শ্রীধাম নবদ্বীপস্থ তেলিপাড়া নিবাসী জনৈক গোস্বামীর প্রাচীন যুগলবিগ্রহ ছিল।সেই গোস্বামীজীর অপ্রকটে তাঁর স্ত্রী শ্রীরাধামাধব বিগ্রহকে কোলকাতার জনৈক ধনাঢ্য শেঠের কাছে বিক্রয় করার জন্য সংকল্প করেন, কারন তাঁর পক্ষে যুগলের সেবাভার রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছিল না।
একদিন বৃদ্ধা মা গোস্বামিনীকে শ্রীযুগলকিশোর স্বপ্নাদেশ করে জানালেন তিনি যেন এই যুগলবিগ্রহকে প্রভুপাদ তিনকড়ি গোস্বামীকে দান করে দেন।স্বপ্নাদেশ পেয়ে প্রভাতেই ক্রন্দনরত অবস্থায় বৃদ্ধা মা গোস্বামিনী প্রভুপাদের নিকট উপস্থিত হয়ে তাঁর স্বপ্নবৃত্তান্ত ব্যাক্ত করলেন এবং তাঁর শ্রীযুগলবিগ্রহ প্রভুপাদের করকমলে প্রদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। প্রভুপাদ স্বানন্দে স্বীকৃত হয়ে নিজেকে কৃতকৃতার্থ মনে করলেন।অতিসত্ত্বর শ্রীরাধামাধব শ্রীবিগ্রহ এবং তৎসহিত শ্রীমন্মহাপ্রভুর শ্রীবিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত করে শ্রীল প্রভুপাদ নিজেকে ধন্যাতিধন্য মনে করলেন।প্রতিষ্ঠিত করার পর তিনি শ্রীবিগ্রহের নাম পরিবর্তন করে রাখলেন "শ্রীরাধাবল্লভ"।অদ্যাবধি এই শ্রীজীউ মনিপুর ঘাট রোডস্থ শ্রীরাধাবল্লভ মন্দিরে অতিসুন্দর ভাবে সেবিত হচ্ছেন।ক্রমে ক্রমে শিষ্যসংখ্যা বর্ধিত হওয়ার কারনে শ্রীবিগ্রহ ও শ্রীল প্রভুপাদের সেবাভার শিষ্যরাই বহন করেন।উক্ত সময়ে রাধাবল্লভলালের কোনো নাটমন্দির ছিল না। পরবর্তীতে শিষ্যরা ব্যায়ভার বহন করে শ্রীরাধাবল্লভের মন্দির সংস্কার ও শ্রীনাটমন্দির নির্মান করে দেন.....
#শ্রীচৈতন্য নারায়ণ করুণা সাগর। দীন দুঃখিতের বন্ধু, মোরে দয়া কর।। #শ্রীরাগ- পুলকে রচিত গায়, সুখে গড়াগড়ি যায় দেখরে চৈতন্য অবতারা। বৈকুন্ঠ নায়ক হরি, দ্বীজরূপে অবতরি, সঙ্কীর্তনে করেন বিহারা।। কনক জিনিয়া কান্তি, শ্রীবিগ্রহ শোভে রে, আজানু লম্বিত মালা সাজে রে। সন্ন্যাসীর রূপে আপন রসে বিহ্বল, না জানি কেমন সুখে নাচে রে।। জয় জয় গৌর- সুন্দর করুণাসিন্ধু, জয় জয় সম্প্রতি, নবদ্বীপ পুরন্দর, জয় জয় গৌর– বৃন্দাবন রায়া রে। চরম কমল দেহ ছায়া রে।। মহাপ্রভু ও অদ্বৈতের কৌতুক বিবরণের নানা প্রসঙ্গ আমরা শ্রীচৈতন্যভাগবতে ও শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে পাই। বিশেষত একটি প্রহেলিকা। যার প্রসঙ্গ তুমি শ্রদ্ধেয় বিমানবিহারী মজুমদার কিছু প্রাসঙ্গিত প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। প্রহেলিকাটি ও তৎপ্রসঙ্গে দুটি অনুষঙ্গ ও ব্যাখ্যা তুলে ধরা হল :
বাউলকে কহিও লোক হইল বাউল। বাউলকেও কহিও হাটে না বিকায় চাউল।। বাউলকে কহিও কাজে নাহিক আউল। বাউলকে কহিও ইহা করিয়াছে বাউল।।
পণ্ডিত রাম নারায়ণ বিদ্যারত্ন অর্থ করেছেন যে, কৃষ্ণ প্রেমোন্মত্তকে (শ্রীমহাপ্রভুকে বলো, লোক কৃষ্ণ প্রেমে উন্মত্ত হয়েছে; আর কেউ বাকি নাই যে কৃষ্ণ প্রেম নেবে—প্রেম আর বিকায় না। আর বলো যে এই প্রেম বিতরণ কার্যে কোন ত্রুটি হয় নাই। আর পাগল অদ্বৈতই এর বক্তা।
দ্বিতীয় ব্যাখ্যাটি নিম্নরূপ :
ভক্তবর্গ এই গূঢ়ার্থবোধক বাক্যের অর্থ পরিগ্রহ করিতে না পারিয়া শ্রীমহাপ্রভুকে তাহার তাৎপর্য্য জিঞ্জাসিলে তিনি বলিয়াছিলেন, “আচার্য্য তন্ত্রজ্ঞ পূজক, তিনি দেবতার আবাহন করিয়া পুনঃ যথা সময়ে বিসর্জ্জন করিয়া থাকেন, তাঁহার কথার অর্থ তিনিই বুঝেন।” ইহার পর হইতেই শ্রীমহাপ্রভুর ভাব অন্যরূপ হইল, তিনি একরূপ বাহ্য জ্ঞান বিরহিত হইয়াই সৰ্ব্বদা থাকিতেন; এবং তদবস্থায় অপ্রকট হন। অপ্রকটের পর প্রহেলীর অর্থ ভক্তবর্গ বুঝিতে পারিয়াছিলেন। এই প্রহেলিকা তদীয় লীলা সম্বরণের জন্য ইঙ্গিত মাত্র।
তবে প্রভু কমলাক্ষ হরি হররূপী। অন্তর্হিত হইলেন গৌরলীলা জপি।। দ্বাদশবর্ষ বয়:ক্রমে শান্তিপুরে গেলা। ষড়দর্শন শাস্ত্র ক্রমে পড়িতে লাগিলা।। – অ.প্র.-৮ ষড়দর্শন পড়া যদি অভিলাস হয়ে থাকে তাহলে কুবের পণ্ডিতের আপত্তির কারণ থাকার কথা নয়। পুত্রের অদর্শনে লোক পাঠিয়ে কুবের বহু খোঁজাখুঁজি করেন। ‘খুঁজিয়া না পাঞা চক্ষে বহে অশ্রুধার।’ অবশেষে কমলাক্ষের পত্র পেয়ে কুবের-লাভা সব অবগত হন এবং ‘তরি আপোহয়া’ নদীয়া গমন করেন। পিতা-পুত্রে মিলন হন। পিতার পরামর্শে কমলাক্ষ ‘বেদান্তবাগীশ শান্ত দ্বিজবরের বাটি’ গিয়ে ‘বেদ চারিখান’ পাঠ করেন দু-বছর ধরে। এখানে কমলাক্ষর এক অপূর্ব লীলার কথা পাই অদ্বৈতপ্রকাশে। ছাত্রদের নিয়ে বেদজ্ঞ আচার্য এক বিল-এর তীরে নিয়ে আসেন। বিল-মধ্যে এক সুন্দর পদ্ম দেখতে পেয়ে সেটি যে কোন একজনকে তুলে আনতে বলেন। কাঁটাভর্তি ও বিলে গুরু নির্দিষ্ট ওই পদ্মটির চারিপাশে ‘কালসর্পগণ তাহে করয়ে বিহার।’ কমলাক্ষ বলেন, তিনি পারবেন পদ্মটি তুলে আনতে। গুরু বলেন, ‘এই সুদুর্গমে না করিহ দর্প।’ কমলাক্ষ পদ্মে পদ্মে পা দিতে দিতে সেই পদ্মটি তুলে এনে ‘ভক্তি করি গুরুদেবে করিল অর্পন।’ বেদ শিক্ষার সমাপনান্তে কমলাক্ষ ‘বেদ পঞ্চানন’ পদবি প্রাপ্ত হন। বিদ্যাশিক্ষা চর্চার পাশাপাশি ‘পিতৃমাতৃ সেবায়’কমলাক্ষ একবৎসর নিবেদিত প্রাণ হয়ে থাকেন। কালে ‘নব্বই বৎসর অতিক্রান্তে’ কুবের আচার্য ও লাভাদেবী প্রয়াত হলেন। পিতৃ আজ্ঞা অনুযায়ী পিণ্ডদান নিমিত্ত কমলাক্ষ ‘গয়াধামে গেলা যাঁহা হয় বিষ্ণুক্ষেত্র।’ গয়াধাম থেকে কমলাক্ষের তীর্থভ্রমণ শুরু হল। পূর্বাপর বিবরণ থেকে বিশ্বম্ভরের পিতৃবিয়োগের পর গয়া-গদাধর দর্শনে ঐশী মনবৈকল্য, সন্ন্যাস-অভিলাস এবং নীলাচল যাত্রার সাযুজ্য পাওয়া গেলেও অদ্বৈতপ্রকাশ স্বতন্ত্র। তথ্য সংগৃহীত..
