেই ধপাশ করে পরে যায়, ফ্লোরে হয়তো বেখেয়ালে সাবানের গুড়া পরে গিয়েছিল যার কারনে পিচ্ছিল ।
পরে গিয়ে ডালিয়া জোরে চিৎকার দিয়ে বলে
" মাআআআ "
খাদিজা বেগম এক প্রতিবেশীর সাথে গল্পে ব্যাস্ত ছিলেন তাই তিনি ডালিয়ার ডাকে বিরক্ত হয়ে উঠে আসেন, সাথে আসে প্রতিবেশী মহিলাটি।
" কি বউ আবার কি নাটক শুরু করলা "
ডালিয়ার পা বেয়ে রক্ত বের হতে দেখে উনি একটু ভয় পেয়ে যান তারপর ডালিয়াকে কথা শুনিয়ে দেন। এত অসচেতন কেন, একটু সাবধানে কাজ করলেই তো হতো। প্রতিবেশী মহিলাটি উনাকে থামিয়ে বলেন "তারাতাড়ি হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। "
" কি কও,পোলারে না জানাইয়া হাসপাতালে কেমনে লইয়া যামো, ধাই লইয়া আই যাইয়া "
ওদিকে ডালিয়া ব্যাতায় কাতরাচ্ছে, চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পরছে। ও কাতর কন্ঠে বলে
" মা আমার বাচ্চাটাকে বাঁচান।"
খাদিজা বেগম ডালিয়ার দিকে বিরক্ত নিয়ে তাকিয়ে ছেলের ফোনে কল করেন, কিন্তু কল ধরার নাম গন্ধ নেই। শেষে প্রতিবেশী মহিলাটির জোরজবরদস্তির কারনে ডালিয়াকে হাসপাতালে নিতে বাধ্য হন।
ওই মহিলাটি তার ছেলেকে ডেকে এনে ডালিয়াকে নিয়ে গিয়ে সিএনজিতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
খাদিজা বেগম কালো মুখ করে ডালিয়ার সাথে যায়।
হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলেন
" ইমিডিয়েটলি সিজার করাতে হবে নয়তো মা, বাচ্চা কাউকেই বাঁচানো যাবে না, আপনারা টাকা জমা করে দিবেন "
খাদিজা বেগম কে কিছু বলতে না দিয়েই ডালিয়াকে নিয়ে যাওয়া হয়।কারণ পেশেন্টের কন্ডিশন সিরিয়াস।
এদিকে উনি বাহিরে বসে বসে টাকার হিসেব খষচে, আনিস কি এতো টাকা খরচ করবে, ডালিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে শুনলে নিশ্চয়ই আনিস রাগ করবে।
ওদিকে আনিস লাঞ্চ টাইমে ফোন হাতে নিয়ে দেখে মায়ের অনেকগুলো কল এসেছে, সে কল ব্যাক করে। খাদিজা বেগম আনিসকে সব খুলে বলে। আনিস যেন এখনি হাসপাতালে আসে। আনিস মায়ের উপর ক্ষেপে বলে
" হসপিটালে নিয়ে গেলে কেন? এখন কতগুলো টাকা যাবে হিসেব আছে তোমার? "
" আমি আনতে চাইনি বাবা ওই.... "
খাদিজা বেগমের কথা শেষ হওয়ার আগেই আনিস কল কেটে দেয়।
বসের থেকে ছুটি নিয়ে চলে যায় হসপিটালে। আনিস হসপিটালে যেয়ে দেখে মা অপারেশন থিয়েটারের সামনে বসে আছে,আনিসও গিয়ে মায়ের পাশে বসে। মাকে জিজ্ঞেস করে
" টাকা জমা করেছো? "
" না, আমি টেহা কই থাইকা পামু। "
" টাকা ছাড়াই ওরা সিজারে নিয়ে গেল? আশ্চর্য! "
ডালিয়াকে একজন মহিলা ডাক্তার সিজার করেন,ওই মহিলাটি ডালিয়ার বড় বোনের ননদ, 'নাসিমা জাহান' উনি ডালিয়াকে চেনে তাই টাকার অপেক্ষা না করে ডালিয়াকে সিজার করতে নিয়ে যায়।
#অনিন্দিতা
#ফৌজিয়া_কবির
#পর্ব_০১
সম্পূর্ণ গল্পটি পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন:
youtube.com/playlist?list=PL4...
5 days ago (edited) | [YT] | 9