যদি কেহ অনুমান করেন, শ্রীখণ্ডের এই বিষ্ণুপ্রিয়া মূর্ত্তি স্থাপন ঠাকুর নরহরি প্রভৃতির অনুমোদিত নহে; এজন্য উল্লেখ করিতেছি যে, ঠাকুর কানাই, ঠাকুর শ্রীনরহরির নিকট দীক্ষিত ও তাঁহার একান্ত অনুগত এবং তিনি দীর্ঘকাল নরহরির সঙ্গসুখ লাভ করিয়াছিলেন, যেহেতু তিনি তাঁহার পিতা রঘুনন্দনের অপ্রকটের পরেও বর্ত্তমান ছিলেন এবং উক্ত ঠাকুর কানাইয়ের পুত্র ঠাকুর মদনরায় ও ঠাকুর বংশীবদনও নরহরির নিকট দীক্ষিত। নরহরির আনুগত্যে দীর্ঘকাল অবস্থিত ঠাকুর কানাইয়ের কৃত কার্য্য যে, নরহরি রঘুনন্দনাদির অনুমোদিত নহে, তাহা ধারণাই করা চলে না। অধিকন্তু ইহাই মনে হয় যে, তিনি নরহরি রঘুনন্দনের নিকট এই কার্যের প্রেরণাই পাইয়াছিলেন। বস্তুতঃ পক্ষে গৌর-নিত্যানন্দ গৌর-গদাধর প্রভৃতির ভজন যেমন সুমধুর শ্রীশ্রীগৌর-বিষ্ণুপ্রিয়ার ভজনও তদ্রূপ। ঠাকুর নরহরির পরিবারবর্গের মধ্যে গৌরগদাধর ভজনপ্রথা প্রচলিত থাকিলেও, তাঁহারা গৌরবিষ্ণুপ্রিয়া ভজনশীল ভক্তগণকে তুল্য বলিয়াই মনে করেন।
মধুর ভাবে গৌরাঙ্গভজনপরায়ণ ভক্তগণ, ঠাকুর কানাই কর্ত্তৃক গৌরসুন্দরের বামে এই বিষ্ণুপ্রিয়ার মূর্ত্তি স্থাপনে পরম আনন্দলাভই করিয়াছিলেন। বহিরঙ্গগণ, শ্রীশ্রীগদাধর পণ্ডিত গোস্বামী প্রভৃতির প্রকৃতিভাব বা তদনুরূপ স্বরূপ স্বীকার করা দূরের কথা, এমন কি ভক্তভাবে অবতীর্ণ হওয়ায় শ্রীগৌরসুন্দরের রসরাজত্ব সম্বন্ধেও তাঁহারা সন্দিহান। প্রকটলীলায় গৌরবক্ষবিলাসিনী শ্রীশ্রীনবদ্বীপধামেশ্বরী বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীই শ্রীগৌরসুন্দরের রসরাজত্বের প্রকটপ্রমাণ বা পরিপূর্ণ নিদর্শন।
শ্রীপাদ নরোত্তম ঠাকুর মহাশয়ও তৎকালে প্রকট গৌরাঙ্গগণের সমক্ষেই শ্রীশ্রীগৌরবিষ্ণুপ্রিয়া যুগলমূর্ত্তি অপ্রতিবাদে স্থাপন করিয়াছিলেন। তদুপলক্ষে যে কীর্ত্তন হইয়াছিল, সেই কীর্তনে, নিত্যলীলায় প্রবিষ্ট শ্রীশ্রীগৌরনিত্যানন্দ সীতানাথ গদাধর নরহরি শ্রীবাস প্রভৃতি প্রকট হওয়ায়, এই কার্য্য যে তাঁহাদেরও অনুমোদিত তাহাই সূচিত হইতেছে। ঠাকুর নরহরির পরিবারভুক্ত রঘুনন্দন বংশীগণ পরম সমাদরে শ্রীশ্রীগৌরবিষ্ণুপ্রিয়া যুগলের সেবা করিয়া আপনাদিগকে পরম ভাগ্যবান মনে করেন।
(গৌরগুণানন্দ ঠাকুর, 'শ্রীখণ্ডের প্রাচীন বৈষ্ণব') তথ্য সংগৃহীত..
ভক্তি অর্জনের জন্য হৃদয়ে দীনতা থাকা একান্ত আবশ্যক। কেনোকি ভক্তি মহারাণী অত্যন্তই লজ্জাশীলা নববধুর মতোন। যখনই ঘরে কোনো পরপুরুষের আগমন ঘটে তখনই নববধু নিজের মাথার ঘোমটা টেনে ঔই স্থান থেকে দূরে সরে যায়; ঠিক তেমনই অহংকার হচ্ছে পরপুরুষের মতোন। কোনো হৃদয়ে বিন্দুমাত্রও যদি অহংকারের আগমন ঘটে, তৎক্ষনাত ভক্তি মহারাণী ঔই হৃদয় ছেড়ে চলে যান। তাই সর্বপ্রকার অহংকার ঝেড়ে ফেলে দাও হৃদয় থেকে, আর অতী দীন-হীন হয়ে সকলকে সন্মান করে চলো। তবেই ভক্তি মহারাণীর পূর্ণ কৃপা খুব শীঘ্রই পেয়ে যাবে।
💎 কৃষ্ণ-সুদামা মিলন লীলা: বন্ধুত্বের শ্রেষ্ঠ আলেখ্য 💎 বৃন্দাবনে লীলা সমাপন করে শ্রীকৃষ্ণ যখন দ্বারকার অধীশ্বর, রাজ-ঐশ্বর্যে ভূষিত, সেই সময় তাঁর বাল্যকালের সহপাঠী সখা সুদামা (যিনি কুচেল নামেও পরিচিত) দূর গ্রামে এক দীনহীন জীবন যাপন করছিলেন। কৃষ্ণ ও সুদামা উভয়েই অবন্তীপুরের গুরু সন্দীপনি মুনির আশ্রমে এক সাথে শিক্ষা লাভ করেছিলেন। গুরুগৃহে তাদের মধ্যে যে গভীর সখ্যতা গড়ে উঠেছিল, তা ছিল নিষ্কাম ও পবিত্র। কিন্তু ভাগ্যবিড়ম্বনায় সুদামা ক্রমশই দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হতে থাকেন। তাঁর জীর্ণ কুটিরে অন্ন জোটা ছিল এক কঠিন সংগ্রাম। একদা তাঁর পত্নী সুশীলা অত্যন্ত ক্ষুধার্ত ও ম্লান মুখে তাঁকে মিনতি করে বললেন— "হে আর্য, আপনি স্বয়ং দ্বারকাধিপতি শ্রীকৃষ্ণের প্রিয় সখা। তিনি সাক্ষাৎ ভগবান। তাঁর কাছে একবার যান, অন্তত বন্ধুকে দর্শন করে আসুন। হয়তো তাঁর কৃপায় আমাদের এই দুঃখ দূর হতে পারে।" স্ত্রীর বারংবার অনুরোধে এবং প্রিয় সখা কৃষ্ণকে একবার চোখের দেখা দেখার প্রবল আকুলতায় সুদামা দ্বারকা যেতে সম্মত হলেন। বন্ধুর জন্য খালি হাতে যাওয়া উচিত নয় ভেবে, তিনি প্রতিবেশীদের কাছ থেকে চেয়ে চার মুঠো আতপ চালের চিঁড়ে একটি পুরনো কাপড়ে বেঁধে নিলেন— এই সামান্য উপহারই ছিল তাঁর বন্ধুত্বের প্রতীক। বহু পথ হেঁটে, ক্ষিদে-তৃষ্ণা ভুলে সেই জীর্ণবস্ত্র পরিহিত ব্রাহ্মণ দ্বারকার রাজপ্রাসাদের সুসজ্জিত দ্বারে পৌঁছালেন। তাঁর দৈন্যদশা দেখে দ্বাররক্ষীরা তাঁকে সন্দেহের চোখে দেখল এবং প্রাসাদের ভেতরে যেতে দিতে দ্বিধা করল। অবশেষে, তাদের কাছে বার্তা পৌঁছালো— "সুদামা নামে এক ব্রাহ্মণ দ্বারদেশে আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন, যিনি আপনার বাল্যবন্ধু।" 'সুদামা' নামটি শোনা মাত্রই রাজ-সিংহাসনে উপবিষ্ট ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিদ্যুৎবেগে উঠে দাঁড়ালেন। রাজমুকুট বা উত্তরীয়ের কথা ভুলে, তিনি নগ্ন পায়ে দ্রুতবেগে রাজদ্বারে ছুটে গেলেন। বন্ধুকে দেখেই তাঁর চোখ দিয়ে আনন্দাশ্রু ঝরতে শুরু করল। তিনি ছুটে গিয়ে সুদামাকে দৃঢ় আলিঙ্গন করলেন, যেন শত জনমের বিরহ সমাপ্ত হলো। কৃষ্ণ তাঁকে পরম সমাদরে রাজপ্রাসাদের অভ্যন্তরে নিয়ে গেলেন এবং নিজের সিংহাসনে বসালেন। স্বয়ং কৃষ্ণ, এবং দেবী রুক্মিণী, অতি উষ্ণ জলে বন্ধুর ধূলোমাখা চরণ ধৌত করে দিলেন। এই চরণ ধৌত জল কৃষ্ণ পরম পবিত্র মনে নিজের মস্তকে ধারণ করলেন। এই অভাবনীয় দৃশ্যে উপস্থিত সকলে হতবাক হয়ে গেলেন। কৃষ্ণ তখন তাঁর প্রিয় সখার সাথে গুরুকুলের দিনগুলির সুখস্মৃতি, বিশেষ করে কাষ্ঠ আহরণের কঠিন দিনের কথা, অত্যন্ত আগ্রহের সাথে আলোচনা করলেন। এরপর কৃষ্ণ কৌতুক করে বললেন, "হে প্রিয় সখা, আমার জন্য তুমি কী উপহার এনেছ? বন্ধুত্বের উপহার সামান্য হলেও তা আমার কাছে ত্রিভুবনের সম্পদের সমান।" সুদামা লজ্জায় তাঁর চিঁড়ের পুঁটুলিটি আড়াল করার চেষ্টা করলেন, কিন্তু অন্তর্যামী কৃষ্ণ জোর করে সেই পুঁটুলি টেনে নিলেন। পরম তৃপ্তি সহকারে কৃষ্ণ সেই শুকনো চিঁড়ের এক মুঠো মুখে দিলেন। ভক্তের প্রীতিতে নিবেদিত সেই সামান্য চিঁড়ে খেয়েই তিনি জগৎবাসীকে সমস্ত ঐশ্বর্য দান করার ইচ্ছা করলেন। যখন তিনি দ্বিতীয় মুঠো চিঁড়ে মুখে দিতে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই দেবী রুক্মিণী তাঁর হাত ধরে ফেললেন। কারণ, প্রথম গ্রাসেই তিনি সমস্ত জগতের ঐশ্বর্য ও অতুলনীয় সম্পদ সখার জন্য বরাদ্দ করে ফেলেছিলেন। কয়েকদিন রাজকীয় আতিথেয়তায় কাটানোর পর সুদামা কৃষ্ণের কাছ থেকে বিদায় নিলেন। বন্ধুত্বের আবেগে তিনি নিজের দুঃখ বা দারিদ্র্যের কথা ভুলেই গিয়েছিলেন, তাই কৃষ্ণের কাছে কিছুই চাইলেন না। কৃষ্ণও সরাসরি কিছু না দিয়েই হাসিমুখে তাঁকে বিদায় জানালেন। ফিরে আসার পথে সুদামা মনে মনে ভাবলেন, "আমি বৃথাই গেলাম, আমার দীনতার কথা কৃষ্ণকে বলতে পারলাম না, আর তিনিও আমাকে কিছু দিলেন না। এখন স্ত্রীকে কী উত্তর দেব?" কিন্তু নিজ গ্রামের কাছাকাছি এসে সুদামা অবাক বিস্ময়ে দেখলেন—তাঁর জীর্ণ কুটিরের জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে এক বিশাল স্বর্ণনির্মিত দিব্য প্রাসাদ। তাঁর স্ত্রী ও সন্তানেরা সুন্দর রাজকীয় পোশাকে সজ্জিত হয়ে দেব-দেবীর মতো অপেক্ষা করছেন। সুদামা তৎক্ষণাৎ বুঝতে পারলেন, তাঁর সখা শ্রীকৃষ্ণ তাঁর সামান্য চিঁড়ের বিনিময়ে সমস্ত ঐশ্বর্য দান করে দিয়েছেন, কিন্তু বন্ধুত্বের মর্যাদা রক্ষা করে তাঁকে সরাসরি জানতে দেননি। এরপর সুদামা ঐশ্বর্যের মোহে না পড়ে, কেবল ভগবানের আরাধনাতেই নিজের বাকি জীবন অতিবাহিত করেন। এই লীলা প্রমাণ করে যে, ভগবান কেবল ভক্তের নিষ্কাম প্রেম ও সামান্য নিবেদনেই সন্তুষ্ট হন, এবং বন্ধুর প্রতি তাঁর ভালোবাসা ছিল সম্পদ, খ্যাতি ও ক্ষমতার ঊর্ধ্বে।
#বিশেষ_দ্রষ্টব্য :::বিশেষ কারণবশত শ্রী গুরু মহারাজ ১৫ তারিখের অনুষ্ঠান শেষে শ্রী ধাম বৃন্দাবনের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন......... দেশ, কাল, অবস্থান ভালো থাকলে শ্রী গুরু মহারাজ এক সপ্তাহ পর আবার বাংলাদেশে। প্রবেশ করবেন 🥰🥰🥰শ্রীগুরু মহারাজের অনুষ্ঠানের সময়সূচি ও বিশেষ তথ্য জানতে হলে ও শ্রী গুরু মহারাজের চরণ আশ্রিত ও দিহ্মা নিতে যারা ইচ্ছুক তারা নিচে দেওয়া যেকোন নাম্বারে যোগাযোগ করবেন। 🪔 Damodar Das Dinar 01870523285 Sri Nidhi Das Noyan 01749554504
বর্তমান সময় তবুও অনেক ভালো ,,ভবিষ্যতে তো আরোও খারাপ সময় আসতে পারে, তখন তাহলে কি করবো! ভজন এখন এই বর্তমান সময়েই করতে হবে। সাধককে কখনও ভবিষ্যতের শুভ আশা নিয়ে বাঁচার স্বপ্ন দেখা উচিত নয়। খুব খুব যত্নশীল হয়ে ভজন করা প্রয়োজন সর্বাবস্থায়। কিছু মিলুক আর না মিলুক ভজন ছাড়া যাবেনা কোনোরুপ প্রতিকূল অবস্থা এসে গেলেও না। বরং সাধককে এইটা ভাবতে হবে যে, আমি তো অনন্ত কাল জন্মেছি-মরেছি এই সংসারের জন্য; সংসারের সুখ-সমৃদ্ধি-ভোগ-লাভ-প্রতিষ্ঠা-সন্মানের আশা নিয়েই মরেছি। মরণ তো এবারেও হবেই হবে কিন্তু এইবার সংসারের চিন্তা নিয়ে মরবোনা, এইবার মরবো প্রভু শধু তোমার জন্য! তোমার দর্শন পেলাম না!তোমার সাথে শরীর থাকতে থাকতেই মিলন হোলোনা! সব ঠিক আছে কিন্তু শেষ সময় মরণকালে যেনো তোমার নাম, তোমার চিন্তন সঙ্গে নিয়ে মরতে পারি,আর মনে মনে বলতে পারি হে প্রভু তুমি তো এলে না,,,আমি তো যাচ্ছি চলে প্রভু!
পরমবৈষ্ণব হরিবোলানন্দ ঠাকুর ও কালীঘাটের মা ____________________________________________
শ্রীহরিবোলানন্দ ঠাকুর বরাহনগর পাঠবাড়ীর নামসিদ্ধ শ্রীপাদ রামদাস বাবাজী মহাশয়ের নিত্যস্মরণীয় দ্বাদশ মহাত্মার অন্যতম। তাঁর পূর্বাশ্রমের নাম ছিল নবীনচন্দ্র ভট্টাচার্য। নিরন্তর 'হরিবোল' কীর্তন করতেন বলে ক্রমে ইনি 'হরিবোলানন্দ ঠাকুর' নামে পরিচিত হন। কালীঘাটের কালীমাতার প্রতি এই পরমবৈষ্ণবের অদ্ভুত ভক্তি ছিল। 'শ্রীশ্রীগৌড়ীয়-বৈষ্ণব-জীবন' গ্রন্থে শ্রীহরিদাস দাস মহাশয় হরিবোলানন্দ ঠাকুর সম্পর্কে লিখছেন—
"বিষয়-ব্যাপারে সামান্য গৃহ-বিবাদ ছল করিয়া ইনি জন্মভূমি ত্যাগ করত কলিকাতা কালীঘাটে আসিয়া মাতৃ-মন্দিরের সম্মুখে 'মা, মা' বলিয়া 'হত্যা' দিয়া পড়েন। তাহাতে আদেশ হইল—'পদব্রজে ভারতবর্ষ পর্যটন করত ভারতের যাবতীয় তীর্থ দর্শন কর।' প্রত্যাদেশ পাইয়া তিনি তীর্থাটন করিতে বাহির হইলেন—কপর্দকহীন অবস্থায় একাকী অর্দ্ধাশনে, অনশনে দিবারাত্রি পথ চলিয়া চলিয়া সকল তীর্থই দর্শন করিলেন—ইহাতে তাঁহার বহু বৎসর অতিবাহিতও হইল; কিন্তু প্রাণে শান্তি না পাইয়া তিনি পুনরায় কালীঘাটে আসিয়া মায়ের চরণে নিবেদন করিলেন। শুনিতে পাওয়া যায় যে তখন শ্রীকালীমাতা প্রত্যক্ষ হইয়া তাঁহাকে শ্রীমুখে বলিলেন—"বাবা, কলিকালে হরি-নামই সত্য ও সারাৎসার। তুমি নিরন্তর 'হরিবোল' এই নামমন্ত্র কীর্ত্তন কর এবং অবিচারে সকলকে পায়ে ধরিয়া এই হরিবোল-নাম বিতরণ কর।" আদেশ পাইয়া তিনি নিরন্তর হরিবোল-নাম করিতে লাগিলেন, বাগবাজারে থাকিয়া প্রত্যহ পদব্রজে কালীঘাটে যাইয়া মাতাকে দর্শন করিতেন এবং যাতায়াতের কালে সম্মুখে যাহাকে দেখিতেন তাঁহারই চরণে ধরিয়া 'হরিবোল' 'হরিবোল' করিতেন, তাঁহার মুখে হরিবোল নাম উচ্চারিত হইলেই চরণ ছাড়িয়া চলিয়া যাইতেন—পথিকটি যতক্ষণ নামোচ্চারণ না করিতেন, ততক্ষণই ইনি চরণে পড়িয়া থাকিতেন।"
দেখা গেল, কলিতীর্থ কালীঘাটের মা কালীর আদেশেই হরিবোলানন্দ ঠাকুর হরিবোল-নাম কীর্তন ও বিতরণে ব্রতী হন। কলকাতায় যখন মহামারী প্লেগ দেখা দেয়, তখনও ইনি মা কালীর অনুগ্রহে জনৈক শিষ্যের জীবনরক্ষা করেন—
"ক্ষেত্র বাবুও যখন ঐ রোগে আক্রান্ত হইয়া মৃত্যুমুখে পতিত হইতেছিলেন, তখন ঠাকুর কালীঘাটে যাওয়ার পথে তাঁহার বাড়ীতে গিয়া জানিলেন যে ক্ষেত্রবাবু মুমুর্ষু হইয়াছেন। তাঁহাকে দেখিয়া ঠাকুর জিজ্ঞাসা করিলেন—'কিরে ক্ষেত্তর! কি বলছিস্?' তিনি ইঙ্গিতে জানাইলেন 'এই শেষ বিদায়।' ঠাকুর তখনই কালীঘাটে গিয়া মায়ের খাঁড়ার জল আনিয়া দিয়া পরিচারক-গণকে বলিলেন—'বাবু এক্ষণই ঘুমাইয়া পড়িবে, ঘুম থেকে উঠে যা' খেতে চায়, তাই তাকে অবিচারে দিবি।' অহো! সেই চরণামৃত পান করা মাত্রই ক্ষেত্রবাবু বহু দিন পরে নিদ্রায় অভিভূত হইলেন এবং চার পাঁচ ঘণ্টা সুনিদ্রার পরে বুভুক্ষু হইয়া মুগের ডাল দিয়া অন্ন খাইতে চাহিলেন। ঠাকুরের আদেশমত যথাসময়ে আহার করিয়া তিনি সম্যক্ প্রকারে সুস্থ হইলেন।"
ভক্ত-বৈষ্ণব ও কৃষ্ণলীলার অধিষ্ঠাত্রী মা যোগমায়ার লীলা সত্যিই বড় অদ্ভুত!
আজ পবিত্র বহুলাষ্টমী তিথি, এইদিন শ্রীরাধাকুণ্ডে স্নানে বিশেষ ফললাভ করা যায়।
পদ্মপুরানোক্ত কার্তিকমাহাত্ম্য থেকে শ্রীল রূপ গোস্বামীপাদ মথুরামাহাত্ম্যে এবং শ্রীল সনাতন গোস্বামীপাদ হরিভক্তিবিলাসে বহুলাষ্টমী তিথিতে কুণ্ডদ্বয়ে স্নানের কথা উল্লেখ করেছেন :~
1578 খ্রিস্টাব্দের বসন্তপঞ্চমীর শুভ তিথিতে নিকুঞ্জবনে ঝাড়ুসেবা দিতে দিতে শ্রীদুঃখী কৃষ্ণদাস কুড়িয়ে পান শ্রীমতি রাধারানীর বামপদের 'মঞ্জুঘোষ' নাম্না রত্ননূপুর। শ্রীমতি ললিতা সখী তখন বৃদ্ধা ব্রাহ্মণীর বেশে নূপুর নিতে আসেন, কৃষ্ণদাস নূপুর দিতে অস্বীকার করেন। তখন শ্রীললিতা সখী নিজস্বরূপ প্রকাশ করে দুঃখী কৃষ্ণদাসকে কৃপা করেন, নূপুরটি তাঁর ললাটে স্পর্শ করিয়ে 'শ্যামমোহন' নাম্না নূপুর তিলক প্রদান করেন এবং তাঁকে পঞ্চদশাক্ষর রাধামন্ত্ররাজে দীক্ষা প্রদান করেন ও শ্রীশ্যামানন্দ নাম প্রদান করেন। এরপর শ্রীশ্যামানন্দ প্রভুর মনে ইচ্ছা হয় শ্রীমতি রাধারানীর রুপদর্শন করার। তখন শ্রীমতির নির্দেশে ললিতা সখী তাঁকে শ্রীরাধাকুণ্ড তটে নিয়ে যান এবং নিজপ্রদত্ত রাধামন্ত্র জপ করে রাধাকুন্ডে স্নান করতে বলেন। শ্রীকুন্ডে স্নানমাত্র শ্রীশ্যামানন্দ প্রভুর নিত্যসিদ্ধ কনকমঞ্জরী স্বরূপ প্রকাশিত হয়।
শ্রীশ্রী শ্যামানন্দ প্রকাশ গ্রন্থের বর্ণনায় :-
"রত্ন পালঙ্কে বসি রাই জানিলা আপনি। রূপমঞ্জরীকে ডাকি বলিল বচন। নিকুঞ্জ ভবনে তুমি যাইবে এখন ॥ ললিতারে কহ গিয়া আমার বচন। নূপুর পাঞএ্যাছে কৃষ্ণদাস অকিঞ্চন ।। তারে লৈয়া রাধাকুণ্ডে স্নান করাইবে। স্নানমাত্রে সখীরূপ তখনি হইবে।। তারে লৈয়া ললিতা আসিবেন এখানে। তুমি শীঘ্র গিয়া কহ আমারে বচনে।। শ্রীরূপমঞ্জরী গেলা নিভৃত নিকুঞ্জে। দেখেন ললিতা দেবী করিয়াছে বীজে।। পদে পড়ি রাই আজ্ঞা করিলা প্রকাশ। শুনিয়া ললিতা দেবী অন্তরে উল্লাস।। কৃষ্ণদাসে লৈয়া গেল রাধাকুণ্ড তীরে। তারে কহে যেই মন্ত্র দিয়াছি তোমারে।। সেই মন্ত্র জপি তুমি কুণ্ডে কর স্নান। অবশ্য পাইবে রাইর চরণ সন্নিধান।। তবে নূপুর গোসাঞি কুণ্ড তটেতে রাখিয়া। মন্ত্র জপি স্নান করে রাই সুমরিয়া।। স্নানমাত্রে সখীদেহ হইল তাহার। দেখিয়া ললিতা চিত্তে আনন্দ অপার।। কনকমঞ্জরী নাম দিল ততক্ষণে। আজ্ঞা দিল নূপুর লৈয়া আইস আমা সনে।। তবে নূপুর মাথে করি চলে ধীরে ধীরে। প্রবেশ হইল গিয়া রাইর মন্দিরে ॥"
স্বনন্দ দাস
শ্রীধাম নবদ্বীপস্থ তেলিপাড়া নিবাসী জনৈক গোস্বামীর প্রাচীন যুগলবিগ্রহ ছিল।সেই গোস্বামীজীর অপ্রকটে তাঁর স্ত্রী শ্রীরাধামাধব বিগ্রহকে কোলকাতার জনৈক ধনাঢ্য শেঠের কাছে বিক্রয় করার জন্য সংকল্প করেন, কারন তাঁর পক্ষে যুগলের সেবাভার রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছিল না।
একদিন বৃদ্ধা মা গোস্বামিনীকে শ্রীযুগলকিশোর স্বপ্নাদেশ করে জানালেন তিনি যেন এই যুগলবিগ্রহকে প্রভুপাদ তিনকড়ি গোস্বামীকে দান করে দেন।স্বপ্নাদেশ পেয়ে প্রভাতেই ক্রন্দনরত অবস্থায় বৃদ্ধা মা গোস্বামিনী প্রভুপাদের নিকট উপস্থিত হয়ে তাঁর স্বপ্নবৃত্তান্ত ব্যাক্ত করলেন এবং তাঁর শ্রীযুগলবিগ্রহ প্রভুপাদের করকমলে প্রদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। প্রভুপাদ স্বানন্দে স্বীকৃত হয়ে নিজেকে কৃতকৃতার্থ মনে করলেন।অতিসত্ত্বর শ্রীরাধামাধব শ্রীবিগ্রহ এবং তৎসহিত শ্রীমন্মহাপ্রভুর শ্রীবিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত করে শ্রীল প্রভুপাদ নিজেকে ধন্যাতিধন্য মনে করলেন।প্রতিষ্ঠিত করার পর তিনি শ্রীবিগ্রহের নাম পরিবর্তন করে রাখলেন "শ্রীরাধাবল্লভ"।অদ্যাবধি এই শ্রীজীউ মনিপুর ঘাট রোডস্থ শ্রীরাধাবল্লভ মন্দিরে অতিসুন্দর ভাবে সেবিত হচ্ছেন।ক্রমে ক্রমে শিষ্যসংখ্যা বর্ধিত হওয়ার কারনে শ্রীবিগ্রহ ও শ্রীল প্রভুপাদের সেবাভার শিষ্যরাই বহন করেন।উক্ত সময়ে রাধাবল্লভলালের কোনো নাটমন্দির ছিল না। পরবর্তীতে শিষ্যরা ব্যায়ভার বহন করে শ্রীরাধাবল্লভের মন্দির সংস্কার ও শ্রীনাটমন্দির নির্মান করে দেন.....
জয় শ্রীরাধাবল্লভ, জয় প্রভুপাদ
1 week ago | [YT] | 3
View 1 reply
স্বনন্দ দাস
সদাশিবাবতার বেদ পঞ্চানন গৌড়ীয়া বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মূল সূত্রধর আচার্য শিরোমনি শ্রী সীতানাথ মহিমা:-
************************************************
#শ্রীচৈতন্য নারায়ণ করুণা সাগর।
দীন দুঃখিতের বন্ধু, মোরে দয়া কর।।
#শ্রীরাগ-
পুলকে রচিত গায়, সুখে গড়াগড়ি যায়
দেখরে চৈতন্য অবতারা।
বৈকুন্ঠ নায়ক হরি, দ্বীজরূপে অবতরি,
সঙ্কীর্তনে করেন বিহারা।।
কনক জিনিয়া কান্তি, শ্রীবিগ্রহ শোভে রে,
আজানু লম্বিত মালা সাজে রে।
সন্ন্যাসীর রূপে আপন রসে বিহ্বল,
না জানি কেমন সুখে নাচে রে।।
জয় জয় গৌর- সুন্দর করুণাসিন্ধু,
জয় জয় সম্প্রতি, নবদ্বীপ পুরন্দর,
জয় জয় গৌর– বৃন্দাবন রায়া রে।
চরম কমল দেহ ছায়া রে।।
মহাপ্রভু ও অদ্বৈতের কৌতুক বিবরণের নানা প্রসঙ্গ আমরা শ্রীচৈতন্যভাগবতে ও শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে পাই। বিশেষত একটি প্রহেলিকা। যার প্রসঙ্গ তুমি শ্রদ্ধেয় বিমানবিহারী মজুমদার কিছু প্রাসঙ্গিত প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। প্রহেলিকাটি ও তৎপ্রসঙ্গে দুটি অনুষঙ্গ ও ব্যাখ্যা তুলে ধরা হল :
বাউলকে কহিও লোক হইল বাউল।
বাউলকেও কহিও হাটে না বিকায় চাউল।।
বাউলকে কহিও কাজে নাহিক আউল।
বাউলকে কহিও ইহা করিয়াছে বাউল।।
পণ্ডিত রাম নারায়ণ বিদ্যারত্ন অর্থ করেছেন যে, কৃষ্ণ প্রেমোন্মত্তকে (শ্রীমহাপ্রভুকে বলো, লোক কৃষ্ণ প্রেমে উন্মত্ত হয়েছে; আর কেউ বাকি নাই যে কৃষ্ণ প্রেম নেবে—প্রেম আর বিকায় না। আর বলো যে এই প্রেম বিতরণ কার্যে কোন ত্রুটি হয় নাই। আর পাগল অদ্বৈতই এর বক্তা।
দ্বিতীয় ব্যাখ্যাটি নিম্নরূপ :
ভক্তবর্গ এই গূঢ়ার্থবোধক বাক্যের অর্থ পরিগ্রহ করিতে না পারিয়া শ্রীমহাপ্রভুকে তাহার তাৎপর্য্য জিঞ্জাসিলে তিনি বলিয়াছিলেন, “আচার্য্য তন্ত্রজ্ঞ পূজক, তিনি দেবতার আবাহন করিয়া পুনঃ যথা সময়ে বিসর্জ্জন করিয়া থাকেন, তাঁহার কথার অর্থ তিনিই বুঝেন।” ইহার পর হইতেই শ্রীমহাপ্রভুর ভাব অন্যরূপ হইল, তিনি একরূপ বাহ্য জ্ঞান বিরহিত হইয়াই সৰ্ব্বদা থাকিতেন; এবং তদবস্থায় অপ্রকট হন। অপ্রকটের পর প্রহেলীর অর্থ ভক্তবর্গ বুঝিতে পারিয়াছিলেন। এই প্রহেলিকা তদীয় লীলা সম্বরণের জন্য ইঙ্গিত মাত্র।
তবে প্রভু কমলাক্ষ হরি হররূপী।
অন্তর্হিত হইলেন গৌরলীলা জপি।।
দ্বাদশবর্ষ বয়:ক্রমে শান্তিপুরে গেলা।
ষড়দর্শন শাস্ত্র ক্রমে পড়িতে লাগিলা।। – অ.প্র.-৮
ষড়দর্শন পড়া যদি অভিলাস হয়ে থাকে তাহলে কুবের পণ্ডিতের আপত্তির কারণ থাকার কথা নয়। পুত্রের অদর্শনে লোক পাঠিয়ে কুবের বহু খোঁজাখুঁজি করেন। ‘খুঁজিয়া না পাঞা চক্ষে বহে অশ্রুধার।’ অবশেষে কমলাক্ষের পত্র পেয়ে কুবের-লাভা সব অবগত হন এবং ‘তরি আপোহয়া’ নদীয়া গমন করেন। পিতা-পুত্রে মিলন হন। পিতার পরামর্শে কমলাক্ষ ‘বেদান্তবাগীশ শান্ত দ্বিজবরের বাটি’ গিয়ে ‘বেদ চারিখান’ পাঠ করেন দু-বছর ধরে। এখানে কমলাক্ষর এক অপূর্ব লীলার কথা পাই অদ্বৈতপ্রকাশে। ছাত্রদের নিয়ে বেদজ্ঞ আচার্য এক বিল-এর তীরে নিয়ে আসেন। বিল-মধ্যে এক সুন্দর পদ্ম দেখতে পেয়ে সেটি যে কোন একজনকে তুলে আনতে বলেন। কাঁটাভর্তি ও বিলে গুরু নির্দিষ্ট ওই পদ্মটির চারিপাশে ‘কালসর্পগণ তাহে করয়ে বিহার।’ কমলাক্ষ বলেন, তিনি পারবেন পদ্মটি তুলে আনতে। গুরু বলেন, ‘এই সুদুর্গমে না করিহ দর্প।’ কমলাক্ষ পদ্মে পদ্মে পা দিতে দিতে সেই পদ্মটি তুলে এনে ‘ভক্তি করি গুরুদেবে করিল অর্পন।’ বেদ শিক্ষার সমাপনান্তে কমলাক্ষ ‘বেদ পঞ্চানন’ পদবি প্রাপ্ত হন। বিদ্যাশিক্ষা চর্চার পাশাপাশি ‘পিতৃমাতৃ সেবায়’কমলাক্ষ একবৎসর নিবেদিত প্রাণ হয়ে থাকেন। কালে ‘নব্বই বৎসর অতিক্রান্তে’ কুবের আচার্য ও লাভাদেবী প্রয়াত হলেন। পিতৃ আজ্ঞা অনুযায়ী পিণ্ডদান নিমিত্ত কমলাক্ষ ‘গয়াধামে গেলা যাঁহা হয় বিষ্ণুক্ষেত্র।’ গয়াধাম থেকে কমলাক্ষের তীর্থভ্রমণ শুরু হল। পূর্বাপর বিবরণ থেকে বিশ্বম্ভরের পিতৃবিয়োগের পর গয়া-গদাধর দর্শনে ঐশী মনবৈকল্য, সন্ন্যাস-অভিলাস এবং নীলাচল যাত্রার সাযুজ্য পাওয়া গেলেও অদ্বৈতপ্রকাশ স্বতন্ত্র।
তথ্য সংগৃহীত..
2 weeks ago | [YT] | 2
View 0 replies
স্বনন্দ দাস
বৈষ্ণব_বিরহতিথিঃ-সিদ্ধ শ্রীমধুসুদনদাস বাবাজি মহাশয়!
----সিদ্ধবাবা (শ্রীকৃষ্ণদাস) সমস্ত ঘটনা শুনিয়া বলিলেন-'আমাদের রাগের ভজন ত সম্বন্ধানুগা, গুরু-পরিবার হইতেই সম্বন্ধ-নির্ণয় হয়। তোমার শ্রীগুরুদেবের নাম পরিবার ইত্যাদি কিছুই জানা নাই, এজন্য রাগানুগা ভজনে তোমার অধিকার নাই, অথচ তুমি মন্ত্রার্থের সহিত এ সম্প্রদায়ের মন্ত্র পাইয়াছ; এজন্য পুনঃ দীক্ষালাভেরও তোমার অপেক্ষা নাই। অতএব আমাদ্বারা তোমাকে ভজনশিক্ষা দেওয়া হইব না।' সেই সময়ে সম্প্রদায়-পরম্পরার তীব্র শাসন ছিল-কেহ তিলমাত্র ব্যতিক্রম করিতেন না।
সিদ্ধ বাবার কথায় তিনি হতাশ হইয়া দারুণ ক্রন্দন করিলেন, তাঁহার রোদনে সিদ্ধ বাবা দয়াপরবশ হইয়া পুনরায় বলিলেন-'ভাই! তুমি কাম্যবনের সিদ্ধ জয়কৃষ্ণ দাস বাবাজি মহাশয়ের নিকট যাও, তিনি সর্ববেত্তা, তিনিই তোমার শ্রীগুরুদেবের পরিচয় ও সম্বন্ধাদি নির্ণয় করিয়া দিবেন।' তৎপরে তিনি কাম্যবনে গিয়া সিদ্ধ বাবাজি মহারাজের চরণে পড়িয়া আমূল সব বৃত্তান্ত জানাইলেন। সিদ্ধ বাবা সর্ব্ববিৎ হইয়াও ভবিষ্যতে উপধর্ম্মের সৃষ্টি না হয়, তৎপ্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করত বলিলেন- 'ভাই! এ বিষয়ে আমিও কিছু অনুমান করিতে পারিতেছি না, অথচ তোমার দীক্ষালঙ্ঘন করাও অনুচিত; এ অবস্থায় তোমার রাগানুগা ভজনে অধিকার নাই, তুমি একান্তে বসিয়া হরিনাম কর; শ্রীমন্ মহাপ্রভু ও শ্রীরাধারাণী যাহা করেন, তাহাই হইবে। অথবা তোমার চিন্তামণি-স্বরূপ গুরুদেব হইতে ইচ্ছামাত্র যেমন মন্ত্র লাভ করিয়াছ, তেমনি অবশিষ্ট বাঞ্ছাও তিনিই পূর্ণ করিবেন।' এই কথা বলিয়া তাঁহাকে বিদায় দিলেন।(ক্রমশঃ)
শ্রীশ্রীগৌড়ীয় বৈষ্ণব জীবন দ্রষ্টব্য!
তথ্য সংগৃহীত
জয় রাধে রাধে 🙏
3 weeks ago | [YT] | 1
View 0 replies
স্বনন্দ দাস
শ্রীখণ্ডে শ্রীশ্রীবিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর মূর্ত্তি স্থাপন
_____________________________________
শ্রীখণ্ডে অবস্থিত রসরাজ শ্রীগৌরাঙ্গ মূর্ত্তির বামে শ্রীশ্রীবিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর শ্রীমূর্ত্তিও প্রতিষ্ঠিতা আছেন দেখিতে পাওয়া যায়। প্রিয়াজীর এই শ্রীমূর্ত্তি ঠাকুর শ্রীরঘুনন্দনের পুত্র ঠাকুর কানাই কর্ত্তৃক প্রতিষ্ঠাতা হয়েন। ঠাকুর কানাই শ্রীবিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর একান্ত অনুগত ছিলেন। ঠাকুর নরহরির অভিপ্রায় অনুসারে, কৃষ্ণপাগলিনী ব্রাহ্মণী নামক তাঁহার জনৈকা শিষ্যাও বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর সেবার জন্য, নিরন্তর নবদ্বীপে থাকিতেন। ঠাকুর কানাইও মধ্যে মধ্যে নবদ্বীপে গিয়া বিষ্ণুপ্রিয়া মায়ের চরণ দর্শন করিয়া আসিতেন। শ্রীনবদ্বীপধামেশ্বর শ্রীগৌরাঙ্গ বিগ্রহও, ঠাকুর কানাই বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর আদেশে নির্ম্মাণ করাইয়া দিলে প্রিয়াজী নবদ্বীপে উক্ত ধামেশ্বর শ্রীবিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন। শ্রীমন্মহাপ্রভু এই প্রকারে সেই শ্রীমূর্ত্তিতে নিজ প্রিয়ার সমীপস্থ হইয়া প্রিয়াজীর সেবা গ্রহণ করিতেছেন। যথা শ্রীমুরারিগুপ্তকরচায়াং ৪।১৪।১৮—
প্রকাশরূপেণ নিজপ্রিয়ায়াঃ
সমীপমাসাদ্য নিজাং হি মূর্ত্তিং।
বিধায় তস্যাং স্থিত এষ কৃষ্ণঃ
সা লক্ষ্মীরূপাচ নিষেবতে প্রভুং॥
যদি কেহ অনুমান করেন, শ্রীখণ্ডের এই বিষ্ণুপ্রিয়া মূর্ত্তি স্থাপন ঠাকুর নরহরি প্রভৃতির অনুমোদিত নহে; এজন্য উল্লেখ করিতেছি যে, ঠাকুর কানাই, ঠাকুর শ্রীনরহরির নিকট দীক্ষিত ও তাঁহার একান্ত অনুগত এবং তিনি দীর্ঘকাল নরহরির সঙ্গসুখ লাভ করিয়াছিলেন, যেহেতু তিনি তাঁহার পিতা রঘুনন্দনের অপ্রকটের পরেও বর্ত্তমান ছিলেন এবং উক্ত ঠাকুর কানাইয়ের পুত্র ঠাকুর মদনরায় ও ঠাকুর বংশীবদনও নরহরির নিকট দীক্ষিত। নরহরির আনুগত্যে দীর্ঘকাল অবস্থিত ঠাকুর কানাইয়ের কৃত কার্য্য যে, নরহরি রঘুনন্দনাদির অনুমোদিত নহে, তাহা ধারণাই করা চলে না। অধিকন্তু ইহাই মনে হয় যে, তিনি নরহরি রঘুনন্দনের নিকট এই কার্যের প্রেরণাই পাইয়াছিলেন। বস্তুতঃ পক্ষে গৌর-নিত্যানন্দ গৌর-গদাধর প্রভৃতির ভজন যেমন সুমধুর শ্রীশ্রীগৌর-বিষ্ণুপ্রিয়ার ভজনও তদ্রূপ। ঠাকুর নরহরির পরিবারবর্গের মধ্যে গৌরগদাধর ভজনপ্রথা প্রচলিত থাকিলেও, তাঁহারা গৌরবিষ্ণুপ্রিয়া ভজনশীল ভক্তগণকে তুল্য বলিয়াই মনে করেন।
মধুর ভাবে গৌরাঙ্গভজনপরায়ণ ভক্তগণ, ঠাকুর কানাই কর্ত্তৃক গৌরসুন্দরের বামে এই বিষ্ণুপ্রিয়ার মূর্ত্তি স্থাপনে পরম আনন্দলাভই করিয়াছিলেন। বহিরঙ্গগণ, শ্রীশ্রীগদাধর পণ্ডিত গোস্বামী প্রভৃতির প্রকৃতিভাব বা তদনুরূপ স্বরূপ স্বীকার করা দূরের কথা, এমন কি ভক্তভাবে অবতীর্ণ হওয়ায় শ্রীগৌরসুন্দরের রসরাজত্ব সম্বন্ধেও তাঁহারা সন্দিহান। প্রকটলীলায় গৌরবক্ষবিলাসিনী শ্রীশ্রীনবদ্বীপধামেশ্বরী বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীই শ্রীগৌরসুন্দরের রসরাজত্বের প্রকটপ্রমাণ বা পরিপূর্ণ নিদর্শন।
শ্রীপাদ নরোত্তম ঠাকুর মহাশয়ও তৎকালে প্রকট গৌরাঙ্গগণের সমক্ষেই শ্রীশ্রীগৌরবিষ্ণুপ্রিয়া যুগলমূর্ত্তি অপ্রতিবাদে স্থাপন করিয়াছিলেন। তদুপলক্ষে যে কীর্ত্তন হইয়াছিল, সেই কীর্তনে, নিত্যলীলায় প্রবিষ্ট শ্রীশ্রীগৌরনিত্যানন্দ সীতানাথ গদাধর নরহরি শ্রীবাস প্রভৃতি প্রকট হওয়ায়, এই কার্য্য যে তাঁহাদেরও অনুমোদিত তাহাই সূচিত হইতেছে। ঠাকুর নরহরির পরিবারভুক্ত রঘুনন্দন বংশীগণ পরম সমাদরে শ্রীশ্রীগৌরবিষ্ণুপ্রিয়া যুগলের সেবা করিয়া আপনাদিগকে পরম ভাগ্যবান মনে করেন।
(গৌরগুণানন্দ ঠাকুর, 'শ্রীখণ্ডের প্রাচীন বৈষ্ণব')
তথ্য সংগৃহীত..
4 weeks ago | [YT] | 1
View 0 replies
স্বনন্দ দাস
ভক্তি অর্জনের জন্য হৃদয়ে দীনতা থাকা একান্ত আবশ্যক। কেনোকি ভক্তি মহারাণী অত্যন্তই লজ্জাশীলা নববধুর মতোন। যখনই ঘরে কোনো পরপুরুষের আগমন ঘটে তখনই নববধু নিজের মাথার ঘোমটা টেনে ঔই স্থান থেকে দূরে সরে যায়; ঠিক তেমনই অহংকার হচ্ছে পরপুরুষের মতোন। কোনো হৃদয়ে বিন্দুমাত্রও যদি অহংকারের আগমন ঘটে, তৎক্ষনাত ভক্তি মহারাণী ঔই হৃদয় ছেড়ে চলে যান। তাই সর্বপ্রকার অহংকার ঝেড়ে ফেলে দাও হৃদয় থেকে, আর অতী দীন-হীন হয়ে সকলকে সন্মান করে চলো। তবেই ভক্তি মহারাণীর পূর্ণ কৃপা খুব শীঘ্রই পেয়ে যাবে।
,,,,,,,,,,,,,,,জয় শ্রী রাধামুরারীমোহন 🙏
শ্রীশ্রী গুরু মহারাজ 🙏,,
শ্রী শ্রী জগৎ গুরু নিত্যানন্দ দ্বারা চার্য্য🙏
শ্রীশ্রী ১০৮ শ্যামসুন্দর দাস দেবাচার্য্য জি মহারাজ🙏
,,,,,,,,,,,,,,, জয় শ্রী গুরুদেব 🙏
1 month ago | [YT] | 2
View 0 replies
স্বনন্দ দাস
💎 কৃষ্ণ-সুদামা মিলন লীলা: বন্ধুত্বের শ্রেষ্ঠ আলেখ্য 💎
বৃন্দাবনে লীলা সমাপন করে শ্রীকৃষ্ণ যখন দ্বারকার অধীশ্বর, রাজ-ঐশ্বর্যে ভূষিত, সেই সময় তাঁর বাল্যকালের সহপাঠী সখা সুদামা (যিনি কুচেল নামেও পরিচিত) দূর গ্রামে এক দীনহীন জীবন যাপন করছিলেন। কৃষ্ণ ও সুদামা উভয়েই অবন্তীপুরের গুরু সন্দীপনি মুনির আশ্রমে এক সাথে শিক্ষা লাভ করেছিলেন। গুরুগৃহে তাদের মধ্যে যে গভীর সখ্যতা গড়ে উঠেছিল, তা ছিল নিষ্কাম ও পবিত্র।
কিন্তু ভাগ্যবিড়ম্বনায় সুদামা ক্রমশই দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হতে থাকেন। তাঁর জীর্ণ কুটিরে অন্ন জোটা ছিল এক কঠিন সংগ্রাম। একদা তাঁর পত্নী সুশীলা অত্যন্ত ক্ষুধার্ত ও ম্লান মুখে তাঁকে মিনতি করে বললেন— "হে আর্য, আপনি স্বয়ং দ্বারকাধিপতি শ্রীকৃষ্ণের প্রিয় সখা। তিনি সাক্ষাৎ ভগবান। তাঁর কাছে একবার যান, অন্তত বন্ধুকে দর্শন করে আসুন। হয়তো তাঁর কৃপায় আমাদের এই দুঃখ দূর হতে পারে।"
স্ত্রীর বারংবার অনুরোধে এবং প্রিয় সখা কৃষ্ণকে একবার চোখের দেখা দেখার প্রবল আকুলতায় সুদামা দ্বারকা যেতে সম্মত হলেন। বন্ধুর জন্য খালি হাতে যাওয়া উচিত নয় ভেবে, তিনি প্রতিবেশীদের কাছ থেকে চেয়ে চার মুঠো আতপ চালের চিঁড়ে একটি পুরনো কাপড়ে বেঁধে নিলেন— এই সামান্য উপহারই ছিল তাঁর বন্ধুত্বের প্রতীক।
বহু পথ হেঁটে, ক্ষিদে-তৃষ্ণা ভুলে সেই জীর্ণবস্ত্র পরিহিত ব্রাহ্মণ দ্বারকার রাজপ্রাসাদের সুসজ্জিত দ্বারে পৌঁছালেন। তাঁর দৈন্যদশা দেখে দ্বাররক্ষীরা তাঁকে সন্দেহের চোখে দেখল এবং প্রাসাদের ভেতরে যেতে দিতে দ্বিধা করল। অবশেষে, তাদের কাছে বার্তা পৌঁছালো— "সুদামা নামে এক ব্রাহ্মণ দ্বারদেশে আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন, যিনি আপনার বাল্যবন্ধু।"
'সুদামা' নামটি শোনা মাত্রই রাজ-সিংহাসনে উপবিষ্ট ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিদ্যুৎবেগে উঠে দাঁড়ালেন। রাজমুকুট বা উত্তরীয়ের কথা ভুলে, তিনি নগ্ন পায়ে দ্রুতবেগে রাজদ্বারে ছুটে গেলেন। বন্ধুকে দেখেই তাঁর চোখ দিয়ে আনন্দাশ্রু ঝরতে শুরু করল। তিনি ছুটে গিয়ে সুদামাকে দৃঢ় আলিঙ্গন করলেন, যেন শত জনমের বিরহ সমাপ্ত হলো।
কৃষ্ণ তাঁকে পরম সমাদরে রাজপ্রাসাদের অভ্যন্তরে নিয়ে গেলেন এবং নিজের সিংহাসনে বসালেন। স্বয়ং কৃষ্ণ, এবং দেবী রুক্মিণী, অতি উষ্ণ জলে বন্ধুর ধূলোমাখা চরণ ধৌত করে দিলেন। এই চরণ ধৌত জল কৃষ্ণ পরম পবিত্র মনে নিজের মস্তকে ধারণ করলেন। এই অভাবনীয় দৃশ্যে উপস্থিত সকলে হতবাক হয়ে গেলেন। কৃষ্ণ তখন তাঁর প্রিয় সখার সাথে গুরুকুলের দিনগুলির সুখস্মৃতি, বিশেষ করে কাষ্ঠ আহরণের কঠিন দিনের কথা, অত্যন্ত আগ্রহের সাথে আলোচনা করলেন।
এরপর কৃষ্ণ কৌতুক করে বললেন, "হে প্রিয় সখা, আমার জন্য তুমি কী উপহার এনেছ? বন্ধুত্বের উপহার সামান্য হলেও তা আমার কাছে ত্রিভুবনের সম্পদের সমান।"
সুদামা লজ্জায় তাঁর চিঁড়ের পুঁটুলিটি আড়াল করার চেষ্টা করলেন, কিন্তু অন্তর্যামী কৃষ্ণ জোর করে সেই পুঁটুলি টেনে নিলেন। পরম তৃপ্তি সহকারে কৃষ্ণ সেই শুকনো চিঁড়ের এক মুঠো মুখে দিলেন। ভক্তের প্রীতিতে নিবেদিত সেই সামান্য চিঁড়ে খেয়েই তিনি জগৎবাসীকে সমস্ত ঐশ্বর্য দান করার ইচ্ছা করলেন। যখন তিনি দ্বিতীয় মুঠো চিঁড়ে মুখে দিতে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই দেবী রুক্মিণী তাঁর হাত ধরে ফেললেন। কারণ, প্রথম গ্রাসেই তিনি সমস্ত জগতের ঐশ্বর্য ও অতুলনীয় সম্পদ সখার জন্য বরাদ্দ করে ফেলেছিলেন।
কয়েকদিন রাজকীয় আতিথেয়তায় কাটানোর পর সুদামা কৃষ্ণের কাছ থেকে বিদায় নিলেন। বন্ধুত্বের আবেগে তিনি নিজের দুঃখ বা দারিদ্র্যের কথা ভুলেই গিয়েছিলেন, তাই কৃষ্ণের কাছে কিছুই চাইলেন না। কৃষ্ণও সরাসরি কিছু না দিয়েই হাসিমুখে তাঁকে বিদায় জানালেন।
ফিরে আসার পথে সুদামা মনে মনে ভাবলেন, "আমি বৃথাই গেলাম, আমার দীনতার কথা কৃষ্ণকে বলতে পারলাম না, আর তিনিও আমাকে কিছু দিলেন না। এখন স্ত্রীকে কী উত্তর দেব?"
কিন্তু নিজ গ্রামের কাছাকাছি এসে সুদামা অবাক বিস্ময়ে দেখলেন—তাঁর জীর্ণ কুটিরের জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে এক বিশাল স্বর্ণনির্মিত দিব্য প্রাসাদ। তাঁর স্ত্রী ও সন্তানেরা সুন্দর রাজকীয় পোশাকে সজ্জিত হয়ে দেব-দেবীর মতো অপেক্ষা করছেন। সুদামা তৎক্ষণাৎ বুঝতে পারলেন, তাঁর সখা শ্রীকৃষ্ণ তাঁর সামান্য চিঁড়ের বিনিময়ে সমস্ত ঐশ্বর্য দান করে দিয়েছেন, কিন্তু বন্ধুত্বের মর্যাদা রক্ষা করে তাঁকে সরাসরি জানতে দেননি। এরপর সুদামা ঐশ্বর্যের মোহে না পড়ে, কেবল ভগবানের আরাধনাতেই নিজের বাকি জীবন অতিবাহিত করেন।
এই লীলা প্রমাণ করে যে, ভগবান কেবল ভক্তের নিষ্কাম প্রেম ও সামান্য নিবেদনেই সন্তুষ্ট হন, এবং বন্ধুর প্রতি তাঁর ভালোবাসা ছিল সম্পদ, খ্যাতি ও ক্ষমতার ঊর্ধ্বে।
1 month ago | [YT] | 1
View 0 replies
স্বনন্দ দাস
🪷🙏শ্রী শ্রী রাধা মুরারি মোহন লাল জয়তু:🪷🙏
-------+--------------------------------+------
#সকলকে_বিশেষভাবে_দৃষ্টি #আকর্ষণ_করছি 👏🏼❤️👤
🪷🙏শ্রী শ্রী রাধা মুরারি মোহন লাল জয়তু:🪷🙏 শ্রী গুরু মহারাজ জগত গুরু নিত্যানন্দ দ্বারাচার্য ১০৮ শ্যামসুন্দর দাস দেবাচার্য জী মহারাজের বাংলাদেশ শুভাগমনের সকল অনুষ্ঠান সূচি দেওয়া হল।।
🪷০১/১২/২৫ (সোমবার) : ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া বর্ডার হয়ে গুরু মহারাজের শুভ আগমন।
🪷(০২/১২/২৫ ----০৭/১২/২৫):নয়নপুর, কসবা ব্রাহ্মণবাড়িয়া,,, প্রয়াত বলরাম দেবনাথের বাসভবনে ২৪ প্রহর ব্যাপী অখন্ড হরিনাম যজ্ঞ মহোৎসব ও শ্রীমন মহাপ্রভুর সপার্ষদ ৬৪ মহন্তের ভোগ আরাধনা।।
🪷 ০৮/১২/২৫(সোমবার): কসবা কুঠি প্রয়াত মধু সাহার বাসভবনে শ্রীমন মহাপ্রভুর সপার্ষদ ৬৪ মহন্তের ভোগ আরাধনা।।
🪷০৯/১২/২৫(মঙ্গলবার) :চাঁদপুর মতলব।
🪷১০/১২/২৫(বুধবার): মাদারীপুর।
🪷১১/১২/২৫(বৃহস্পতিবার) : মুকসুদপুর গোপালগঞ্জ।
🪷১২/১২/২৫(শুক্রবার) : মুকসুদপুর সংলগ্ন।
কামাইদিয়া।
🪷১৩/১২/২৫(শনিবার) : গোপালগঞ্জ কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি।
🪷১৪/১২/২৫(রবিবার) : চট্টগ্রাম ।।
🪷১৫/১২/২৫(সোমবার) : চট্টগ্রাম ফিরিঙ্গি বাজার।
#বিশেষ_দ্রষ্টব্য :::বিশেষ কারণবশত শ্রী গুরু মহারাজ ১৫ তারিখের অনুষ্ঠান শেষে শ্রী ধাম বৃন্দাবনের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন.........
দেশ, কাল, অবস্থান ভালো থাকলে শ্রী গুরু মহারাজ এক সপ্তাহ পর আবার বাংলাদেশে।
প্রবেশ করবেন
🥰🥰🥰শ্রীগুরু মহারাজের অনুষ্ঠানের সময়সূচি ও বিশেষ তথ্য জানতে হলে ও শ্রী গুরু মহারাজের চরণ আশ্রিত ও দিহ্মা নিতে যারা ইচ্ছুক তারা নিচে দেওয়া যেকোন নাম্বারে যোগাযোগ করবেন।
🪔 Damodar Das Dinar
01870523285
Sri Nidhi Das Noyan
01749554504
🪷🙏 জয় জয় শ্রী রাধে শ্যাম।
কৃপা পূর্বক সকলেই শেয়ার করুন
👏🏼👏🏼👏🏼👏🏼👏🏼👏🏼👏🏼👏🏼👏🏼👏🏼 @highlight #everyonehighlightsfollowerseveryonehighlightsfollowerseveryone2025
1 month ago (edited) | [YT] | 3
View 0 replies
স্বনন্দ দাস
বর্তমান সময় তবুও অনেক ভালো ,,ভবিষ্যতে তো আরোও খারাপ সময় আসতে পারে, তখন তাহলে কি করবো! ভজন এখন এই বর্তমান সময়েই করতে হবে। সাধককে কখনও ভবিষ্যতের শুভ আশা নিয়ে বাঁচার স্বপ্ন দেখা উচিত নয়। খুব খুব যত্নশীল হয়ে ভজন করা প্রয়োজন সর্বাবস্থায়। কিছু মিলুক আর না মিলুক ভজন ছাড়া যাবেনা কোনোরুপ প্রতিকূল অবস্থা এসে গেলেও না। বরং সাধককে এইটা ভাবতে হবে যে, আমি তো অনন্ত কাল জন্মেছি-মরেছি এই সংসারের জন্য; সংসারের সুখ-সমৃদ্ধি-ভোগ-লাভ-প্রতিষ্ঠা-সন্মানের আশা নিয়েই মরেছি। মরণ তো এবারেও হবেই হবে কিন্তু এইবার সংসারের চিন্তা নিয়ে মরবোনা, এইবার মরবো প্রভু শধু তোমার জন্য! তোমার দর্শন পেলাম না!তোমার সাথে শরীর থাকতে থাকতেই মিলন হোলোনা! সব ঠিক আছে কিন্তু শেষ সময় মরণকালে যেনো তোমার নাম, তোমার চিন্তন সঙ্গে নিয়ে মরতে পারি,আর মনে মনে বলতে পারি হে প্রভু তুমি তো এলে না,,,আমি তো যাচ্ছি চলে প্রভু!
,,,,জয় রাধামুরারীমোহন 🙏
,,,,জয় নিতাই গৌর নিতাই 🙏
,,,,শ্রী গুরু মহারাজ 🙏
🌺শ্রী শ্রী জগৎ গুরু নিত্যানন্দ দ্বারা চার্য্য🌼🙏
🌺শ্রীশ্রী ১০৮ শ্যামসুন্দর দাস দেবাচার্য্য জি মহারাজ
🌿রাধে_রাধে
🌿জয়_গুরুদেব
,,,,,,,,,,,,,শ্রী শ্রী বাবা মহারাজ🌸🙏
2 months ago | [YT] | 3
View 1 reply
স্বনন্দ দাস
পরমবৈষ্ণব হরিবোলানন্দ ঠাকুর ও কালীঘাটের মা
____________________________________________
শ্রীহরিবোলানন্দ ঠাকুর বরাহনগর পাঠবাড়ীর নামসিদ্ধ শ্রীপাদ রামদাস বাবাজী মহাশয়ের নিত্যস্মরণীয় দ্বাদশ মহাত্মার অন্যতম। তাঁর পূর্বাশ্রমের নাম ছিল নবীনচন্দ্র ভট্টাচার্য। নিরন্তর 'হরিবোল' কীর্তন করতেন বলে ক্রমে ইনি 'হরিবোলানন্দ ঠাকুর' নামে পরিচিত হন। কালীঘাটের কালীমাতার প্রতি এই পরমবৈষ্ণবের অদ্ভুত ভক্তি ছিল। 'শ্রীশ্রীগৌড়ীয়-বৈষ্ণব-জীবন' গ্রন্থে শ্রীহরিদাস দাস মহাশয় হরিবোলানন্দ ঠাকুর সম্পর্কে লিখছেন—
"বিষয়-ব্যাপারে সামান্য গৃহ-বিবাদ ছল করিয়া ইনি জন্মভূমি ত্যাগ করত কলিকাতা কালীঘাটে আসিয়া মাতৃ-মন্দিরের সম্মুখে 'মা, মা' বলিয়া 'হত্যা' দিয়া পড়েন। তাহাতে আদেশ হইল—'পদব্রজে ভারতবর্ষ পর্যটন করত ভারতের যাবতীয় তীর্থ দর্শন কর।' প্রত্যাদেশ পাইয়া তিনি তীর্থাটন করিতে বাহির হইলেন—কপর্দকহীন অবস্থায় একাকী অর্দ্ধাশনে, অনশনে দিবারাত্রি পথ চলিয়া চলিয়া সকল তীর্থই দর্শন করিলেন—ইহাতে তাঁহার বহু বৎসর অতিবাহিতও হইল; কিন্তু প্রাণে শান্তি না পাইয়া তিনি পুনরায় কালীঘাটে আসিয়া মায়ের চরণে নিবেদন করিলেন। শুনিতে পাওয়া যায় যে তখন শ্রীকালীমাতা প্রত্যক্ষ হইয়া তাঁহাকে শ্রীমুখে বলিলেন—"বাবা, কলিকালে হরি-নামই সত্য ও সারাৎসার। তুমি নিরন্তর 'হরিবোল' এই নামমন্ত্র কীর্ত্তন কর এবং অবিচারে সকলকে পায়ে ধরিয়া এই হরিবোল-নাম বিতরণ কর।" আদেশ পাইয়া তিনি নিরন্তর হরিবোল-নাম করিতে লাগিলেন, বাগবাজারে থাকিয়া প্রত্যহ পদব্রজে কালীঘাটে যাইয়া মাতাকে দর্শন করিতেন এবং যাতায়াতের কালে সম্মুখে যাহাকে দেখিতেন তাঁহারই চরণে ধরিয়া 'হরিবোল' 'হরিবোল' করিতেন, তাঁহার মুখে হরিবোল নাম উচ্চারিত হইলেই চরণ ছাড়িয়া চলিয়া যাইতেন—পথিকটি যতক্ষণ নামোচ্চারণ না করিতেন, ততক্ষণই ইনি চরণে পড়িয়া থাকিতেন।"
দেখা গেল, কলিতীর্থ কালীঘাটের মা কালীর আদেশেই হরিবোলানন্দ ঠাকুর হরিবোল-নাম কীর্তন ও বিতরণে ব্রতী হন। কলকাতায় যখন মহামারী প্লেগ দেখা দেয়, তখনও ইনি মা কালীর অনুগ্রহে জনৈক শিষ্যের জীবনরক্ষা করেন—
"ক্ষেত্র বাবুও যখন ঐ রোগে আক্রান্ত হইয়া মৃত্যুমুখে পতিত হইতেছিলেন, তখন ঠাকুর কালীঘাটে যাওয়ার পথে তাঁহার বাড়ীতে গিয়া জানিলেন যে ক্ষেত্রবাবু মুমুর্ষু হইয়াছেন। তাঁহাকে দেখিয়া ঠাকুর জিজ্ঞাসা করিলেন—'কিরে ক্ষেত্তর! কি বলছিস্?' তিনি ইঙ্গিতে জানাইলেন 'এই শেষ বিদায়।' ঠাকুর তখনই কালীঘাটে গিয়া মায়ের খাঁড়ার জল আনিয়া দিয়া পরিচারক-গণকে বলিলেন—'বাবু এক্ষণই ঘুমাইয়া পড়িবে, ঘুম থেকে উঠে যা' খেতে চায়, তাই তাকে অবিচারে দিবি।' অহো! সেই চরণামৃত পান করা মাত্রই ক্ষেত্রবাবু বহু দিন পরে নিদ্রায় অভিভূত হইলেন এবং চার পাঁচ ঘণ্টা সুনিদ্রার পরে বুভুক্ষু হইয়া মুগের ডাল দিয়া অন্ন খাইতে চাহিলেন। ঠাকুরের আদেশমত যথাসময়ে আহার করিয়া তিনি সম্যক্ প্রকারে সুস্থ হইলেন।"
ভক্ত-বৈষ্ণব ও কৃষ্ণলীলার অধিষ্ঠাত্রী মা যোগমায়ার লীলা সত্যিই বড় অদ্ভুত!
2 months ago | [YT] | 3
View 0 replies
স্বনন্দ দাস
|| #শ্রীশ্রীরাধাকুণ্ড_স্নান_মাহাত্ম্য ||
আজ পবিত্র বহুলাষ্টমী তিথি, এইদিন শ্রীরাধাকুণ্ডে স্নানে বিশেষ ফললাভ করা যায়।
পদ্মপুরানোক্ত কার্তিকমাহাত্ম্য থেকে শ্রীল রূপ গোস্বামীপাদ মথুরামাহাত্ম্যে এবং শ্রীল সনাতন গোস্বামীপাদ হরিভক্তিবিলাসে বহুলাষ্টমী তিথিতে কুণ্ডদ্বয়ে স্নানের কথা উল্লেখ করেছেন :~
❝গোবর্ধন গিরৌ রম্যে রাধাকুণ্ডম্ প্ৰিয়ম্ হরেঃ |
কার্তিকে বহুলাষ্টম্যাম্ তত্র স্নাত্ব হরেঃ প্ৰিয়ঃ ||❞
অর্থাৎ ~ গোবর্ধন পর্বতের তটে শ্রীহরির প্ৰিয় রম্যস্থান- শ্রীরাধাকুণ্ডে কার্তিক বহুলাষ্টমীতে স্নান করলে হরির প্ৰিয় হবে।
শ্রীরাধাকুণ্ড সম্বন্ধে শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত মধ্যলীলার উদ্ধৃতি —
"সব গোপী হৈতে রাধা কৃষ্ণের প্রেয়সী ।
তৈছে রাধাকুণ্ড প্রিয় ‘প্রিয়ার সরসী’ ॥
যথা রাধা প্রিয়া বিষ্ণোস্তস্যাঃ কুণ্ডং প্রিয়ং তথা ।
সর্বগোপীষু সৈবৈকা বিষ্ণোরত্যন্তবল্লভা ॥
(— পদ্মপুরান)
যেই কুণ্ডে নিত্য কৃষ্ণ রাধিকার সঙ্গে ।
জলে জলকেলি করে, তীরে রাস-রঙ্গে ॥
সেই কুণ্ডে যেই একবার করে স্নান ।
তাঁরে রাধা-সম ‘প্রেম’ কৃষ্ণ করে দান ॥
কুণ্ডের ‘মাধুরী’ — যেন রাধার ‘মধুরিমা’ ।
কুণ্ডের ‘মহিমা’ — যেন রাধার ‘মহিমা’ ॥"
শ্রীগোবিন্দ লীলামৃত গ্রন্থে বলা হচ্ছে —
"শ্রীরাধেব হরেস্তদীয়সরসী প্রেষ্ঠাদ্ভুতৈঃ স্বৈর্গুণৈ-
র্যস্যাং শ্রীযুত-মাধববেন্দুরনিশং প্রীত্যা তয়া ক্রীড়তি ।
প্রেমাস্মিন্ বত রাধিকেব লভতে যস্যাং সকৃৎ স্নানকৃৎ
তস্যা বৈ মহিমা তথা মধুরিমা কেনাস্তু বর্ণ্যঃ ক্ষিতৌ ॥ "
শ্রীরাধাকুণ্ড স্নানের মাহাত্ম্য প্রত্যক্ষভাবে জগদগুরু শ্রীশ্রী শ্যামানন্দ প্রভুর পুতপবিত্র জীবনচরিতের মধ্যেও দেখা যায় —
1578 খ্রিস্টাব্দের বসন্তপঞ্চমীর শুভ তিথিতে নিকুঞ্জবনে ঝাড়ুসেবা দিতে দিতে শ্রীদুঃখী কৃষ্ণদাস কুড়িয়ে পান শ্রীমতি রাধারানীর বামপদের 'মঞ্জুঘোষ' নাম্না রত্ননূপুর। শ্রীমতি ললিতা সখী তখন বৃদ্ধা ব্রাহ্মণীর বেশে নূপুর নিতে আসেন, কৃষ্ণদাস নূপুর দিতে অস্বীকার করেন। তখন শ্রীললিতা সখী নিজস্বরূপ প্রকাশ করে দুঃখী কৃষ্ণদাসকে কৃপা করেন, নূপুরটি তাঁর ললাটে স্পর্শ করিয়ে 'শ্যামমোহন' নাম্না নূপুর তিলক প্রদান করেন এবং তাঁকে পঞ্চদশাক্ষর রাধামন্ত্ররাজে দীক্ষা প্রদান করেন ও শ্রীশ্যামানন্দ নাম প্রদান করেন। এরপর শ্রীশ্যামানন্দ প্রভুর মনে ইচ্ছা হয় শ্রীমতি রাধারানীর রুপদর্শন করার। তখন শ্রীমতির নির্দেশে ললিতা সখী তাঁকে শ্রীরাধাকুণ্ড তটে নিয়ে যান এবং নিজপ্রদত্ত রাধামন্ত্র জপ করে রাধাকুন্ডে স্নান করতে বলেন। শ্রীকুন্ডে স্নানমাত্র শ্রীশ্যামানন্দ প্রভুর নিত্যসিদ্ধ কনকমঞ্জরী স্বরূপ প্রকাশিত হয়।
শ্রীশ্রী শ্যামানন্দ প্রকাশ গ্রন্থের বর্ণনায় :-
"রত্ন পালঙ্কে বসি রাই জানিলা আপনি।
রূপমঞ্জরীকে ডাকি বলিল বচন।
নিকুঞ্জ ভবনে তুমি যাইবে এখন ॥
ললিতারে কহ গিয়া আমার বচন।
নূপুর পাঞএ্যাছে কৃষ্ণদাস অকিঞ্চন ।।
তারে লৈয়া রাধাকুণ্ডে স্নান করাইবে।
স্নানমাত্রে সখীরূপ তখনি হইবে।।
তারে লৈয়া ললিতা আসিবেন এখানে।
তুমি শীঘ্র গিয়া কহ আমারে বচনে।।
শ্রীরূপমঞ্জরী গেলা নিভৃত নিকুঞ্জে।
দেখেন ললিতা দেবী করিয়াছে বীজে।।
পদে পড়ি রাই আজ্ঞা করিলা প্রকাশ।
শুনিয়া ললিতা দেবী অন্তরে উল্লাস।।
কৃষ্ণদাসে লৈয়া গেল রাধাকুণ্ড তীরে।
তারে কহে যেই মন্ত্র দিয়াছি তোমারে।।
সেই মন্ত্র জপি তুমি কুণ্ডে কর স্নান।
অবশ্য পাইবে রাইর চরণ সন্নিধান।।
তবে নূপুর গোসাঞি কুণ্ড তটেতে রাখিয়া।
মন্ত্র জপি স্নান করে রাই সুমরিয়া।।
স্নানমাত্রে সখীদেহ হইল তাহার।
দেখিয়া ললিতা চিত্তে আনন্দ অপার।।
কনকমঞ্জরী নাম দিল ততক্ষণে।
আজ্ঞা দিল নূপুর লৈয়া আইস আমা সনে।।
তবে নূপুর মাথে করি চলে ধীরে ধীরে।
প্রবেশ হইল গিয়া রাইর মন্দিরে ॥"
জয় শ্রী রাধে রাধে 🙏
2 months ago | [YT] | 2
View 0 replies
Load more